স্কুলের সামনে গ্যাঞ্জাম লাগে কয়দিন পরপর। এলাকার পোলাপান ক্ষমতা ফলায় স্কুলে। তাই নিয়ে মারামারি হয় কয়দিন পরপর। ছোটখাটো মারামারি। চড়থাপ্পড় এর উপরে যায় না। কিন্তু আজকে জামেলা হইছে বড়সড়। একটি ছেলেকে থাপ্পড় দিয়েছে এলাকার এক ছেলে। বড় কোন ঘটনা না। কিন্তু থাপ্পর খেয়ে ছেলেটি রাস্তায় পরে যায়। পাকা রাস্তা। এলাকার উন্নয়ন করেছে চেয়ারম্যান। সেই উন্নয়নের রাস্তায় পড়ে ছেলেটির মাথা দুই ভাগ হয়ে যায়। রক্তারক্তি কান্ড। ছাত্র পোলাপান চিল্লাচিল্লি শুরু করে।
পরিস্থিতি সামাল দিতে হবে। ধরাধরি করে হাসপাতালে নেওয়া হয় তাকে। এলাকার ছেলে এলাকায় সড়ে যায়। সময় যায়। সব নিরব হয়ে যায়। ভুতুরে পরিস্থিতি।
চেয়ারম্যান এর সাথে হেডমাস্টার মিটিং এ বসেন, দেখেন ছেলেপুলে এইখানে পড়ালেখা করবার আসে। অনেক দূর দূরান্ত থেকে। তাদের লগে যদি এলাকার পোলাপান এমন করে তাইলে কেমনে হবে!
দুই দুই বারের নির্বাচিত চেয়ারম্যান। পরিস্থিতি সামাল দেয়ার চেষ্টা চালায়, দেখেন এলাকার পোলাপানরে তো আমি পাহারা দিয়া রাখতে পারি না।
কিন্তু এভাবে চললেতো স্কুল বন্ধ হইয়া যাইবো। একটামাত্র স্কুল। তাও যদি..
দেখেন বিষয়টা আমি বুঝতে পারছি। সন্ধ্যায় সালিশ ডাকছি।
দেখেন কিছু একটা করেন।
আচ্ছা।
মিটিং শেষ হয়। চা বিস্কুট খাওয়া হয়। গল্পগুজব চলে। কিন্তু ছেলেটা মারা যায়। দুনিয়া অন্ধকার। গভীর অন্ধকার।
সালিশ বসে সন্ধ্যায়। আলোচনা চলতে থাকে। কথার প্যাঁচে মূল কাহিনী লজ্জায় সরে যায়। মামলা-টামলার জামেলায় ঝামেলাই কেউ যেতে চায় না। চেয়ারম্যান পরিস্থিতি সামাল দেয়। জরিমানা হয় বিশ হাজার। ছেলের বাপ গরীব। ক্ষমতা নাই। টাকা নিয়ে নিরবে সরে যায়।
ছেলে আমার চইলা গেলো। এই ট্যাহা দিয়া এহন কি করিবো! বাপ কাঁদে। ডোবায় টাকা ছুড়ে ফেলে। এই ট্যাহা দিয়া এহন কি করিবো!