যখন দিনশেষে নেমেছিল আঁধার

  যখন দিন শেষে নেমেছিলো আঁধার

গত কয়েকদিন ধরে ছেলেটি আমার সঙ্গ নেয়। সুসজ্জিত মূল্যবান টাইলসে মোড়া বাজারের মসজিদ থেকে এশার আজানের সুর আশেপাশের গ্রামে ইহলৌকিক ব্যস্ততায় বৈরাগ্যের তরঙ্গ তুললেই বাজারের ঝাঁপ একে একে বন্ধ হওয়া শুরু হয়৷ বাজার থেকে বের হয়ে বড় রাস্তা পার হয়ে পাড়ামুখী সংযোগ সড়কটিতে উঠলেই সে তেমুনিয়া থেকে গ্রামের দিকে আসা রাস্তায় কালের সাক্ষী বটগাছের তলা থেকে আমার সঙ্গ নেয়। কণ্ঠে অপূর্ব সুর। হরি দিনতো গেল, সন্ধ্যা হলো পার কর আমারে…..। গ্রামটিতে এখনো শহরের ছোঁয়া লাগেনি। গাড়ি রিকশা সদ্য আসা ইজিবাইক সব হাইওয়ে ধরে চলে যায় নানা গন্তব্যে। বটগাছটি মাটির রাস্তার মুখে দাঁড়িয়ে নাগরিক কৃত্রিমতা থেকে বিশ্বস্ততায় গ্রামটিকে আলাদা করে দিয়েছে। ত্রস্ত কোলাহল নেই চারপাশে। বিজলি বাতির পিলার বসেছে বটে, ইলেকট্রিসিটি যতোক্ষণ জ্বলে তারচেয়ে বেশি নিবানো থাকে। কয়েক মাস আগে চৈত্রের গরমে এমনি এক ইলেক্ট্রিসিটি হীন সন্ধ্যায় জি বাংলার সিরিয়াল না দেখতে পেরে গ্রামবাসী দলবেঁধে পল্লীবিদ্যুতের অফিস ভেঙে দিয়ে এসেছে।

 

মাইলখানেক ভেতরে ঢুকে আমি ডানদিকে চৌধুরী বাড়ির গেইটে মোড় নিলে ছেলেটি সোজা রাস্তা ধরে গান গাইতে গাইতে চলে যায়। পুরোটা রাস্তা আমি তার গানে এমন বুঁদ হয়ে থাকি, জিজ্ঞেস করা হয়না তার নাম কি, কোন বাড়ির ছেলে সে। সে হিন্দু না মুসলিম? হরিকে ডেকে গান গায় রোজ। প্রতিদিন ভাবি। কিন্তু ছেলেটির গানের ভেতর ডুবে গিয়ে প্রতিদিন ভুলে যাই।

 

চৌধুরীর দুই মেয়ে তাসনুভা আর তারান্নুম এখন বাড়িতে। বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ে তারা। বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ। কিসের যেনো ছুটি। চৌধুরী চাচা ডেকে পাঠিয়েছেন। গ্রামের হাজার মানুষের মাঝে চৌধুরীরা আভিজাত্যের মোড়কে বড়ো নিঃসঙ্গ। আমি যেনো একটু সময় কাটিয়ে আসি। চৌধুরী চাচার কথা গ্রামের অধিকাংশের কাছে এখনো নির্দেশই। অমান্য করার কথা ভাবেনা কেউ। অর্থ বিত্ত শিক্ষা আর একটা অচেনা সম্ভ্রমে কেউ তাঁদের উপেক্ষা করতে পারেনা।

 

প্রতিদিন বাজারে দোকানের ঝাঁপ বন্ধ করে বাড়ি ফেরার সময় ঐ বাড়িতে ঘন্টাখানিক গল্প করে যাওয়া রুটিন হয়ে দাঁড়িয়েছে আমার। পাঁচ বছর কাতারে রাজমিস্ত্রীর কাজ করে গতবছর দেশে ফিরেছি আমি। এস এস সি তে ফেল করার পরই আমাকে চেয়ে চিন্তে, ধার দেনা করে আমাকে কাতার পাঠিয়ে দিয়েছিল আমার আব্বা। ফিরে স্থানীয় বাজারে হার্ডওয়্যারের দোকান দিয়েছি বিদেশ থেকে আনা টাকায়।

 

যদিও আমার বাবা এদের ক্ষেতখামার করে, অনেকটা কামলার মতোই, তবু আমার মূল্যায়ন ওদের পরিবারে বাবার চেয়ে কিছু বেশি। তার অন্যতম কারণ গ্রামের একমাত্র প্রাইমারি স্কুলে আমরা একসাথে পড়া শুরু করেছি। আমি ওদের সহপাঠীর মর্যাদা পাই। আর সেই প্রাইমারি থেকেই তারান্নুমের জন্য ভেতর টনটন করে আমার। স্কুল মাঠে এক্কাদোক্কা খেলার সময় বিনাকারণে ওর পক্ষ নিতাম। আইসক্রিমওয়ার কাছে ভীড়ের কারণে ঘেঁষতে না পারলে, আমি ভীড় ঠেলেঠুলে আইস্ক্রিম এনে দিতাম। আমার এই অকালপক্ব অনুভূতি বাকিরা কে কিভাবে দেখে ভাবার মতো গভীরতাও তখন ছিলো না। কিন্তু তারান্নুম কতোটা খুশি হতো ওর মুখের ভাঁজে কোথাও তার ছায়া পড়তো না। আমি নিভৃতেই তারান্নুমকে ভাবতাম, ভুলভাল বানানে চিঠি লিখতাম যার একটাও ওর হাতে পৌঁছানোর সাহস ছিলোনা। আএ রাতে ঘুমিয়ে স্বপ্ন দেখতাম, তারান্নুম ঐশ্বরিয়া, বৃষ্টিতে ভিজে স্কুলের মাঠে মেঘের মতো শুভ্র পোশাক পরে বৃষ্টিতে ভিজে ঘুঙুরের তালে দুহাতে তাল দিচ্ছে, তাল সে তাল মিলা……।আর আমি আড়াল থেকে লুকিয়ে দেখা অক্ষয় খান্না। চৌধুরী বাড়ির বৈঠকখানায় চাটাইয়ে বসে দেখেছিলাম ছবিটা। তারান্নুম কি বুঝেও বুঝেনা? এতোদিন পর সুযোগ পেয়ে তারান্নুমকে একনজর দেখার জন্যই ওদের বাড়ি যাই আমি।

পৌষ প্রায় ফুরিয়ে এসেছে। ঘন কুয়াশায় চৌধুরীদের ছাদ ঢেকে গেছে অস্পষ্ট ধোঁয়ায়। গাছের পাতা চুঁইয়ে ফোঁটা ফোঁটা শিশির টুপটাপ পরতেই শুকনো লালমাঠির উঠান দ্রুত তা শুষে নিতে চাইছে। চিনের চাল বেয়ে দুয়েক ফোঁটা বুঝি ছিটকে গায়ে এসে লাগে। সখিনাকে দিয়ে খালাম্মা ঘানি ভাঙা সরষের তেল মাখা মুড়ি আর পাটালি গুড়ের চা পাঠিয়ে দেয়। আমি আমার দোকান থেকে সাথে আনা চানাচুরের প্যাকেট ছিঁড়ে মুড়ির সাথে মিশিয়ে নেই। খেতে খেতে গল্প চলে ঘন্টাখানেক। তেমন কিছু রাজা উজির মারা গল্প নয়। এই সহপাঠী রেজা, পারভিন, সুকান্ত কে কোথায় আছে। কি দুর্দান্ত দুষ্ট আমরা ছিলাম। স্কুলের আমগাছের আম, পেয়ারা গাছের পেয়ারা কিছুই থাকতো না আমাদের উৎপাতে৷ আমাদের ভয়ে কাঠবিড়ালিরা ভয়ে আসতো না স্কুল বাউন্ডারির ভেতরে। গল্প করতে করতে আমরা হাসতে হাসতে ভেঙে পরি। পারভিনের বিয়ে হয়ে গেছে। বাপের বাড়ি আসে বটে। কারো সাথে দেখা হয়না। পীর বাড়িতে বঊ হয়েছে, খুব পর্দানশীন। রেজা এখন কুয়েতে। সুকান্তরা সেই কবে ঘরবাড়ি বিক্রি করে জেলা সদরে চলে গেছে।

আমাদের গল্প জমে উঠে, কিন্তু লক্ষ্য করি তারান্নুম কোনদিন বাইরে আসেনা। আমাদের গল্পে যোগ দেয়না। আমি লজ্জায় জিজ্ঞেসও করতে পারিনা। পাছে ধরা পরে যাই। তাসনুভারও গল্পে কেমন মন নেই। উদাস চুপচাপ তাকিয়ে থাকে আমবাগানের মাথায় জমাট অন্ধকারের দিকে। সামনে রাখা চা ঠান্ডা হয়, আমি ডাকি, ও নুভা চা খাও। চা যে ঠাণ্ডা শরবত! ও আড়মোড়া ভেঙে যেন হঠাৎ জাগে৷ কোন পৃথিবী ছেড়ে চৌধুরী বাড়ির দাওয়ায় আসে। অ তাইতো, বলে চায়ের কাপ আলিগোছে হাতে নেয়। বাইর বাড়িতে চৌধুরী চাচার বৈঠকখানায় তখন তুমুল তর্ক। প্রধানমন্ত্রী কি মন্ত্রিসভায় রদবদল করবেন , বেগম জিয়া কি জামিন পাবেন? জেলের ভেতরে খালেদা জিয়া কি আইনত গৃহকর্মী পান?

গ্রামের মুরুব্বিরা সব গলার জোরে দেশ উদ্ধার করছে। ভেতর বাড়িতে টেলিভিশনে কেউ তীব্র স্বরে চেঁচায়, শ্যামা….শ্যামা…….। কৃষ্ণকলি……..। এসবের সাথে বেমানান চুপচাপ তাসনুভা। আমি ঠিক বুঝতে পারি ওর কিছু একটা হয়েছে। কিন্তু কি হয়েছে সেটা বুঝতে পারিনা।

 

পরদিন সন্ধ্যায় দোকানের ঝাঁপ ফেলার আগে ছেলেটি হঠাৎ কোথা থেকে হাজির হয়। অন্ধকারে গান গেয়ে সাথী হয় বলে চেহারাটা ভালো করে দেখা হয়না কোনদিন। আমি চিনতে পারিনি প্রথমটায়। সে নিজেই পরিচয় দেয়। ঐযে গান গেয়ে আপনার সাথে যাই, নীলোৎপল। সবাই নীল ডাকে। ওহো আমি হ্যান্ডশেকের জন্য হাত বাড়িয়ে দেই। কোন বাড়ির আপনি? আঙুল তোলে হাতির থান গ্রামের দিকে দেখায় সে। আমি মনে করতে পারি সেই গ্রামের দত্ত বাড়িতে দুর্গাপূজায় যাত্রা দেখে কতো রাত ভোর করেছি সেই কিশোর বেলায়। আর হিরণ্যকশিপু যখন যখন পুত্রকে বধ করতে উদ্যত হয়, তখন আমার আব্বার চেহারা কল্পনা করে ভয়ে কেঁদে দিতাম। সুযোগে গল্পটা নীলকে বলি। নীল হো হো করে হাসে। দারুন গল্প জমে দুজনের।

 

রাত বাড়তে থাকে। এশার আযান শোনা যায়, দিনভর ব্যস্ততা বন্ধ করার তাড়া। চারপাশের সব ঝাঁপ বন্ধ হয়ে যেতে থাকলে রাস্তাটা অন্ধকারে তলিয়ে যেতে থাকে ধেয়ে আসা পদ্মার জলের মতো। আমি ঊঠে যাবার জন্য ব্যস্ত হই। নীল আমার সহযাত্রী হয়।

আমি অবাক হই। আপনার বাড়ির রাস্তাতো ঐ পূবদিকে, আপনি প্রতিদিন আমার সাথে এই উল্টো রাস্তা ধরে আসেন যে? নীল হাসে। যথারীতি গান ধরে, হরি দিনতো গেলো সন্ধ্যা হলো…..।ইচ্ছে হলো জিজ্ঞেস করি, প্রতিদিন এক গান কেনো? একমনে অখণ্ড মনোযোগে গান গাইছে নীল, ধ্যানের মতো। ধ্যান ভেঙে জিজ্ঞেস করতে ইচ্ছে করেনা। চৌধুরী বাড়ির সামনে হাঁটা থামিয়ে দিলে নীল আমার হাত ধরে, তারান্নুমকে এটা দেবেন? আমি এবার ঘটনা বুঝতে পারি। আচ্ছা এই ঘটনা! নিজের কথা তারান্নুমকে জানানো হয়নি। কিন্তু নীলের আকুলতা আমার মধ্যে ঈর্ষা জাগায় না। বরং আমাকে বিষন্ন বেদনায় আর্দ্র করে। মূহুর্তে আমার বাল্যপ্রেমকে একটা ঝরাপাতা মনে হয়, আর নীলকে মরুঝড়। আমার চেয়ে ওর আকাঙ্ক্ষা সহস্রগুন বেশি তীব্র, আমার বুঝতে মোটেও অসুবিধা হয় না। নীল আমাকে বারবার অনুরোধ করে ওর কথা যেনো আমি তারান্নুমকে না বলি। এবার ঘটনা আরো পরিস্কার হয় আমার কাছে। ব্যাপারটা তবে একতরফা। আমি অবনত হই নীলের প্রেমের তীব্রতায়।

 

সেদিন বাড়িতে ঢুকেই বৈঠকখানার কাঠের পাল্লা ধরে দাঁড়িয়ে থাকা তারান্নুমের সাথে দেখা হয়ে যায় আমার। বৈঠকখানা স্ফুরে আসা বিজলিবাতির আলোতে অপার্থিব নারীর মতো মনে হয় ওকে। রূপকথার রাজকন্যা কঙ্কাবতী নাকি সিনেমার নায়িকা ঐশ্বরিয়া। কিশোরীর চপলতা ছাপিয়ে যৌবনের মাধুর্য। আমি গভীর চোখে দেখি, কোথাও বেশি নয় কোথাও কম নয়। চোখের পল্লবে, ঠোঁটের কোনায়, দেহের ভাঁজে কি নিখুঁত, কি নিখুঁত….।

আমি তারান্নুমকে প্যাকেটটা দেই। অন্যমনস্ক ভাবে প্যাকেটটা হাতে নেয় সে, তেমনি নির্বিকার ভাবে জিজ্ঞেস করে কি আছে এতে? আরে কি আছে আমিই কি জানি নাকি? তারান্নুম এবার একটু অবাক হয়, জানিস না মানে,তুই তো আনলি। আমি চুপ করে থাকি।

প্যাকেট খুলে তারান্নুম অবাক। আমি ফুচকা খেতে ভালোবাসি তুই কেমনে জানলি, বলেছি কোনদিন? তোর সাথে তো আট বছর ধরে দেখাই নেই। পরদিন তারান্নুম অবাক হয় একগোছা দোলনচাঁপা পেয়ে। তারপরদিন একগাদা সত্যজিৎএর ফেলুদা পেয়ে ও আমাকে টানতে টানতে ঘরের পেছনে আমগাছের আলোআঁধারে নিয়ে যায়, সত্যি করে বল এসব নীল দেয় তোকে প্রতিদিন? আমি অস্বীকার করিনা। কিন্তু নীলতো তোকে বলতে নিষেধ করেছে। কথার ধারেও যায় না তারান্নুম। আমাকে আকুল হয়ে বলে ওর সঙ্গে আমাকে একবার দেখা করিয়ে দিবি? দিবি প্লিজ প্লিজ।

ওর আকুলতা অগ্রাহ্য করতে না পেরে সম্ভবনা – অসম্ভবনা তলিয়ে না ভেবে কথা দেই ওকে দেখা করিয়ে দেবো। এই প্রতিশ্রুতি দেয়ায় আমার ভেতরটা কতোটা দুমড়ে মুচড়ে যায় বুঝতে দেইনা ওকে। পরদিন নীলকে কথাটা বলতেই গড়িমসি করে নীল। আচ্ছা দেখি। আজ কাল করে কেবল সময় ক্ষেপণ। আমি আশ্চর্য হই। প্রতিদিন তারান্নুমের কথা শোনার জন্য আমার পিছু নেয় নীল। অথচ দেখা করার কথা বললেই এড়িয়ে যায়। রহস্যময় লাগে আমার।

 

এদিকে তারান্নুম আমাকে আর বিশ্বাস করেনা। ও ধরে নেয় আমি মিথ্যা বলছি। আসলে নীলের সাথে আমার দেখা হয়নি,হয়না। নীলের কথা বলে আমি ওকে মিথ্যে প্রবোধ দেই। আমি বুঝাতে চেষ্টা করি দেখা না হলে আমি কি করে নীলের কথা জানবো। তারান্নুম আমাকে আল্টিমেটাম দেয়, যদি কাল নীলকে রাজি করাতে না পারিস, আর এ বাসায় আসবি না।

কিন্তু কোনভাবেই আমি নীলকে রাজি করাতে পারিনা। সেদিন নীল এলে আমি রেগে যাই। তারান্নুমের সাথে আমার বন্ধুত্ব, ওদের বাড়ি আমার যাওয়া বন্ধ হওয়ার উপক্রম। প্রেমের তো সমাধি দিয়েছি, কিন্তু একটা নজর দেখাও যে কতো গুরুত্বপূর্ণ আমার কাছে, নীলকে সেটা কিভাবে বুঝাই আমি?

 

পরদিন নীল আর আসে না। রাত তখন বেশি নয়। আশ্চর্য হই। ব্যাটা দেখা করার ভয়ে ভাগলো! আমি রাগে নিজেই রওয়ানা হই হাতির থান মুখী। দত্তবাড়ি খুঁজে পেতে দেরি হয়না আমার। একনামেই পরিচিত গ্রামে। কিন্তু দত্তবাড়ির নীলকে খুঁজতে দেখে আশেপাশের মানুষজনের অবাক পলক কেমন পরতে ভুলে যায়, যাকে জিজ্ঞেস করি তারই।

 

ঘটনা কি? একজন বিস্ময় সংযত করে আমার কাঁধে হাত রেখে মুখটা কানের কাছে আনে। আরে তারাতো বছর খানেক আগেই দেশ ছেড়ে চলে গেছে। নীলকে হত্যার পরপরই।

হত্যা? হ্যা সবাইতো জানে জগতপুরের চৌধুরী সাহেবের ছোট মেয়ের সাথে পালিয়ে যাবার মাসখানেক পরেই তো তার লাশ পাওয়া যায়, জগতপুরের রাস্তার মুখে। কে বা কারা যেনো মেরে ফেলে গেছে। আর সে-বছরই তো এক মাঘ মাসের তীব্র কুয়াশায় তার পরিবার গ্রাম ছাড়ে।

 

আমি দেরি না করে ঝটতি ফিরতি রিকশায় উঠি। উড়ে যেতে চাই তারান্নুমদের বাড়িতে। চারদিকে মাঘের ঘন কুয়াশার আচ্ছন্নতা। রাস্তা ভালো করে দেখা যায়না। রিক্সাওয়ালা মুখ ঘুরিয়ে আমাকে আশ্বস্ত করে, এদিকে নাকি ভূতের খুব উৎপাত। ভয় পাইয়েন না। উপরওয়ালার নাম জপেন।

 

বৈঠক খানায় ঢুকে অন্দরের দিকে যেতে যেতে ডাকি, তারান্নুম, তারান্নুম। তাসনুভা দৌড়ে আসে উত্তুরে বাতাসের মতো আরো শীতল ঝাপটা নিয়ে, আমার পথ আটকায়। কারে ডাকেন? তারান্নুমকে? তারান্নুম তো নেই। নেই মানে?

 

চোখে অশ্রু টলমল করে তাসনুভার। তাসনীম ভাই তুমি জানোনা নীলদাকে মেরে ফেলার তিনদিন পরই তো গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছে তারান্নুম।

 

 

 

আরও পড়ুন

সর্বাধিক পঠিত