ডিটেক্টিভ কে কে (কেরামত আলীর কেরামতি)—১৬ (শেষ পর্ব)

১৬
পুতুল কাঁচাবাজার করছিল। আর কেরামত আলী পইপই করে বাজারের এ-মাথা থেকে ও-মাথা পর্যন্ত তাকে খুঁজছিল।
হঠাৎ কেরামত আলী পুতুলের দেখা পেয়ে তার কাছে গেল।
পুতুল ভয়ে ভয়ে চাপা স্বরে বলল, ‘বাজারের ভিতরে কথা বলা যাবে না। আপনি বাজারের শেষ মাথার গলিতে গিয়ে দাঁড়ান। আমি আসতেছি।’
‘ঠিক আছে।’—বলে কেরামত আলী বাজারের ভিড়ের মধ্যে এঁকেবেঁকে হেঁটে চলে গেল।

গলির শেষ মাথায় গিয়ে কেরামত আলী দেখতে পেল সেই ওয়াজ শুনতেঅলার মুদি দোকান। দোকানদার রাকিব সাহেবকে চেনে। সুতরাং এখানে কোনোভাবেই দাঁড়ানো যাবে না।
কেরামত আলী দোকান পর্যন্ত গিয়েও সুকৌশলে ফেরত এল। গলির মাঝ বরাবর দাঁড়াল।
অদূরে ডাস্টবিন। তীব্র দুগর্ন্ধ ছড়াচ্ছে। দম ফেলা দায়। আর আছে কাকেদের দাপাদাপি, কা কা। ফলে সে ডাস্টবিন উজিয়ে এমন একটি জায়গায় দাঁড়াল, পুতুল বাজার থেকে বেরুলেই দেখা যাবে।
কেরামত আলী মাথার উপর আমগাছ ছিল আর গাছের ডালে একটি কাক বসে ছিল। আম গাছের নিচে দাঁড়ানোমাত্র তাকে উদ্দেশ্য করেই কি-না কে জানে, একটা কাক সপাৎ করে তার মাথার উপর এক দলা বিষ্ঠা ফেলে দিল।
কেরামত আলী প্রথমে বুঝল না। যখন মাথায় হাত দিল এবং কাকের বিষ্ঠা তার হাতে লাগল এবং সেই হাতটি নাকের সামনে নিয়ে শুঁকল—তখন বুঝল। সঙ্গে দেয়ালে হাত ঘষতে লাগল।
ঠিক তখন সে দেখতে পেল, বাজারের ব্যাগ নিয়ে দ্রুত গতিতে হেঁটে আসছে পুতুল।
কেরামত আলী দেয়ালের সঙ্গে হাত ঘষাঘষি থামাল। এবং দেখতে পেল পুতুলের ঠিক পেছনে বোরখার সাথে সানগ্লাস পরিহিতা সৌম্যদর্শন একজন নারী আসছেন। অবশ্য কেরামত আলী নারীটির দিকে বিশেষ নজর দিল না।

ততক্ষণে পুতুল তার কাছে চলে এসেছে।
বোরখা পরিহিতা নারীটি হঠাৎ নাই হয়ে গেল। তাকে আর দেখা গেল না। ধন্ধে পড়ে গেল কেরামত আলী! একটু আগেই যাকে দেখা গেল হঠাৎ তিনি কোথায় গেলেন!
যাহোক। বোরখা মহিলার ব্যাপারটা থাক। ওসব নিয়ে চিন্তা করার সময় এখন নয়। বরং পুতুলের সাথে কথা বলা যাক।
পুতুল বলল, ‘ঘটনার হোতা হইল—খালুজান।’
কেরামত আলী বিস্মিত হয়ে বলল, ‘বল কী!’
‘হ্যাঁ। কালকে আপনি যাওয়ার পর খালুজানে বাসায় আইসা খালাম্মার সাথে সেইরকম ঝগড়া করছে। খালাম্মারে খুব বকছে।’
‘কিন্তু কেন?’
‘খালাম্মায় আপনারে বাসায় ঢুকতে দিছে—এই কারণে। সন্ধ্যা থিকা রাত পর্যন্ত ঝগড়া হইছে। তাগো ঝগড়া থেকে আমি জানতে পারছি, ঘটনার হোতা খালুজান নিজে।’
‘কিন্তু তোমার খালুজানে এই কাজ করল কেন?’
‘আরে বোঝেন না—আমার বিয়ে হয়ে গেলে উনাদের বাচ্চা-কাচ্চা লালন-পালন করবে কে? তারা সাগরে পড়ে যাইব না? তাই সে আমার বিয়ে বন্ধ করছে।’
‘তাই বলে একজন মানুষকে খুন করে ফেলবে?’
‘না। সে খুন করতে চায় নাই—খালি বিয়ে ভাঙতে চাইছিল। কিন্তু ভাড়া করা গুণ্ডা এই কাজ করছে।’

ঘটনার আকস্মিকতায় কেরামত আলী কিংকর্তব্যবিমূঢ় হয়ে পড়ল। কী বলবে বুঝে উঠতে পারল না। হঠাৎ লক্ষ করল তার পাশে দাঁড়িয়ে আছে বোরখা পরিহিতা মহিলাটি। তার দিকে ভালো করে তাকিয়ে দেখল, সে আর কেউ নয়—তারই স্ত্রী—মালেকা বিবি।
মালেকা বিবি সানগ্লাস খুলে পুতুলকে বলল, ‘তুমি যা যা বললে পরে আবার অস্বীকার করবে না তো? আমি কিন্তু তোমার সব কথা মোবাইলে রেকর্ড করেছি।’
পুতুল ভ্যাবাচ্যাকা খেয়ে গেল। কিছু বলতে পারল না।
কেরামত আলী বলল, ‘ভয় পেয়ো না। উনি আমার স্ত্রী।’
পুতুল বলল, ‘ও তাই! অস্বীকার করব না। আমি যা শুনছি তা পটাপট বলে দিব।’
মালেকা বিবি বলল, ‘ঠিক আছে। তুমি এখন যাও। দরকার হলে তোমার সাথে আবার দেখা হবে।’
পুতুল আর দেরি করল না। হনহন করে হেঁটে চলে গেল।

কেরামত আলী অবাক হয়ে মালেকা বিবির দিকে তাকিয়ে রইল।
মালেকা বিবি মিটিমিটি হেসে বলল, ‘কী দেখছ?’
কেরামত আলী বলল, ‘দেখছি—সত্যিই তুমি কি তুমি, নাকি অন্য কেউ!’
মালেকা বিবি আবারও হাসল। তারপর নিজেই একটা রিকশা ডাকল।

কেরামত আলী বসল মালেকা বিবির পাশে। রিকশা চলতে শুরু করল।
মালেকা বিবি বলল, ‘এখন কী করবে?’
কেরামত আলী বলল, ‘অফিসে যাব।’
‘আহ তোমার ব্যাপারে জানতে চাই নি। মেয়েটার ব্যাপারে কী করবে—সে কথা জানতে চেয়েছি।’
‘আলমডাঙ্গা থানার দারোগা স্যারের ফোন নাম্বার আছে আমার কাছে। তাঁকে ফোন দেওয়া যায়। কুষ্টিয়া জেলার এনএসআই প্রধানের ফোন নাম্বার আছে। তাকেও ফোন দেওয়া যায়।’
মালেকা বিবি বলল, ‘খুব ভালো কথা। তুমি দুজনকেই ফোন দাও।’
কেরামত আলী বলল, ‘ফোন কি এখন দেব নাকি পরে?’
‘অবশ্যই পরে। অফিসে গিয়ে অবসর সময়ে ফোন দেবে।’
‘ঠিক আছে।’

ততক্ষণে তাদের রিকশাটি পান্থপথ সিগন্যাল পর্যন্ত চলে গিয়েছে। লম্বা জ্যাম। মালেকা বিবি কিচ্ছুটি বোঝার আগে কেরামত আলী হুট করে রিকশা থেকে নেমে গেল।
ভ্রাম্যমাণ ফুলবিক্রেতর কাছ থেকে চটজলদি একটা গোলাপ ফুল কিনে আবার মালেকার পাশে বসল। তারপর গোলাপটি মালেকার দিকে বাড়িয়ে ধরে বলল, ‘এটা গ্রহণ করো।’
মালেকা বিবি ভুরু কুঁচকে তাকাল। বলল, ‘রাস্তার মধ্যে এসবের মানে কী?’
কেরামত আলী বলল, ‘আমার ভাষাজ্ঞান কম। তাই আমি তোমাকে বুঝিয়ে বলতে পারব না। তুমি নিজের মতো করে বুঝে নাও।’
‘আজ থেকে তোমার টিভি দেখা বন্ধ।’
‘কেনে কেনে?’
‘কারণ—টিভিনাটক দেখেই তোমার মধ্যে এইসব ছুঁচলো ভালোবাসার ভাইরাস ঢুকেছে। রাস্তার মধ্যে নাটক শুরু করেছ।’
—বলতে বলতে ফুলটি গ্রহণ করল এবং ব্যাগের মধ্যে ভরে রাখল।
কেরামত আলী চোখে, শরীরে এমনকি মনে—অদ্ভুত এক প্রশান্তির হাওয়া বয়ে গেল। মুখে আর কিছু বলার প্রয়োজনবোধ করল না। আদর প্রত্যাশী বেড়ালের মতো একটি হাত গুঁজে দিল মালেকার হাতের মধ্যে। কিন্তু মালেকা আস্তে করে কেরামতের হাতটি সরিয়ে দিয়ে কড়া চোখে তাকাল।
কেরামত আলী ভিতু বেড়ালের মতো চুপটি করে বসে রইল।

বাসার সামনে রিকশা থামলে মালেকা বিবি নামল।
কেরামত আলী বলল, ‘এখন আর আমার প্রতি নিশ্চয় তোমার আর কোনো সন্দেহ নেই?’
মালেকা বিবি মুচকি হেসে বলল, ‘এখন এই প্রশ্নের উত্তর দেব না।’
‘কখন দেবে?’
‘তুমি বাসায় এলে দেব—কেমন?’
কেরামত আলী মুখজুড়ানো হাসি হাসল। বলল, ‘ঠিক আছে।’

কাঁঠাল বাগানের এবড়োখেবড়ো রাস্তা দিয়ে রিকশা চলতে লাগল। বহুদিন বাদে মালেকা বিবিকে আজ মনের মতো করে পেয়েছে বলে কেরামত আলীর মন ফুরফুরে। অন্যান্য দিন এ রাস্তায় রিকশায় যাতায়াত করে বিরক্ত হলেও আজ তার কোনোরকম বিরক্ত লাগল না বরং আরাম লাগল।
রিকশায় যেতে যেতে সে গুনগুন করে গান গেয়ে উঠল।

অফিসে পৌঁছানোমাত্র কেরামত আলীকে বড়কর্তা ডেকে পাঠালেন।
ভয়ে কেরামত আলীর গলা শুকিয়ে এল। ভয় পেলে তার চেহারায় কাঁদো কাঁদো ভাব চলে আসে। সে ভাবল এই কাঁদো কাঁদো ভাব দিয়েই আজ বড়কর্তাকে বদ করা হবে।
বড়কর্তা কেরামত আলীকে দেখে তাজ্জব হয়ে গেলেন। বললেন, ‘কিহে কেরামত সাহেব! আপনি কাঁদছেন!’
‘কী আর করব স্যার—দশটা না পাঁচটা না—একটামাত্র স্ত্রী! তার যদি দাস্ত হয় আমি কেমন করে সহ্য করব স্যার?’
‘আরে বলছেন কী! দাস্ত হয়েছে আপনার স্ত্রীর?’
‘জি স্যার!’
‘ডাক্তারের কাছে নিয়েছিলেন?’
‘জি না স্যার। সময়ের অভাবে আর আপনার ভয়ে যেতে পারি নি।’
‘এ আপনি কী বলছেন কেরামত সাহেব? আমি কি এতই কঠিন মানুষ? না না না। এ আপনার বিলক্ষণ ভুল ধারণা। আপনি এক্ষুনি বাড়ি চলে যান। উনার চিকিৎসার ব্যবস্থা করুন।’
‘আপনার বদন্যতা স্যার। ধন্যবাদ।’
‘না না না। এসব বদান্যতা-টদান্যতা কিছু নয়। স্ত্রী হল—সংসারের মালিক। তিনি অসুস্থ হলে সংসার চলবে কীভাবে? আপনার আজ কোনো কাজ করতে হবে না। আপনি এক্ষুনি বেরিয়ে পড়–ন।’
‘যাচ্ছি স্যার। কিন্তু আপনি আমাকে তলব করেছিলেন।’
‘সেসব এখন আর বলছিনে। আপনি দেরি করবেন না। জলদি যান।’
কেরামত আলী গদগদ হয়ে বড়কর্তাকে ধন্যবাদ দিয়ে বেরিয়ে এল। এসে পকেট থেকে রুমাল বের করে চোখ মুছতে গিয়ে লক্ষ করল, চোখ দুটো একদম শুকনো, একটু জলও বের হয় নি। শেষে রুমালটি পকেটে ভরে রাখতে রাখতে ভাবল, বড়কর্তা আবার তার দুর্বল অভিনয় ধরে ফেলল না তো!
মনে এইটুকু খচখচানি নিয়ে নিজের ডেস্কে গিয়ে বসল কেরামত আলী। বেশ আরাম করেই বসল। আড়মোড়া ভাঙল চেয়ায়ে গা এলিয়ে দিতে দিতে। নিমেষে অবসাদ কেটে গেল শরীর-মনের। তার মনে হতে লাগল, মানুষের জীবনে যখন সফলতা আসে তখন এভাবেই বুঝি অবসাদ কেটে যায়। হতে পারে সে বোকা, সহজ-সরল গোবেচারা কিন্তু সে একটি খুনের রহস্য ভেদ করে ফেলেছে। আর তার স্বীকৃতি দিয়েছে স্বয়ং মালেকা বিবি। ফলে আজ তার ভীষণ আনন্দের দিন।
সে সিদ্ধান্ত নিল আজ ক্যান্ডেল লাইট ডিনারের আয়োজন করবে। এ ব্যাপারে আগেই মালেকাকে কিছু বুঝতে দেওয়া যাবে না। আয়োজন সম্পন্ন করে চমকে দেবে তাকে।

কেরামত আলী দারোগা বাবুকে ফোন করল।
দারোগা বাবুর মধ্যে সেই আগের মতোই গা-ছাড়া ভাব। এখনো পোস্ট মর্টেম রিপোর্ট আসে নি, রিপোর্ট না-এলে তাদের কিছু করার নেই—ইত্যাদি।
কেরামত আলী বলল, ‘স্যার আর কিচ্ছু করতে হবে না। খুনীর সন্ধান পাওয়া গেছে।’
দারোগা বাবু কোক-খাওয়া ঢেঁকুর তুলে বললেন, ‘পাওয়া গেলে তো খুবই ভালো খবর।’
‘স্যার খুনী আছে—শুক্রবাদে।’
‘শুক্রাবাদ কোথায়?’
‘ঢাকায়। ৩২ নম্বর আছে না? ৩২ নম্বরের উল্টা দিকে।’
‘তা খুনী ওখানে কী করছে?’
‘এখানেই তার বাসা।’
‘খুনীর নাম কী?’
‘রাকিবুল হাসান রাকিব।’
‘আপনি কি শিওর যে উনিই খুনী?’
‘জি স্যার। এবার আর কোনো সন্দেহ নেই।’
‘আপনি বলছেন?’
‘জি স্যার। এবার তথ্য দিয়েছে পুতুল।’
‘পুতুল কীভাবে জানল?’
‘সে রাকিব সাহেবের বাসায় কাজ করে।’
‘বাহ! আপনি দেখি রীতিমতো অসাধ্য সাধন করে ফেলেছেন। আমি এক্ষুনি পুতুলের সাথে কথা বলছি। কথা বলে পরবর্তী পদক্ষেপ সম্পর্কে আপনাকে জানাচ্ছি।’
‘ধন্যবাদ স্যার।’

দারোগা বাবুর পর কেরামত আলী এনএসআই প্রধানকে ফোন দিল।
এনএসআই প্রধান শাহিন মাহমুদ বললেন, ‘কী অবস্থা ভাই? পাত্রীর সন্ধান কি পেলেন?’
কেরামত আলী বলল, ‘দুয়েক দিনের মধ্যে পেয়ে যাব স্যার। পেয়ে আপনাকে মেইল করব। স্যার আমি আজকে ফোন করেছি—খুনের আপডেট দিতে।’
‘কে কাকে খুন করেছে ভাই?’
‘স্যার, আমার খালাত ভাই বশিরুল্লাহ খুন হয়েছে।’
‘তাই বলেন। সারাদিন এত ব্যস্ত থাকি, কোনোকিছু মনে থাকে না। আপনি কিছু মনে করবেন না।’
‘কী বলছেন স্যার। কিছু মনে করার প্রশ্নই ওঠে না। তাছাড়া আমি ক্ষুদ্র মানুষ। আমি কি আপনার উপর কিছু মনে করতে পারি?’
‘তারপর বলেন, খুনী কে?’
‘খুনী হল—পুতুলের মালিক। পুতুল কে মনে আছে তো স্যার? আমার খুন হওয়া খালাত ভাইয়ের সাথে যার বিবাহ হওয়ার কথা ছিল। ’
‘বুঝতে পেরেছি।’

কেরামত আলী দারোগা বাবুকে যা বলেছে একই কথা তাকেও সবিস্তারে বলল।
সবটা শুনে শাহিন মাহমুদ বললেন, ‘আরে আপনি দেখছি গোয়েন্দাদের গোয়েন্দা। দারুণ কাজ করেছেন।’
অতি লজ্জায় কেরামত আলী লজ্জাবতীর মতো নূয়ে পড়ে বলল, ‘না না স্যার। আমি মোটেও সেরকম কেউ না।’
শাহিন মাহমুদ বললেন, ‘এ্যানিউয়ে। আমি দারোগা সাহেবের সাথে কথা বলছি। দেখি কী করা যায়।’
‘প্লিজ স্যার। আমি চাই অনতি বিলম্বে খুনী ধরা পড়ুক।’
‘অবশ্যই ধরা পড়বে। ধরা পড়তেই হবে।’

কেরামত আলী বুঝতে পারল, খুনী রাকিবুল হাসান রাকিব ধরা পড়বে। কান টানলে যেমন মাথা আসে তেমনি তিনি ধরা পড়লে ভাড়া করা গুণ্ডাটাও ধরা পড়বে। এই পর্যন্ত ভেবে কেরামত আলী স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলল।
তখন তার মোবাইলে ফোন এল। মালেকার ফোন।
কেরামত আলী খুব উচ্ছ্বসিত হয়ে পড়ল। মনে মনে সে তাকেই কামনা করছিল।
মালেকা বলল, ‘কী করছ গো?’
কেরামত আলী বলল, ‘এইমাত্র দারোগা বাবু আর এনএসআই প্রধানকে ফোন করলাম।’
‘তাঁরা কী বললেন আমায় বল দেকিনি!’
‘বললেন, আসামি ধরার ব্যবস্থা নিচ্ছেন।’
‘খুব ভালো খবর। তা তুমি কখন বাসায় আসছ?’
‘একটু পরেই চলে আসব।’
‘বেশ। রাখছি তাহলে।’

বড়কর্তার থেকে ছুটি নেওয়াই ছিল। তাই আজ আর দেরি করল না কেরামত আলী। বাড়ির উদ্দেশ্যে বেরিয়ে পড়ল।

পরদিন সকালে মালেকা বিবি কেরামত আলীকে সজোরে ডাকতে লাগল, ‘কই গো তুমি! দেখে যাও!’
কেরামত আলী শেভ করা রেখে ফোম মাখানো মুখ নিয়েই বসার ঘরে গেল।
মালেকা বিবি তার হাতে খবরের কাগজ ধরিয়ে দিয়ে বলল, ‘খুনী ধরা পড়েছে গো!’
কেরামত আলী মনোযোগ দিয়ে বমিরুল্লাহর খবর পড়তে লাগল—
‘পুতুলের বিয়ে হয়ে গেলে রাকিব সাহেবের পরিবার অথৈ সাগরে পড়ে যাবে এই কথা ভেবে তিনি একজন গুণ্ডা ভাড়া করেছিলেন—যাতে সে পুতুলের বিয়ে ভেঙে দিতে পারেন। কিন্তু গুণ্ডা বিয়ে ভাঙতে গিয়ে পুতুলের হবু বরকেই দুনিয়া থেকে বিদায় করে দিয়েছে’…

(সমাপ্ত)

আরও পড়ুন

সর্বাধিক পঠিত