রাজনীতির কোন বিষয়ই ওর সাথে আমি বলতে গেলে শেয়ার করি না। কিন্তু আজ করলাম। বললাম, “একটু পরেই মিডিয়া রুমে ভিডিও কনফারেন্সে জয়েন করতে হবে। প্রথমবারের মত জীবনে আমাকে তিনটে সত্য কথা একসাথে বলতে হবে, মিথ্যে বলতে কখনও একটুও এই আমার বুক কাঁপেনি, আজ সত্য বলতে গিয়ে কাঁপছে।”
‘আমাকে বলা যাবে?’
“যাবে, ১ম সত্য-স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী হিসাবে আমি দায়িত্ব পালনে ব্যর্থ, ২য় সত্য- আমি ব্যর্থতার দায় নিয়ে পদত্যাগ করছি আর ৩য় সত্য- নকল পিপিইগুলো আমার ছোট ভাইয়ের কোম্পানীই আমদানী করেছিলো, তার উপযুক্ত শাস্তি আমিও দাবী করবো।”
তাকিয়া স্মিত তির্যক অথচ মিষ্টি হাসি দিয়ে বললো, ‘তোমার ছোট ভাই কে আমেরিকায় আমাদের ছেলের কাছে পাঠিয়ে দিয়েছো সেটা আমি জানি, দলের সিদ্ধান্তেই তুমি পদত্যাগে বাধ্য হয়েছো-নিজ থেকে করছো না, আর ঐ কোম্পানীর আসল মালিকতো তুমিই। যাও এক গ্লাস রঙিন জল গলায় ঢেলে মিডিয়া রুমে গিয়ে বসো, আমার মনে হয় মিথ্যাগুলো বলেতে তোমার আসলে একটুও বুক কাঁপবে না।
সবই মিথ্যে…
দশ মিনিটে তিনবার বাথরুমে ঢুকেছি, আয়নায় বারবার তাকিয়ে থেকেছি নিজের দিকে। শিঁথিটা একটুও বাঁকা নয়, বরাবরের মতই সোজা চলে গেছে কপাল থেকে পেছনে দুপাশে কলপ দেয়া কুচকুচে কোঁকড়ানো চুল সরিয়ে। সাদা-কালো মিশলে রাখা চাপ দাঁড়িতেও স্পষ্ট চিড়ুনীর আঁচড়। ফতুয়ার কলারে সামান্যতম ভাঁজও নেই- বরাবরের মতই একদম কেতাদুরস্ত হয়ে রেডি হয়েছি। তবুও হৃৎপিন্ডর ওঠানামাটা দ্রুততর হচ্ছে ক্রমাগত।
আমার স্ত্রী তাকিয়া বিষয়টা লক্ষ্য করেছে , সে সামনে এসে বুকে হাত দিয়ে বললো, ‘এট্যাক হয়ে যাবে তো, সমস্যা কি?’