৯
কেরামত আলী ফুলতলা গ্রামে ঢুকতেই একটা নাদুসনুদুস কালো কুকুর তাকে ঘিরে ঘেউঘেউ শুরু করল। ভয়ে জড়োসড়ো হয়ে থেমে পড়ল সে।
সেই বালকবেলায়—জলিল স্যার স্কুলের বাচ্চাদের একটা দোয়া শিখিয়েছিলেন। স্যার বলেছিলেন—দোয়াটা পড়লে কুকুর কামড়াবে না। ছোটবেলায় শিখলেও এখনো মনে আছে দোয়াটা। অন্যান্য সময় কুকুর দেখলেই দোয়াটা তার মনে পড়ে। কিন্তু দুঃখের বিষয়,—এই মুহূর্তে যখন খুব দরকার তখন কোনোভাবেই দোয়াটা মনে পড়ছে না। তাই সে হাত নেড়ে, কুকুরকে বোঝাতে চাইল, আমার মনে কোনো কুমতলব নাই, আমি চোর নই, আমি এ এলাকার মেহমান—আমাকে ছেড়ে দাও ইত্যাদি।
কিন্তু কুকুর তার ইশারার কথা বুঝল না, ঘেউঘেউও থামাল না। বরং কালো কুকুরের ঘেউঘেউ শুনে আর একটা ধূসর কুকুর তাকে সমর্থন জাননোর জন্য দৌড়ে আসতে লাগল। দ্বিতীয় কুকুরের সমর্থন পেয়ে প্রথম কুকুরের গলার জোর দ্বিগুন বেড়ে গেল।
কেরামত আলী চোখে রীতিমতো সরষে ফুল দেখতে লাগল। তার মনে হতে লাগল—কুকুররা আজ তার বারোটা বাজিয়ে ছাড়বে।
সে ‘হেই হেই’ করে কুকুর তাড়ানোর চেষ্টা করতে লাগল। কিন্তু কুকুররা তার হেই হেই শুনে ঘেউঘেউ বাড়িয়ে দিল।
হঠাৎ দেবদূতের মতো এক গ্রামবাসীর উদয় হল ঘটনাস্থলে। তার আগমনে নিমেষে কুকুরদের লম্ফজম্ফ দমে গেল।
গ্রামবাসীটি একটা লাঠি দেখিয়ে কুকুরদের উদ্দেশ্যে বলতে লাগলেন, ‘শাঁটিয়ে পাছার চামড়া একেবাবে লাল করে দেব। বলি—রাতে যখন চোর আসে, গেরস্থের ঘর শূন্য করে মালামাল নিয়ে যায় তখন তোরা কোথায় থাকিস? অথচ দিনে-দুপুরে একজন মেহমানকে দেখে খুব মর্দানি দেখানো হচ্ছে, তাই না? শাঁটিয়ে তোদের দুটোরই ঠ্যাং ভেঙে দেব ফাজিল কোথাকার।’
কুকুর দুটো ভয়ে লেজ দুলিয়ে কুঁইকুঁই করতে লাগল। মনে হল—এতক্ষণ আগন্তুকের সাথে বাজে ব্যবহার করার জন্য ক্ষমা চাইছে।
গ্রামবাসী কেরামতের দিকে হাত বাড়িয়ে দিয়ে বললেন, ‘কিছু মনে করবেন না জনাব। ওরা আপনাকে চিনতে পারে নি।’—তারপর কুকুরের উদ্দেশ্যে বিড়বিড় করে বললেন, ‘মেহমানের সাথে নকতা শুরু করেছে। যা ভাগ!’
কুকুর দুটো বাধ্য ছাত্রের মতো চলে গেল।
কেরামত আলী গ্রামবাসীর সাথে হ্যান্ডশেক করতে করতে বিস্মিত চোখে কুকুরের চলে যাওয়া দেখতে লাগল। এ কি করে সম্ভব? একজন লোক কুকুরকে শাঁটিয়ে লাল করে দিতে চাইলেন আর তারা লেজ গুটিয়ে চলে গেল! কী চমৎকার ব্যাপার! কী অপরূপ দৃশ্য!
লোকটা বললেন, ‘আমার নাম নৃপেব বিশ্বাস। এক্স যাত্রা পালাকার এ্যান্ড প্রম্পটার।’
কেরামত আলী আরো অবাক হয়ে বলল, ‘আপনি যাত্রাপালা লিখেন?’
‘লিখতাম এক সময়। এখন আর লিখি না। তা আপনার পরিচয়টা কি জানতে পারি জনাব?’
‘কেন নয়—অবশ্যই। আমার নাম—কেরামত আলী, এ্যাসিসটেন্ট ক্লার্ক, মৎস্য বিপণন বিভাগ, কাওরান বাজার—ঢাকা।’
‘ও তারমানে আপনি ঢাকায় থাকেন?’
‘জি জি। ২৪২/এ, রোকেয়া ভিলা, ফ্রি স্কুল স্ট্রিট, কাঁঠালবাগান, ধানমন্ডি—ঢাকা।’
‘বাব্বাহ! কী সৌভাগ্য আমার! দিনের শুরুতেই আপনার মতো একজন মান্যিগণ্যি লোকের সাথে পরিচিত হলাম।’
‘আরে কী বলছেন! মানিগণ্যি হলেন—আপনি। আমি খুবই সাধারণ একজন।’
‘না না না। ঢাকা হল রাজধানী। ঢাকার মানুষ মানেই মান্যিগণ্যি। সে যাগ্যে। চা খাবেন?’
‘তা খাওয়া যায়।’
‘তাহলে চলুন—ওই যে কালভার্টের মাথায় বিজনের চায়ের দোকান, ওখানে বসে চা খেতে খেতে কথা বলি। হাতে সময় আছে তো?’
‘তা আছে বৈকি।’
কেরামত আলী ভাবল, প্রথমে কুকুরের বাধা, তারপর নৃপেন বাবুর আতিথেয়তা—ভাগ্যটা প্রসন্ন নাকি অপ্রসন্ন কে জানে!
সে একটা মিশন নিয়ে এসেছে। কে জানে—সে সফল হয় নাকি ধরা পড়ে যায়। সুতরাং তাকে খুব সাবধান থাকতে হবে। ধরা পড়ে যাওয়ার মতো কিছু করা যাবে না।
দোকানি দুকাপ চা দিল।
চায়ের কাপে চুমুক দিয়ে নৃপেন বাবু বললেন, ‘এদিকে কোথায়, মানে—কার বাড়িতে এসেছেন, জানতে পারি?’
কেরামত আলী বলল, ‘বলছি। তার আগে আপনার কাছে আমার একটি জিজ্ঞাসা ছিল। জিজ্ঞাসাটা কি করতে পারি?’
‘নিশ্চয়।’
‘একটু আগে বলছিলেন, আপনি যাত্রাপালা লিখতেন কিন্তু এখন আর লেখেন না। কেন, জানতে পারি কি?’
‘কার জন্যে পালা লিখব বলুন? দলই তো নেই। নদী শুকিয়ে গেলে কি সে নদীতে মাছ থাকে?’
‘ও আচ্ছা।’—কেরামত আলী বলল, ‘তো এখন কী করছেন?’
‘কী আর করব? বাবার রেখে যাওয়া কিছু জমি-জিরেত আছে। তাতে কৃষিকাজ করি। দুচারটে গাই-গরু পালি আর বিজনের দোকানে বসে চা খাই।’
কেরামত আলী কৃত্রিম বিস্ময় প্রকাশ করে বলল, ‘ও দারুণ!’
নৃপেন বাবু বললেন, ‘আচ্ছা এসব থাক। ঢাকার মানুষ আমাদের এই অজপাড়ায় কী কারণে—বরং সেটা জানি।’
‘আমার খালাত ভাই বশিরুল্লাহর বিয়ে ঠিক হয়েছিল এই গ্রামের একটি মেয়ের সাথে…’
‘হ্যাঁ, মেয়েটার নাম—পুতুল। জামশেদ মিঞার মেয়ে।’
‘তারমানে তো আপনি সবই জানেন!’
‘হ্যাঁ। শুধু আমি না, এলাকার সবাই জেনে গেছে। খুবই দুঃখজনক ঘটনা।’
‘আমি এসেছি পুতুলের সাথে দেখা করতে। হঠাৎ মনে হল, তার সাথে দেখা করি। তাই চলে এলাম। তা এখান থেকে কতদূর পুতুলদের বাড়ি?’
‘আরে—কিসের দূর! বলেন—হাঁটা পথ!’—ধাবমান একটি অটোরিকশা দেখিয়ে বললেন, ‘এইগুলোতে গেলে ১০ টাকা ভাড়া নেবে। ছাপড়া মসজিদের সামনে নামবেন।’—কথা বলতে বলতে গলা বাড়িয়ে চায়ের দোকানের বাইরের দিকে তাকিয়ে নৃপেন বাবু সজোরে হাঁক ছাড়লেন, ‘এই মজনু—এদিকে আয়!’
মজনু নামটি শোনার সাথে সাথে কেরামত আলী চমকে উঠল। বাহ! যাকে চাওয়া তারই দেখা পেয়ে যাওয়া—এ যেন মেঘ চাইতেই বৃষ্টি।
মজনু চায়ের দোকানে এসে নৃপেন বাবুকে নমস্কার জানাল।
নৃপেন বাবু বললেন, ‘উনি পুতুলের সঙ্গে দেখা করতে এসেছেন। উনাকে পুতলদের বাড়ি নিয়ে যা।’
কেরামত আলী মজনুকে এক পলকে দেখে নিল। সদ্য যৌবনে পা দেওয়া যুবক। ধীর-স্থির নয়—অস্থির। এক মাথা চুলে উক্রাবুক্রা ফটকা ডিজাইন। চুলে বেগুনী রঙের কালার দেওয়া। গায়ে কলাপাতা রঙের শার্ট। গলায় রূপার চেইন। কানে দুল। হাতে ব্রেসলেট।
প্রথম দর্শনেই কেরামত আলীর ধারণা পোক্ত হল—দুয়ে দুয়ে চার মিলে যাচ্ছে। তারমানে সে একজন খুনীর সামনে বসে আছে—ভাবতেই ভয়ে তার শরীর কাঁটা দিয়ে উঠল।
মজনুর দিকে হাত বাড়িয়ে দিয়ে বলল, ‘আমি কেরামত আলী, এ্যাসিসটেন্ট ক্লার্ক, মৎস্য বিপণন বিভাগ, কাওরান বাজার—ঢাকা।’
কেরামতের হাতে মৃদু চাপ প্রয়োগ করে মজনু বলল, ‘ও! তার মানে আপনি ঢাকা থেকে আসছেন?’
‘জি জি!’
—পাথরের মতো শক্ত ছেলেটার হাত। এ ছেলে হয়তো সব ধরনের অস্ত্র চালিয়ে হাত শক্ত করেছে। হাতের যা অবস্থা দেখা যাচ্ছে, ড্যাগার লাগবে না, কারো গলা চেপে ধরলে সে এমনিতেই শ্বাসরুদ্ধ হয়ে মারা যাবে।
এই ভাবনা যখন ভাবছিল কেরামত আলী তখন তার গাঞ্জুইট্টা ছেলেটার কথা মনে পড়ল। তাহলে খুনটা কে করেছে? মজনু নিজে নাকি গাঞ্জুইট্টা ছেলেটা?
কেরামত আলীর মাথায় প্যাচ লেগে গেল। একবার মনে হল—মজনু খুন করেছে। আবার মনে হল—না, সে নিজে খুন করে নি, গাঞ্জুইট্টা ছেলেটাকে দিয়ে করিয়েছে।
খুন কে করেছে, সেটা নিয়ে পরে চিন্তা যাবে—কেরামত আলী ভাবল, আগে পুতুলের সাথে কথা বলা যাক। পুতুলদের বাড়ি গেলে মজনুর সাথেও কথা বলা হয়ে যাবে। আরো কিছু বিষয় হয়তো জানা যাবে।
মজনু বলল, ‘এখনই যাবেন নাকি পরে?’
কেরামত আলী বলল, ‘না, এখনই যেতে চাই।’
তারপর নৃপেন বাবুর উদ্দেশ্যে বললেন, ‘খুব ভালোলাগল নৃপেন বাবু। আপনার মতো এত অমায়িক মানুষ আজকাল খুব একটা চোখে পড়ে না।’
নৃপেন বাবু বললেন, ‘আরে না না! কী বলছেন এসব! আজ কুকুরের উছিলায় আপনার সাথে পরিচয় হল। কথা হল। আমারও খুব ভালোলাগল।’
‘যদি কিছু না করেন তো আমি চায়ের বিলটা দিতে চাই।’—কেরামত আলী বলল।
‘না না। তা হয় না। আপনি মেহমান। আপনি কীভাবে চায়ের বিল দেবেন?’
এরপর আর কথা চলে না।
নৃপেন বাবুর সাথে বিদায়ী হ্যান্ডশেক করে কেরামত আলী বেরিয়ে পড়ল।
দুপাশে ফসলি মাঠ। মাঝ বরাবর সরু রাস্তা। সেই রাস্তায় অটোরিকশা চেপে যেতে যেতে কেরামত আলী আড়চোখে মজনুর দিকে তাকাল। মজনু তখন অনলাইনে ব্যস্ত। সমানে ফেসবুকের ছবিতে লাইক মেরে যাচ্ছে।
কেরামত আলী বলল, ‘আপনাদের বাড়ি আর পুতুলদের বাড়ি কি একই গ্রামে?’
‘না।’—বস্ততার ফাঁকে মজনু বলল, ‘আমাদের বাড়ি বাকশাডিঙ্গি। ফুলতলার দক্ষিণের গ্রাম।’
‘ও আচ্ছা।’
কেরামত আলী বিরতি নিল। আর কী জিজ্ঞেস করা যায় বা আদৌ জিজ্ঞেস করা ঠিক হবে কি- না সেটা নিয়ে ভাবতে লাগল।
এরমধ্যে বাজারে গরুর দুধ বিক্রি করে আসা এক গেরস্থ তার বাড়ির সামনে অটোরিকশা থামিয়ে নেমে যাওয়ার সময় মজনুর উদ্দেশ্যে বলল, ‘পাঙ্কু চুল তো ভালোই রাখছস! ভদ্র হ, বুচ্ছস? ভদ্র হইতে পয়সা লাগে না।’
মজনু তার কথা শুনেও যেন শুনল না।
অটোরিকশা আবার চলতে শুরু করল।
কেরামত আলী বলল, ‘তা আপনি কী করেন?’
‘এই তো—তেমন কিছু না। ভিডিও করি আর টিকটক করি।’
কেরামত আলী মনে মনে বলল, সেটা অবশ্য তোমার চেহারা দেখেই বোঝা যাচ্ছে। কিন্তু প্রকাশ্যে বলল, ‘ও তাই! আপনি টিকটক করেন! বাহ, দারুণ তো! তা শুনেছি টিকটকে প্রচুর কাঁচা-পয়সা ইনকাম করা যায়—কথাটি সত্য নাকি?’
‘সত্য।’
‘তারমানে আপনিও ভালো ইনকাম করেন?’
‘এই আছে আর কি—সামথিং।’
‘সামথিং মানে?’
‘মানে টুকটাক।’
‘ও। সময় কম দেন মনে হয়?’
‘হুম। অন্যান্য কাজ আছে তো—এইজন্য সময় দিতে পারি না।’
‘অন্যান্য কাজ মানে? আর কী করেন?’
‘আছে।’
‘বুঝতে পেরেছি আপনি আমাকে বলতে চাইছেন না। ঠিক আছে। বলতে না চাইলে অসুবিধা নেই।’
— কেরামত আলী মুখে এ কথা বললেও মনে মনে বলল, তুমি না বললেও আমি ঠিকই বুঝে গেছি, তুমি কী কর! কী তোমার অন্যান্য কাজ!
পুতুলদের বাড়ির সামনে অটোরিকশাা থামল।
মজনু বলল, ‘চলেন নামি।’
কেরামত আলী বলল, ‘আমরা এসে গেছি?’
‘হ্যাঁ।’
জামশেদ মিঞা কাজে যাচ্ছিল। বাড়ির সামনেই তার সাথে দেখা হল।
মজনু তার সাথে পরিচয় করিয়ে দিল, ‘আমার খালু, মানে—পুতুলের বাবা।’
কেরামত আলী সপ্রতিভ হয়ে জামশেদ মিঞাকে সালাম দিল, ‘স্লামালাইকুম।’
জামশেদ মিঞা বলল, ‘অলাইকুম সালাম।’
‘আমি বশিরুল্লাহর খালাত ভাই। আমার নাম কেরামত আলী, এ্যাসিসটেন্ট ক্লার্ক, মৎস বিপণন বিভাগ, কারওরান বাজার, ঢাকা।’
জামশেদ মিঞা কেরামত আলীর কথার বেশিরভাগই বুঝতে পারল না। আন্দাজে বলল, ‘আপনি ঢাকায় থাকেন?’
কেরামত আলী বলল, ‘জি জি। ২৪২/এ, রোকেয়া ভিলা, ফ্রি স্কুল স্ট্রিট, কাঁঠালবাগান, ধানমন্ডি—ঢাকা।’
মজনু বলল, ‘উনি পুতুলের সাথে দেখা করতে আসছেন।’
‘কিন্তু পুতুল তো বাড়িতে নাইকা।’—জামশেদ মিঞা বলল।
‘বাড়িতে নাই মানে? কোথায় গেছে?’—কেরামত আলী জানতে চাইল।
‘ঢাকায় চলে গেছে।’
‘ও আচ্ছা। তাহলে তো আর পুতুলের সাথে দেখা হচ্ছে না। ভেবেছিলাম, ওর সাথে কথা বলব, ওকে সান্ত্বনা দেব—তা আর হল না। যাইহোক। আমি তাহলে যাই।’
‘যাবেন কেন? বাড়ির ভিতর চলেন। পুতুলের মায় আছে। তার সাথে কথা বলেন।’
‘আজ আর যাচ্ছি না। পরে কখনো এদিকে এলে পুতুলের সাথে দেখা করে যাব। আচ্ছা ভালো কথা—পুতুল কোথায় থাকে?’
জামশেদ মিঞা বলল, ‘বললাম না—ঢাকায় থাকে।’
‘ঢাকার কোথায়?’
‘ঢাকার শুক্রাবাদে।’
‘আরে শুক্রাবাদ তো আমার পাশের এলাকা।’
‘তাইলে একদিন দেখা কইরেন পুতুলের সাথে।’
‘কত নাম্বার বাড়িতে থাকে, বলতে পারেন?’
‘বাড়ি নাম্বার ষোল। মালিকের নাম—রাকিবুল হাসান রাকিব।’
‘ঠিক আছে। ধন্যবাদ।’
‘পুতুলের মোবাইল নেই?’
‘আছে। তয় পুতুল কাউরে তার ফোন নাম্বার দিতে নিষেধ করে গেছে।’
‘ও আচ্ছা। ঠিক আছে।’
মজনু বলল, ‘আপনি পুতুলের সাথে কথা বলতে চাচ্ছেন কেন?’
কেরামত আলী ভ্যাবাচ্যাকা খেয়ে বলল, ‘না এম্নিই। বিশেষ কোনো কারণ নেই।’
‘আমার কিন্তু আপনাকে সন্দেহ হচ্ছে!’—মজনু কেরামত আলীর দিকে তীক্ষè দৃষ্টিতে তাকিয়ে বলল, ‘আপনার উদ্দেশ্যটা কী বলেন তো?’
‘না না। আপনি ভুল বলছেন। আমার কোনো উদ্দেশ্য নেই।’
‘উদ্দেশ্যই যদি না থাকবে তাহলে আপনি এখানে আসছেন কেন?’
‘বিশ্বাস করেন, আমি জাস্ট পুতুলের সাথে দেখা করতে এসেছি। আর কিছু না।’
‘আহ মজনু! তুমি বেহুদা উনারে খোঁচাইতেছ কিরলিগা? আমি তো উনার মধ্যে সন্দেহের কিছু দেখতেছি না।’—জামশেদ মিঞা বলল।
জামশেদ মিঞার এই কথায় কেরামত আলী রক্ষা পেল। মজনু আর তাকে ঘাঁটাতে সাহস করল না।
ফলে ভালোয় ভালোয় কেটে পড়ল কেরামত আলী।
(চলবে)