– না আমান, অসভ্যদের এ সমাজ না। সভ্যদের মতো কাজ করো।
– কি ঠাট্টা!
– ঘাড়ট্যারামি বাদ দাও। আর নোংরা ভাষা বন্দ করো। বন্দ করো হাতুড়ির অসহ্য শব্দ। মাথায় সূঁচ ফোটে এর আঘাতে।
– এটাই আমার ভাষা। যা সব সময় করে এসেছি।
– আরে পাগল, ভাষা আর শব্দ কি, সেটাও ভুলে গেছ? থামাও শব্দ!
মৃদু হেসে আমান আবার শব্দ তোলে। আপন মনে।
– আরে উন্মাদ, দেখ, হাতের তালু দিয়ে কান ঢেকেছে সবই। বাইরে তাকিয়ে দেখ। ওরে বাবা, কী বিশ্রী অসহ্য শব্দ! কী বাঁজে! এসব কঠিন শব্দ কান শুধু নয়, দেমাগকেও তালা লাগিয়ে দিচ্ছে। থামাও তুমি।
আহসানের কথায় থমকে ওঠে আমান। সচকিত হয়ে চারদিকে দেখে।
– শুনতে পাচ্ছে! আহসান! এটা খুশির কথা।
এবার সে আরো উৎসাহ নিয়ে হাতুড়ি পেটাতে থাকে।
উন্মাত্ত পিতা আর মেয়ে বলে ওঠে, এটা তো খুশির কথা, তারা কান ঢেকেছে। তারা শুনতে পাচ্ছে। হা হা হা… তারা শুনতে পাচ্ছে। আমান পেরেক ঠুকে শব্দ করে, ঠিক, ঠিক ঠিক ঠিক ঠিককিস। উন্মাতাল হয়ে চিৎকার করে আমান আর মাইশা।
– হে আমার খাম্বার বাবারা…
– তার সন্তানেরা…
– তার নাতিপুতিরা…
– আসো ও ও ও….
দুই জনই এক সাথে বলে। সুরেলা করে বলে। ধীর তাল লয়ে বলে। দেহের সমস্ত শ্বাস-প্রশ্বাস জনম জনম জোড়া লাগিয়ে দীর্ঘতরো করে বলে, আসোও ও ও ও ও ও ও…
এরপর প্রস্তুতি নেয়। একেবারে নিস্তব্ধ হয় সময়টা। মাইশা হাতুড়ি ধরে, আমান পেটানোর জন্য হাতুড়ি তোলে। ঠিক এসময় আহসান এসে হাতুড়িটি ধরে ফেলে। বাঁধা দেয়।
– বাঁধা দিওনা আহসান, এতদিন পর তারা শুনছে, এতোদিন পর তাদের কানে পৌছেছে। এখনই মোক্ষম সময়, এ সময়ই শব্দ তুলতে হবে যাতে তাদের মগজ পর্যন্ত পৌছায়, যেন পয়দা হতে পারে নতুন করে চিন্তা। যেন বিকৃতি ঘটার আগেই সত্যটা জানা যায়।
আকাশের সূর্য পেরেকের মাথায় চিকচিক জ্বলে উঠছে। তারই ওপর হাতুড়ির বাড়ি। আঘাত আগুনের ফুলকি হয়ে ছড়িয়ে পড়ছে বর্ণিল ছটায়। পেশিবহুল শক্তির জোরে আগুনময় সূর্য ফাঁটাচ্ছে। আঘাতে আঘাতে সুর্য ভাঙার মগ্নতায় আরেক সুর জেগে উঠছে।
হুম! হুম! হুম! হে আমার। খাম্বাধর-রা। আসুন। আসুন। আসুন…
মঞ্চের একেবারে টিঙটিঙ্গে উঠেছে মাইশা। আপনারা আসুন…
বাপের সাথে তাল মেলাতে ওপরে নিচে নামতে উঠতে থাকে সে।
লোকেরা চারদিকে, চিৎকার করছে।
– থামাও ওকে আহসান। থামাও। পুলিশ না আসা পর্যন্ত ওদের সামলে রাখো। খবর গেছে। তারা আসছে।
আহসান আমানকে মঞ্চ থেকে টেনে নামাতে চায়। কিন্তু আমান ঝটকা মেরে নিজেকে ছাড়িয়ে নিয়ে লাফ মেরে মঞ্চে ওঠে।
– আরে সরো! গাধা কোথাকার, দেখো আর শেখো কিভাবে কোনো সত্য খাঁড়াভাবে গেঁথে দেয়া যায়। তোমরা যাকে নগ্ন পেরেক বলো। জীবনকে শেখাও আর আসো আমার সাথে।
– এবং আসো তুমি আমাদের সাথে। যোগ দাও। কাকা! মাইশা বলে।
– তোমার বউ বাচ্চাদেরকেও ডাকো। শিখে নিক। এটা এমন এক শিক্ষা, নিরেট শব্দ তৈরি করা। নির্ভেজাল এক সত্যের একঘাতি শব্দ যা মস্তিষ্কে পেরেক ঠুকতে পারে। বাক্যের শব্দের ফাঁকে যেসব সত্য আত্মগোপন করেছে তাদের আত্মাকেও টেনে আনতে পারে। যেসব মিথ্যা বারংবার বলে সত্যে পরিণত হয়েছে সেসবও চিনতে পারবে।
দুহাতকে মাইকে পরিণত করে আরো উৎসাহে বলে, দেখো, কেমন কাঁপছে আমার হৃদয়। তুমি তো জানোই কোনো কিছু পয়দা হওয়ার জন্য কাঁপন কতটা জরুরী। প্রসবকাল এখন। তোমার বুকে হাত দাও আর দেখো। মঞ্চ বানানোর কৌশলী বিদ্যা যা শিখেছি, খুব কঠিন কাজ নিরেট সত্য মঞ্চস্থ করা। আমার মেয়েকে দেখো দুরদান্ত শব্দ কিভাবে পয়দা করতে হয়, শিখে গেছে।
কথাটা বলেই মাইশার দিকে তাকায়। মাইশা বলে ওঠে,
– আসো, আমাকে রেপ করে যাও প্রকাশ্য দিবালোকে হে আমার খাম্বার বাবারা…
– আমার মেয়ে ভার্জিন, বিবি মরিয়মও জানেন, আসেন। কসম খোদা!
আহসান মুখ ঢাকে।
– ছি ছি, তুমি কি বলছ আমান? লজ্জাশরম নাই তোমার? সবার সামনে মেয়েকে বেইজ্জতি করছ?
– তুমি গোল্লায় যাও। বরং তোমার মেয়েকেও ডাকো।
– আমার মেয়েদের লজ্জা সম্মান আছে। তোমার মেয়ে যা ইচ্ছে করুক, জড়াইওনা আমাদের।
– হা হা হা, আহসান, সেটা কি করে থাকে? যখন আমার মেয়েও নিরাপদ নয়!
বিদ্রুপের হাসি থামিয়ে বলে, এটা লজ্জার বিষয় না, আহসান, এই যে দেখ এভাবে কাঠের ওপর কাঠ সাজিয়ে পেরেক ঠুকে যুগপৎ শব্দ তৈরি করা এবং মঞ্চস্থ করা, যা তোমার বিশ্বাসকেও ভেঙে গুড়িয়ে দেয়, এটা খুব কঠিন, বীরপুরুষের কাজ।
– না তুমি তা করতে পারো না।
– তাহলে কে পারে?
– রাষ্ট্র।
– না আহসান, তুমি রাষ্ট্রবিরোধী কথা বলছ।
– মোটেই না। শুধুমাত্র রাষ্ট্রই সত্য তৈরি এবং প্রতিষ্ঠা করতে পারে। অন্য কেউ নয়।
মেয়ে মাইশা অপেক্ষা না করে উত্তর দিতে থাকে, শুধু সত্য নয়, উন্মাদনাও বলতে পারেন।
– ফালতু বকবে না। বাপ মেয়ে একই হয়েছ তোমরা। তোমাদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নিতে যাচ্ছে। এসব বন্ধ করো।
লোকজনেরা আহসানের কথায় সুর মিলিয়ে কেউ কেউও বাঁধা দিতে লাগল।
শাসনতন্ত্র প্রতিষ্ঠার জন্য রেপ কতটা জরুরী সে জানে না।
কিন্তু তাদের ওসব কথায় কান দেয় না আমান। সে যেন ওদের প্রতিবাদে বেশ জোর খুঁজে পায়। লোকজন জমায়েত হতে দেখে মনে জোস এসেছে, শরীরের শক্তি পেয়েছে। এতোদিন পর এতোগুলো মানুষকে ছুটে আনতে পেরেছে। জড়ো করতে পেরেছে। তাই উৎফুল্ল সে।
আরো একটু উন্মাদ হতে চাইছে। কিন্তু আহসান ততক্ষণে লাভ দিয়ে মঞ্চে ওঠে। চিৎকার করে, ওরা তোমার বিরুদ্দে আইনি ব্যবস্থা নিবে।
হ্যাঁচকা টান দিয়ে আমানকে থামিয়ে দেয়। চোখে চোখ রাখে। বন্ধু আহসানের উদ্বিগ্ন মুখ গম্ভীর হয়ে যায়।
খানিক কুঁচকে গেল আমানের কপাল। এটা কঠিণ যখন রাষ্ট্রথেকে ধর্ষণ করতে চায়। যখন আইনের কথা বলে… হঠাৎ অন্ধকার মুখ থেকে চিন্তা সরে যায়। আচমকা অট্টহাসিতে ফেটে পড়ে আমান, সে চিৎকার করে বলে, নিক!
বলেই পেরেক ঠুকে যুগপৎ শব্দ করে আর বলতে থাকে, মা মাইশা জোরে, আরো জোরে মা হাতুড়ি ধরো, আইনি ব্যবস্থা, সেই ১৪ বছর থেকে, ১৪ শত বছর থেকে। হা হা হা, ১৪ হাজার বছর থেকে। তা নিতে পারে ওরা। নিক যা ইচ্ছা। ডিক, ডিক, ডিক, ডিক, ডিক ডিককিস।
শব্দগুলো করে সে হাতুরির আঘাতের থেকেও জোরে আবার কখনো আস্তে। ভ্রুক্ষেপহীন এবং বেপরোয়া ভাবে।
সাথে বেড়েছে মাইশার চিৎকার।
– আরে থামো! গর্জে ওঠে সবাই।
আহসান মঞ্চে আমানকে ধরে বলে, এসব না করে আমান তুমি আইনের প্রচ্ছয়ও নিতে পারো।
– হা হা হা আহসান, ভুক্তভোগীকে আইনি ব্যবস্থা নিতে বলছ? ওসব তো খাম্বাওয়ালাদের অস্ত্র। যাদের খুঁটি বড়ই পোক্ত। সেই চৌদ্দ বছর ধরে দেখছি। তারা প্রকাশ্যে নিয়ে গেছে আমার বড় মেয়েকে। আর আমি ১৪ বছর দ্বারে দ্বারে ঘুরছি। আর আইন কোনো না কোনো ফাঁকে তাদের রক্ষা করেছে।
– ওসব গুজব। ভুক্তভোগীরা যাতে নায্য বিচার পায় সে কারণে আইন। তোমার জন্য।
– ওসব মারপ্যাঁচের কথা তুমি বলোনা। ওরা যা ইচ্ছা করুক। এতদিন পর আমি বুঝেছি, এর থেকে সহজ ও সত্য কথা হলো ডাইরেক্ট পেরেক ঠোঁকা। আর তাছাড়া, তারা যা করতে চায়, মানে করেছে, হরণ করা এবং আইনসিদ্ধ করা, আমি সেটাই বিলিয়ে দিচ্ছি। প্রকাশ্যে।
– হে আমার খাম্বারা, আসেন, আমাদের রেপ করে যান। প্রকাশ্যে এই সব মানুষদের সামনে। দেখবে না কেউ। ওরা সবাই ফিরিয়ে থাকবে মুখ।
– হ্যা, কেউ দেখবে না।
– কেউ প্রতিবাদও করবে না।।
– বরং এটাই হবে রাষ্ট্রের প্রতিষ্ঠিত আইন। প্রতিষ্ঠিত সেসব সত্যে, যেসব তারা বারবার বলে রূপান্তর করেছে।
– হ্যা, যা তোমরা প্রতিষ্ঠা করতে চাও। সেই মিথ্যেগুলো। এই যে উদোম শরীর ঢাকা বাহারি লেবাসেরে মতো।
সবার সামনে মাইশা ন্যাংটো হতে থাকে।
আহসান এবার আমানের হাত ধরে টেনে নিয়ে আড়ালে কানে কানে বলে, না এটা তুমি করতে পারো না।
আমান কাছে ঘেষে ফিসফিস করে বলে,
– কেনো? তারা যখন সবাই মিলে সবার সামনে আমার মেয়েকে নিয়ে গেল, রেপ করে মেরে ফেলল তখন তো কারো লজ্জা গেলো না, সমাজ নষ্ট হয়ে গেল না। বরং রেপ-কারিকেই সম্মানিত করল?
– তুমি কোথাকার কথা কোথায় কাকে বলছ?
– ওসব বুঝিনা আহসান। তারা যা চায় তাই দিতে প্রস্তুত আমি। মনে করো গোলাম আমি। তাদের হুকুমমাত্র সব দিবো। হে আমার খাম্বারা…. আমি আমার মেয়েকে, আমার, আমার পরিবারকে ধর্ষণ করতে দিব। আমার সন্তানকে আমি জন্ম দিয়েছি, আমি মানুষ করিয়েছি, এই অধিকার আমার আছে তাদের দিয়ে যা ইচ্ছে করানোর।
– সমাজ বিরুদ্ধ কোনো অধিকার তোমার নাই আমান।
– হা হা হা! আহসান, কোন অধিকরাটা আমার আছে?
এবার সে ঘোষণা দেয়, আগামী কাল প্রকাশ্যে নগ্ন হয়ে দাড়িয়ে থাকবে আমার সুন্দরী মেয়ে মাইশা। এবং আমি। আপনারা যাকে ইচ্ছে ভোগ করতে পারেন।
– এমন করতে পারেন না আপনি।
কিছু যুবক চিৎকার করে। প্রশাসন নড়ে ওঠে।
– কেন?
– আইন আপনি অমান্য করতে পারেন না।
– আইন?
আমান কপাল কুঁচকে তাকায়। কিছুক্ষণ নিরব থেকে মৃদু হাসতে হাসতে মাথা ঝাকায়। বলে, হ্যা। এটাই তো প্রতিষ্ঠা হয়েছে। কিন্তু আইন কাদের রক্ষা করার জন্য?
– যে নায্য বিচার পায় না তাদের জন্য।
– আলবৎ নয়। আইন খাম্বাদের রক্ষার জন্য।
কিন্তু আমার মেয়ে, বড় মেয়ে, প্রাইভেট পড়াতে গিয়ে ক্যান্টমেন্ট থেকে রেপ হয়ে মরে গিয়ে বিচার চাইতে চাইতে চৌদ্দ বছর পার করেছে। আর তোমরা নিজেরে ভাবছো উচ্চতর। কিন্তু আমি জানি তোমরাই হলে নিকৃষ্ট। খুব নিচু স্তরের মানুষ। এবং এটাই আমি বোঝাতে চাই, তোমরা জেনে রাখো, মুক্ত হতে হবে তোমাদের স্তর বিবর্তনের জন্য। আর এটা এক দিনের ব্যাপার না।
– কি সব পুরানা কথা তুলছ। বোকা আমান, দুনিয়া বদলে গেছে। বিবর্তন হচ্ছে খাপ খাইয়ে থাকা। আর তুমি তার বাইরে চলে যাচ্ছ।
– হা হা হা, খাপ খাওয়াই হচ্ছে প্রকাশ্যে নগ্ন হওয়া, যা তোমরা গোপনে করতে থাকো। সেই কাজটা আমার মেয়ে করতে চলেছে, নগ্ন করতে তোমার সত্যগুলো।
– কিন্তু তুমিতো সত্য নয়, তোমার মেয়েকেই নগ্ন করছ। এটা সবাই জানে তোমার মেয়ে এই অঞ্চলের সেরা, তাকে ন্যাংটো করো না। তুমি কি ভেবেছ যুবকেরা তোমার ডাকে এসেছে? তারা এসেছে শুধুমাত্র তোমার মেয়ের নগ্ন শরীর দেখতে। তারা এখনো অধিকার আর ভোগের মধ্যে নিজেকে পৃথক অবস্থায় দাঁড় করানো শেখে নি, এমনকি লোভ-লালসা আর ভালোবানার পার্থক্য জানে না।
– চোখ পুড়ে যাক ওদের, আহসান, তারা প্রেমেই পড়ুক আর লোভে পড়ুক, চিনতে থাকুক, আহসান, আমার মেয়ে যা বলতে এসেছে, তাদের দিলপ্রাণ পুড়ে যাক, মরুক যুবকেরা, আমার মেয়ের কণ্ঠ কিন্তু চমৎকার এবং তার চিন্তাধারা। আসোও ও ও ও …
– হ্যা আমি জানি। এটাও জানি টগবগে সুন্দরি সে, যে কেউ লুফে নিয়ে বিপদগামী করতে পারে। তুমি তাকে আগলে রাখো।
– আমার বড় মেয়েকেও আগলে রেখেছিলাম আহসান, তারা তুলে নিয়ে গেছে। হে আমার খাম্বারা, আমাকেও তুলে নাও।
– আমাকেও। আমি কিন্তু আমার বড় বোনের মতো নিশ্চুপ নই। মুখরা রমনী! হা হা হা। মাইশা বলে।
– যারা চিনে নি হৃদয়, কিংবা মৃতু, কিভাবে মরতে হয় যারা শেখেনি , তাদের ডেকোনা। তারা নেশাগ্রস্থই থাকুক।
– বরং তুমি আমার সঙ্গে আওয়াজ তোলো,
– জোরে, আরো জোরে, যেন আমাদের সম্মিলিত আর্জি আল্লাহর আরশ পর্যন্ত পৌঁছে যায়
– হে আমার খাম্বারা আসো…
চারদিক থেকে মশাল আগুন নিয়ে ছুটে আসে লোকেরা। ওই হট্টগোল শুরু হয়।
আহসান তাড়াহুড়ো করে পালিয়ে যেতে থাকে আর মিন মিন সুরে বলতে থাকে,
– এই আরজি কবুল করেছে আল্লাহ। এবার শেষ করে ফেলবে তোদের। আমান, তুমি আর তোমার মেয়ে পুড়ে মরো।
দ্রুত সে নেমে পালাতে থাকে।
দ্রুতই মঞ্চে জ্বলে ওঠে আগুন। ছুটে এসে পুলিশের সাথে চারপাশের লোক।
আগুন আর ধোঁয়ার কুণ্ডলী ফেনিয়ে ওঠে। পুলিশে ধরে নিয়ে যায়।
আমান ঠাট্টার ছলে বলে, ধরে নাও আর মেরে ফেলো। তোমাদের আইনের সেই ক্ষমতা আছে।
দ্রুত হাত ছিটকে মঞ্চে উঠে খাম্বার টিংটিঙে মাথায় দাঁড়িয়ে পরে মাইশা। আর আকাশ ভেঙে বাঁজ পড়ে। এরপরই কাউকে দেখা যায় না। আগুন জ্বলে। ছাই হয়ে যায়। না কোনো হাড়গোর নেই।
শুধু রামছাগল মাথা তুলে ব্যা করে ওঠে। পিলারের মাথা থেকে গড়িয়ে পরে লাল রক্তের রেখা। আস্তে আস্তে মাথা তোলে লোকেরা। আজব জাদু! তারা বলে, সবকিছুই গায়েব হয়ে গেছে। সব ঠান্ডা।
শুধু ছাগল জাদুর কথা বলে না। তাকিয়ে থাকে। বাঁজ পড়া মানুষের শরীর থেকে রক্ত গড়িয়ে পড়ে কিনা ছাগল হয়তো জানে না। শুধু ব্যা ব্যা করতে থাকে।
[ দুই বছর আগে লিখে রাখা হয়েছিল]