জিগোলো

তুমি তোমার সেইফটি সম্পর্কে সচেতন। তুমি যখন তোমার সেইফটির কথা ভেবে প্রিকোওশন নিচ্ছিলে ঠিক তখন তোমার বর্তমান ক্লায়েন্ট ইন্ডাস্ট্রিয়ালিস্ট পত্নী শিলা তোমাকে বাধা দেয়।

’ নো প্রিকোওশন শিশির!’

তুমি অবাক হলে, এবং গোটা বিস্ময় কন্ঠে ঢেলে দিয়ে জানতে চাইলে, ’কেনো ম্যাম? আমরা তো এর আগেও..’!

’না, আমি চাচ্ছি না।’

’কিন্তু এটা আমার কাজের জন্য গুরুত্বপূর্ণ।’

’ওটা পরলে কমপ্লিট প্লেজার পাওয়া যায় না, অর্গাজমের একটা প্লেজার আছে না!’

পারকিনসনস রোগে ভোগা চারটা ইন্ডাস্ট্রি ও বহু সারভিস বেসড কোম্পানির মালিকের সুন্দরী, আবেদনময়ী দ্বিতীয় স্ত্রীর এ ধরণের আবদারের জন্য তুমি প্রস্তুত ছিলে না মোটেই। তুমি ভেতরে ভেতরে যে নিষিদ্ধ রোগের আতঙ্ক নিয়ে বাস করো তা যেন উস্কে দিলো সে। তাছাড়া তুমি এই নারীর চারিত্রিক শুদ্ধতা নিয়েও একটু সন্দেহপ্রবণ।  কারণ এই নারীর জীবনধারা খুব সাধারণ বা স্বাভাবিক না। তার কর্মজীবন শুরু হয়েছিল সিনেমার এক্সট্রার ভূমিকায় অভিনয় দিয়ে। এক্সট্রা হলো তারা যারা নায়িকার গুরুত্বহীন বান্ধবীর ভূমিকায় অভিনয় করে। নায়িকা যখন নাচে তখন তার পেছনে দাঁড়িয়ে হাত-পা ছুড়ে তারাও নাচে। নায়িকা কলেজে যায়, তার সাথে সাথে সহপাঠী হয়ে সেও হাটে। এহেন ভূমিকায় অভিনয় করা একটা মেয়ে যখন দ্বিতীয় নায়িকা বা দু একটা কম বাজেটের সিনেমায় মুখ্য নায়িকার রোল পেয়ে  যায় তখন বুঝতে হবে কতটা চড়াই উৎরাই তাকে পার হতে হয়েছে। কথায় আছে প্রযোজকের সাথে না শুলে..! যাক সে কথা। কে কোথায় শোবে এ নিয়ে তোমার এলার্জি থাকার কথা না। কিন্তু এক সময়ের দ্বিতীয় নায়িকা শিলা ওখানেই থেমে থাকে নাই। তার ভবিষ্যৎ নিশ্চিত করতে একজন ধনকুবের আধবুড়ো পারকিনসনস রোগীকে জীবনের বড়শিতে গেঁথে নিয়েছে। তার নৈতিকতা নিয়ে একটু সন্দেহের অবকাশ তোমার থাকবে বৈকি! 

শিলার এখনকার টারগেট হলো ওই লোকটার একটা সন্তানের মা হওয়া। তাহলে তার অবস্থান পাকাপোক্ত হয়। কিন্তু বিছানায় তার পারফরমেন্স জিরো। এমানিতে সুস্থ্য থাকলেও উত্তেজনায় বা আতঙ্কে কী এক অজানা কারনে ভদ্রলোকের সমস্ত শিরাগুলো খিচতে শুরু করে। তিনি ক্রমাগত কাঁপতে থাকেন। তখন কর্তব্যরত নার্সকে ডেকে আনতে হয়। শিলা ও তার বিছানা আক্ষরিক অর্থেই ভিন্ন তথা রুমও আলাদা। শিলা মাঝে মাঝে রাগে ঝরে পড়তে পড়তে বলে, ‘মুঘল হেরেম যেন; বাঁদী এক ঘরে, বেগমরা অন্যান্য ঘরে।’ কিন্তু শিলাকে তার অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখার জন্য একটা বাচ্চা নিতেই হবে। ক্লিনিক্যালি সে হয়ত স্পাম ওভামের মিলতাল করে মা হতে পারবে, কিন্তু ভদ্রলোক তাতে রাজি নন। রোগটা যেহেতু শিলাকে বিয়ে করার এক মাসের মাথায় গ্রো করেছে তাই তার ধারণা প্রথম স্ত্রীর অভিশাপের ফলে এটা হয়েছে। তার জীবনে ওপরে ওঠার ক্ষেত্রে প্রথম স্ত্রীর বিশেষ ভূমিকা রয়েছে। তাই সে দ্বিতীয় স্ত্রী থেকে দূরে সরে গেছে। বিয়ের আগে লোকটা এরকম ছিল না। কিন্তু তখন বাচ্চা নেয়ার কোনো সুযোগ সে দেয় নাই।  কিন্তু শিলা ধুরন্ধর; তার সাথে লোকটা পেরে উঠতে পারবে বলে মনে হয় না। 

শিলা এবার শীতল গলায় তোমাকে বলল,’ আমি তোমাকে তোমার যা রেট তার দ্বিগুণ টাকা দেবো, তুমি কোনো প্রিকোশন নিতে পারবেনা আজ। ইভন তুমি যদি চাও একটা প্লেজার ট্রিপের ব্যাবস্থা আমি করতে পারি। তোমাকে নিয়ে দেশের বাইরেও যেতে পারি। আই হোপ তোমার এতে কোনো আপত্তি থাকবে না। তুমি স্মার্ট, বুদ্ধিমান, সুন্দর, উন্নত বিশ্বের বিনোদন কেন্দ্রগুলো সম্পর্কে তোমার একটু ধারণা থাকা দরকার। এর আগে কখনো গেছো বাইরে? 

তুমি এখনো দেশের বাইরে কোথাও যাওয়ার সুযোগ পাও নাই। আক্ষরিক অর্থেই এমন একটা সুযোগের কথা শুনে তুমি রোমাঞ্চিত বোধ করতে থাকো। আবার সাথে সাথে নিজেকে তুমি প্রবোধ দাও এই বলে যে, একজন হাই প্রোফাইল জিগোলো হিসেবে এরকম প্রস্তাব আসাটা তোমার জন্য অভাবনীয় কিছু না। এরকম প্রস্তাব এর আগেও বহুবার তুমি পেয়েছো, তবে তা সমকামী পুরুষের কাছ থেকে। তুমি যখন একটা থ্রিস্টার হোটেলে রুম সার্ভিস বয়ের কাজ করতে তখন অনেক বিদেশি বোর্ডার তোমাকে এরকম অফার দিয়েছে। একজন তো তোমাকে রেপ্লিকা লিঙ্গও স্যুটকেস থেকে বের করে দেখিয়েছিল। তুমি চাইলে তাদের পার্টনার হয়ে দেশ-বিদেশে ঘুরে বেড়াতে পারতে।  কিন্তু ওই গোটা প্রকৃয়াটা তোমার কাছে একটা গা ঘিনঘিনে ব্যাপার মনে হয়। তাছাড়া পুরুষের তুলনায় নারী সবদিক থেকে নিরাপদ। নারী তোমাকে অত্যাচার করবে না, হত্যা বা বিক্রি করে দেবে না। তুমি দেখতে সুন্দর। নিয়মিত জিমে যাওয়ার জন্য তোমান দেহ সুঠাম। কিছু প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষাও আছে, আছে উন্নত কেতা। তুমি সাঁতার জানো, রান্না জানো, কিন্তু মানুষ হিসেবে তুমি ততটা উন্নত না যতটা থাকলে একজন সফল বুদ্ধিমান পুরুষকে মোকাবেলা করতে পার। তুমি রমনীমোহন। নারী প্রথম দর্শনেই সম্মোহিত হয় তোমার প্রতি। তাই তুমি বেছে নিতে সক্ষম হয়েছো এমন এক আদীমতম পেশার নব সংস্করণকে। তোমার কাজ নারীকে আনন্দ দেয়া। দ্যা আল্টিমেট প্লেজার। তাদের সন্তানের বেনামী পিতা হওয়া না। তবে তাও তুমি একবার হয়েছিলে। এক পিতা হতে ব্যর্থ সেনা কর্মকর্তার স্ত্রী তোমাকে এমন একটা প্রস্তাব দিয়েছিল। সে তোমার কাছ থেকে একটা সন্তান চায়। তার সাথে তোমার প্রথম দেখা হয়েছিল একটা পার্টিতে। হাই প্রোফাইল সোসাইটি গার্লদের মতো তোমাদেরও মাঝে মাঝে পার্টি অ্যাটেন্ড করতে হয়। তোমাকে সে চিনে নিয়েছিল কিভাবে সে বিস্ময় কখনো কাটে নাই তোমার! সেও তোমাকে বলে নাই কখনো। তবে দুচারদিনের মেলামেশায় তোমার তার প্রতি এক ধরণের করুণা জন্মেছিল। মেয়েটা তোমাকে এনিমেটেড টুলস হিসেবে দেখে নাই কখনো। মেয়েটার দুচোখ জুড়ে ছিল বিষাদের ছায়া, তার আত্মা জুড়ে ইনসিকিউরিটি। তার দুর্বল স্পার্মের স্বমী কখনো মেনে নিতেই চায় নাই যে সে পিতা হতে অক্ষম। তাই সে দ্বিতীয় বিয়ের কথা ভাবে। প্রয়োজনে সে স্বেচ্ছায় অবসর নেবে। তবু সে এই অপবাদ মেনে নেবে না। তার দ্বিতীয় স্ত্রী হবে আরো উর্বরা, যে ভরিয়ে দেবে তার সব ব্যর্থতা। মেয়েটার মিলিটারি স্বামী নাকি শুনেছে সুন্দরী না, সাধারণ চেহারার নারী বিছানায় বেশি কাম-কলা পটিয়সী। তাদের ফার্টিলিটিও বেশি। তারা যেমন ভোগ করতে পারে, তেমন পারে ভাগ করতে। সুন্দরী মেয়েকে বিয়ে করাই তার জীবনের কাল হয়ে দাঁড়িয়েছে। মেয়েটা তোমার সাথে একবারও শারিরীক মিলনে না গিয়ে তোমাকে এ কথা শুনিয়ে গেছে। তোমার ভেতরে তার জন্য  জন্ম নিয়েছে একে একে করুণা তারপর প্রেম ও শেষে শ্রদ্ধাবোধ। তুমি তার ফেসবুক ওয়ালে গিয়ে বুঝতে পেরেছিলে কতটা ইনসিকিওর সে। তার সবগুলো প্রোফাইল পিকচার যুগল। সে এবং তার হ্যান্ডসাম দেখতে স্বামী। কত আন্তরিক প্রেমময় পোজ। অথচ সবটাই মেকি। মেয়েটার চুড়ান্ত ইনসিকিওরিটির বহিঃপ্রকাশ। এটা সত্য এ ধরণের ইনসিকিওর দম্পতিরা সব সময় যুগল ছবি আপলোড করে। কোথাও নিজের একক ছবি থাকে না। তারও নিজস্বতা বলতে কিছু ছিল না। সে শুধুই একটা টুলস তোমার মতোই। নিতান্তই মধ্যবিত্ত পরিবারের মেয়ে। লেখাপড়ায়ও খুব তুখোড় না। সৌন্দর্য্যটাই তার একমাত্র পুঁজি। বাবার মৃত্যুর পর সে আরো অসহায় হয়ে পড়েছিল। 

হ্যাঁ, তুমি শুধুই তার অসহায়ত্ব দেখতে পেয়েছিলে। সামরিক কর্মকর্তার স্ত্রী হিসেবে সে যে ধরণের সামাজিক মর্যাদা ভোগ করত সেটাকে তুমি মুখ্য করে দেখতে চাও নাই। তাই তুমি মেয়েটাকে সাহায্য করেছিলে। যদিও সে ডাক্তারের পরামর্শে স্বামীর সঙ্গে রাতের পর রাত সঙ্গমে সঙ্গমে ক্লান্ত হয়ে পড়েছিল, তারপরও তুমি তার কাছ থেকে কোনো অনাকাঙ্খিত রোগের ঝুকি থেকে নিজেকে নিরাপদ ভেবেছিলে। তুমি তাকে দিয়েছিলে মাতৃত্বের স্বাদ। 

কিন্তু শিলা কোনো সাধারণ নারী নয়। হতে পারে তোমার পেশা আদীমতম এবং তুচ্ছ। কিন্তু তোমার জীবনের গুরুত্ব তোমার কাছে আছে। তোমার সুন্দর চেহারা এবং তোমার মায়ের উৎসাহ তোমাকে সিনেমার নায়ক হতে আগ্রহী করে তুলেছিল। কিন্তু অভিনেতা হওয়ার যোগ্যতা তোমার ছিল না। প্রথমত তোমার মেন্টর বলতে কেউ নাই, দ্বিতীয়ত তোমার অভিনয় দক্ষতা বলেও কিছু নাই। তারপরও এদেশে সব কিছু সম্ভব! তাই তুমি হাল ছাড় নাই। তুমি পাড়ার একটা জিমে ফুটফরমায়েশ খাটার পরিবর্তে ব্যায়াম করতে। তোমার মনে ক্ষীণ আশা, একদিন ওই রূপালী পর্দায় তুিম ঝলসে উঠবেই! কিন্তু নিয়তি তোমার সব আশায় যেন জল ঢেলে দিলো।  তোমার মা প্রাণঘাতী রোগে আক্রান্ত হলেন। পৃথিবীতে জন্মের পর থেকে এখন অবধি মা ছাড়া তোমার আপন বলতে কেউ ছিল না। অন্তত তুমি দেখো নাই। তুমি শুধু দেখেছো তোমাকে বাঁচিয়ে রাখতে, বড় করতে তার কি প্রণান্তকর প্রচেষ্টা। সেই মাকে বাঁচিয়ে রাখার জন্য অন্তত একটু যন্ত্রণামুক্ত মৃত্যু নিশ্চিত করতে তুমি মরিয়া হয়ে উঠেছিলে। তাই তোমার পাড়ার জিমের ইনস্ট্রাকটর যখন তোমাকে এই প্রস্তাবটা দেয়, কোনো কিছু না ভেবেই তুমি এটা লুফে নিয়েছিলে। 

প্রথম যেদিন তুমি স্থুলাকার বিশালবপু মধ্যবয়সী নারীর দ্বারা নিজের কৌমার্য হারালে- ঢুকরে কেঁদেছিলে। এই নিষ্ঠুর পৃথিবীতে তোমার পেছনে ফেরার আর কোনো পথ ছিল না। 

শিলা বুদ্ধিমতি তাই সে তোমাকে কনভিনস করার জন্য অনেকটা অনুরোধের ভঙ্গিতে বলল, আমি চাইলে যে কারো সাথে ব্যাপারটা ঘটতে পারে। তুমি বুঝতেই পারছ, কিন্তু আমি ভেবে দেখলাম তুলনামূলকভাবে তুমি নিরাপদ। কারণ তুমি গরীব এবং এটা তোমার পেশা।   

শিলা না জেনেই আবার তোমার সেই অহমের জায়গাটাতে ঠেস দিল। তোমার ক্লায়েন্টরা সবাই সমাজের উচু তলার স্বাধীনচেতা নারী। তাদের কাছে তুমি একটা টুলস বই কিছু নও, এটা তুমি বোঝো। আর সেটাই শিলা তোমাকে মুখের ওপর জানিয়ে দিলো। 

তবে না বলার অধিকারও তো তোমার আছে। তাই যখন তুমি প্রিকোওশন নিতে প্রস্তুত হচ্ছিলে তখন শিলা প্রত্যাখ্যানের অপমান সইতে না পেরে হিংস্র হয়ে ওঠে। তোমার কোমরে পদাঘাত করে বলে,’ তোমার এ্যাত্তো সাহস, আমার কথা শুনছো না! তুমি একটা পুরুষ বেশ্যা, একটা পতিত বই তো কিছু না।’ 

তুমি এজন্য প্রস্তুত ছিলে। এধরণের মানসিক প্রস্তুতিও তোমার এ পেশায় থাকতে হয়। তাই তুমি একটুও বিচলিত না হয়ে বরং অট্ট হাসিতে ফেটে পড়লে। তোমার ঠা-ঠা হাসিতে প্রমোদ কক্ষের পাষান দেয়াল গমগম করে উঠল। তুমি একটু ধাতস্ত হয়ে বললে, ‘বাঙালি এনজয়মেন্ট ব্যাপারটাই এখনো আয়ত্ব করতে শিখলো না ম্যাম! এরা জিগোলোর কাছে আসে বাচ্চা নিতে। অথচ আমাদের কষ্ট করে কতো ছলাকলা শিখতে হয়েছে ক্লায়েন্টকে বিনোদিত করতে। জনেন ম্যাডাম, আমার বাবাও এই একই ভুল করেছিল। আমার মা যখন প্রেগন্যান্ট হয়ে যান তিনি ভাবলেন, সন্তানটা বুঝি তার। মাকে পতিতালয় থেকে তুলে নিয়ে পালালেন। পরিণতি হলো কি? অকাল মৃত্যু। সবাই ভাবল দুর্ঘটনায় মৃত্যু। আসলে তাকে মেরে ফেলা হয়েছিল। মা তখন এনজিওগুলোর নাগালের বাইরে। আমি এতিম হওয়া সত্বেও মায়ের পরিচয়ের কারণে এতিমখানা বা কওমি মাদ্রাসায় আমার জায়গা হয় নাই। আমার রক্তে শুদ্ধতা নাই। আমি আজন্ম অশুদ্ধ পাপী। আমার তথাকথিত ধর্ম-কর্ম নাই। আপনি আমার কাছে সন্তান চাইছেন, সন্তান? আপনি কি করে ভাবলেন, রক্তে অ্যাকটিভলি বা প্যাসিভলি আমি কোনো রোগ বহন করছি না! অন্তত আমার মায়ের রোগটা না!’

তুমি যখন কথাগুলো বলছিলে, তোমার মুখে ছিল আজন্ম বঞ্চিতের হাসি অন্যদিকে শিলার মুখটা তখন ক্রমশ ফ্যাকাশে আর বিবর্ণ হয়ে যাচ্ছিল। আর সেই বিবর্ণতার ভেতরে তুমি তোমার জন্য খুজে পাচ্ছিলে গুচ্ছ গুচ্ছ সুখ। তুমি এই প্রথমবার অনুভব করলে পাপী হওয়ার সুখ।

 

  • প্রকাশিত, সিল্করুট, ২০১৭।

 

আরও পড়ুন

সর্বাধিক পঠিত