ডিনার উইথ ডেভেলপমেন্ট

মা আজ জিডিপি’র গ্রোথ রেটের সাথে মাথাপিছু আয়ের ভুনা করেছেন। ফ্রিজে একটু স্যাটেলাইট ভাজি আর সাবমেরিন ভর্তা ছিলো। মা উন্নয়নের অপ্রতিরোধ্য আঁচে ওসব গরম করেছেন। আহ, সে কি ঘ্রাণ!

ভুনা, ভাজি আর ভর্তা দিয়ে ভাত খেতে খেতে মনটা চিন্তায় আচ্ছন্ন হলো। বাইরে বৃষ্টি নেমেছে, তুমুল বৃষ্টি। ভাবনা হচ্ছে পদ্মা সেতুর স্প্যানটা ঠিক সময়মত বসবে তো! প্রকৃতিও দেখি ষড়যন্ত্র শুরু করেছে।

টকশোর সস দিয়ে পত্রিকার কলামের সালাদ মাখাতে মাখাতে মা বললেন, ষড়যন্ত্র কে করছে তা স্পষ্টভাবে বুঝা যাচ্ছে না, তবে ষড়যন্ত্র যে হচ্ছে এটা ঠিক বুঝা যাচ্ছে। মা’র কথায় সম্মতি জানিয়ে চাচ্চু বললেন, ভাবী, মিক্সড সালাদে ক’চামচ বিটিভি প্রতিবেদন মাখাতে ভুলো না, খুব টেশ হয়।

সালাদে বিটিভির প্রতিবেদন মাখাতে মাখাতে মা বলেন, বৃষ্টি হলেই ঢাকা শহর লেক সিটি হয়ে যায়, ষড়যন্ত্রকারীরা বলে জলাবদ্ধতা। কারো জ্বর হলেই বলে ডেঙ্গু। ভাবা যায়!

বাবা শোনালেন আরও ভয়ের কথা, দেশে না কি অনেক গরীব অনুপ্রবেশ করেছে। রোহিঙ্গাদের চেনা যায়, গরীবদের আলাদা করে চেনা যায় না। এরা এদেশের মানুষের মত, এদের বাপ-দাদারা না কি এদেশেই ছিলো। এদের আলাদা করা খুব কঠিন। এরা ডায়েট করে, অথচ বদনাম রটায় যে খেতে পায় না।

চাচ্চু খুব আয়েশ করে একটুকরো উন্নয়ন চিবুতে চিবুতে সিদ্ধান্ত দিলেন, অপ্রতিরোধ্য অগ্রযাত্রায় আমরা ওদের নেবো না। ওরা আমেরিকাগামী ল্যাপটপ রপ্তানীর জাহাজে হাহাকার ভরে দেবে। ওরা আমাদের টেমসের পানি দূষিত করে দেবে। ওরা আমাদের লাসভেগাস গড়তে দেবে না। ওরা আমাদের সিঙ্গাপুরের সৌন্দর্যকে ধুলোয় মিশিয়ে দিবে।

‘দেশে কোনো গরীব নেই’ মার্কা ঘড়ির নিচে দু’টো টিকটিকি বিভ্রান্ত, তারা রোহিঙ্গা না গরীব বুঝতে পারে না, তাদের ঠাণ্ডা রক্ত আরও ঠাণ্ডা হয়ে আসে।

২২জুলাই’২০১৯

আরও পড়ুন

সর্বাধিক পঠিত