মিলন চত্ত্বরে খানিকটা দাঁড়িয়ে থাকার পর মনে হল অনেকদিন টিএসসির চা খাওয়া হয়নি। রাজু ভাষ্কর্যের পাদদেশে কিসের একটা ফেস্টুন ফেলে রেখেছে কে সেটা দেখতে দেখতেই সামনে একটা চায়ের দোকানের এক পাশের বেঞ্চে বসে পড়লাম।
চায়ের কথা বলতেই ছেলেটি চা দিয়ে কোন এক কাজে কোথায় যেন চলে গেল। দোকানের টেবিলটার যে পাশে বসেছি তার বিপরীত পাশের তিনজন মেয়ে বসে চা খাচ্ছিল আগে থেকেই। তাদের কথা, হাসি কানে আর ঠোঁটে চায়ের চুমুকের সাথে আমার চোখ ছিল রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে ফেলে রাখা সেই ফেস্টুনের দিকে।
চা খাওয়া শেষ। দোকানদার ছেলেটার খোঁজ নেই তখনও। হয়তো পানি আনতে ভেতরে গেছে। টাকা দেয়ার জন্য বসেই ছিলাম। হঠাৎ ওপাশ থেকে একটি মেয়ে দাঁড়িয়ে কিছু টাকা এগিয়ে দিয়েই বলল, ” মামা বিলটা নেন।”
নির্বিকার ভঙ্গিতে কয়েক সেকেন্ড তাকিয়ে থাকলাম মেয়েটির দিকে। সে আবারও বলল, “বিলটা নেন।”
এবারও কিছুই বললাম না। আসলে এই সময় কী বলা যায় সেটা আমার মাথাতেই আসলো না। পাশের মেয়ে দুটোকে হঠাৎ জীহ্বায় কামড় দিতে দেখা গেল। ফিস ফিস করে মেয়েটিকে কিছু একটা বলল। সহসাই মেয়েটির চেহারায় এমন এক লজ্জার আভা ফুটে উঠল যা মূহুর্তেই আমার ভেতরে এক নিবিষ্ট পুলক সঞ্চার করতে সক্ষম হয়েছিল।
দোকানদার ছেলেটির অপেক্ষা না করে বিলটা টেবিলের উপর রেখেই দ্রুত চলে আসলাম সেখান থেকে। মনে তখন সেই মেয়েটির লজ্জার মুখটি ভেসে উঠল কয়েকবার। ভুল করে টিএসসির চা ওয়ালা বনে যাওয়ায় তখন আর মনে কোন খেদ নাই।
এরকম ভুল তোমার আরও হোক মেয়ে।