আগামীকাল অন্য রকম একটি দিন হবে।
সকালে যখন ঘর থেকে বের হবো বাড়িওয়ালার ভয়ে লুকিয়ে বের হতে হবে না;
বরং যখন দেখা হবে ঠোটের কোণে থাকবে হাসি।
কেমন আছেন আংকেল? সব ভালো? হুমম!
কাল দৌড়াতে দৌড়াতে কোন মানুষের খোয়াড়ের ভেতর ঢুকতে যাবোনা।
কল করবো উবার অথবা রিক্সায় আয়েশ করে চারপাশ দেখতে দেখতে যাবো অফিসে।
মাকে ফোন দিয়ে বলবো বাবাকে নিয়ে ঢাকায় আসতে। চোখের অপারেশনটা করিয়ে দেই যেন দেখে যেতে পারেন আমার আকস্মিক উত্থান!
প্রেমিকার জন্য অনেক দিন ধরে পছন্দ করে রাখা শাড়িটা কিনে ফেলবো। ইচ্ছে করেই দামী কোন দোকান থেকে কিনবো।
কারণ শাড়ীর চেয়ে শাড়ীর ব্যাগে প্রিন্ট করা ব্র্যান্ডের নামটি বেশি রোমান্টিক!
মেসেজটা আসলো সময় মতোই। ফাইল সাইন করতে রাজি হবার জন্য ধন্যবাদ। এডভান্স টাকাটা কালকে অফিসে পৌছে যাবে। ওয়েলকাম টু দ্যা ক্লাব!!
ছোট্ট জীবনে একটা সাইন যদি একটু সুখ এনে দেয়, দিক। বিবেক ঘুমোক কিছুদিন, আমি সাদামাটা মানুষ অন্যরকম একটা জীবনের স্বপ্ন দেখি। সুখের একটা ঘোর তৈরী হয়েছে আমার চারপাশ জুড়ে!
“হ্যালো সাব্বির ভাই বলেন”
“ভাই, আমি ফাইলটা সাইন করতে পারবোনা।”
“মানে! আপনিই তো রাজি হলেন? এনি প্রবলেম?”
“না ভাই! আমি অন্যরকম হতে চাইনা।”
“কি বলতেসেন কিছুই বুঝতেসি না! টাকা বেশী লাগবে?”
“না ভাই টাকা লাগবে না। বাবার অপারেশনও করা লাগবেনা। একটু আগে ফোন আসছে উনি আর নেই। মাকে নিয়ে আসবো ঢাকায়। রেণুকে নরম্যাল শাড়ি দিবো। প্রিন্টের ব্যাগ তো হারিয়ে যাবে কিছুদিনের মধ্যেই কিন্তু আলমারিতে শাড়িটা থাকবে বছরের পর বছর।”
“উল্টাপাল্টা কি বলতেসেন? শুনেন সাব্বির ভাই বিপদে পইড়েন না। আর এমনটাও ভাইবেন না আপনি সাইন না করলে আমাদের প্রজেক্ট আটকায় থাকবে। প্রজেক্ট ঠিকই বের করে নিয়ে আসবো। আরেকবার ভাইবা দেখেন।”
“ভাইবাই বলতেসি। নিজের কষ্টের টাকায় সংসার চালাবো মাকে বউকে নিজের মনে হবে! অন্যের টাকায় সংসার চালালে মনে হবে যেন ওরাও অন্য কারো!”
কেটে গেল ফোনটা। আমি তখনও ভেবে যাচ্ছি খুব সকালে বের হতে হবে, বাড়ির মালিক ৮ টার আগে উঠেনা! আর সকাল সকাল লোকাল বাসেও ঝক্কিঝামেলা কম পোহাতে হয়। হুমমম।