বিবস্ত্র

নূর হোসেন পরথমে নিজের চোখরে বিশ্বাস যাইবার পারে নাই। দুই ধারে সবুজ ধান ক্ষ্যাতের মাঝ বরাবর আইল দিয়া কে হাইটা আসতাছে? হ, মমতাজই তো! কিন্তু এইরহম বিবস্ত্র ক্যান? নূর হোসেনের মাথা কাম করতাছে না। হ্যায় ভর দুপুরে মমতাজরে এইরহম দেইখ্যা শরমে উল্টা দিকে দৌড় মারে।
হেই থেইক্যা শুরু। নূর হোসেন এহন গিরামের কিছু লুকরে দ্যাখলে পড়িমরি কইরা দৌড়াইয়া পলায়।
এই যেমন হেইদিন গেদু চেয়ারম্যান ও তার দল ইউনিয়ন কাউন্সিলের দিকে আইবার লাগছিলো। নূর হোসেন দেখলো তাগো কারো গায়ে জামা নাই। হের গা রি রি কইরা ওঠলো। কী কুৎসিত দিরিশ্য!
রাইতের বেলা আকাশে ড্যাব ড্যাব কইরা চান ওঠলে, মিয়াঁ ভাই আবুল হোসেনরে কথাটা পাড়তেই হ্যায় নূর হোসেনের দিকে এমুন কইরা চাইলো যেন অর মাথা নষ্ট অইয়া গ্যাছে!
কইলো তুই এক কাম কর। ডাহায় চইল্যা যা। হেইহানে একজন ভালা চোহের ডাক্তার দেহা। আমরা কেউ কিছু দেহি না। খালি খালি তুই এইরহম দেখবি ক্যান?
নূর হোসেন মহাখালী বাস টার্মিনালে নাইমা দেখে ডাহা শুধু নামেই ডাহা, আসলে বেবাকতে উদাম। গিরামের চাইয়া এইহানে বিবস্ত্র মাইনষের সংখ্যা বেশি। নূর হোসেন চোহে কালা চশমা পইড়া গিরিন সুপার মার্কেটের দিকে রওয়ানা হয়।
প্রফেসর খবিরুদ্দিন কইলেন – তা নূর হোসেন আপনার কী সমস্যা?
স্যার, সবাইরে না, কিছু কিছু মাইনষেরে আমি ন্যাংটা দেহি। মিয়াঁ ভাই কইলো ডাক্তার দেহাইতে। তাই আইলাম।
বলেন কি? আমাকেও কি দেখেন?

কী সাঙ্ঘাতিক!
তয় স্যার আপনে চেয়ার থেইক্যা উইঠেন না। তাইলে সমস্যা অইব না।
আপনার এই কথা যে সত্যি তার কী প্রমাণ?
নূর হোসেন কাঁচুমাচু কইরা কয় – স্যার আপনার লুকাইন্না তিলগুলান কে কোথায় আছে কমু?
প্রফেসর খবিরুদ্দিন কিছুটা বিব্রত হইয়া তড়িঘড়ি কইরা একজন নিউরোলজিস্টের কাছে নূর হোসেনরে রেফার কইরা বিদায় করে।
মেলাদিন পার হইয়া গ্যাছে গা। দ্যাশে স্বৈরাচার আরো জুইত মতো গাইড়া বইছে। বিজয় সরণীর ফুয়ারায় এক পাগল সিনান সারবার লাগছে। বিবস্ত্র।
রাস্তা নিরচুপ। সব গাড়ি বন। কালা গিলাসআলা গাড়িতে দামী দামী লুকেরা যাইবো। সিনান করা পাগল গাড়ির গিলাসে চোখ রাহে। দেহে নামী লুক, দামী লুক। তয় হেরাও বিবস্ত্র।

আরও পড়ুন

সর্বাধিক পঠিত