সপ্তাহখানেক আগেও এই বাড়িটা সাধারণ বাড়ি ছিল। যার ভেতর দিয়ে সরাসরি সিএন্ডবি মহাসড়কে গাড়িঘোড়ার চলাচল দেখা যেত। এখন বাড়িটার পেছন দিয়ে উঁচা বেড়া দেওয়া হয়েছে। ফলে ভেতর বাড়ির দৃশ্য আর দেখা যায় না। বাড়ির সামনে তর্জার বেড়া দিয়া আউডা (পর্দামূলক বেড়া) দেওয়া হয়েছে। এই বাড়ির মহিলারা বিশেষ করে ঘটনাটা ঘটার পর ইমাম সাহেব বলাতে সহজেই আর উঠানে এবং বাড়ির আশপাশ এদিক-ওদিক মাথা থেকে কাপড় ফেলে ঘুরাঘুরি করতে পারে না। কয়দিন আগেও মন-ইচ্ছা-মত বাড়ির নারী পুরুষ সবাই স্বাধীনমত ঘোরাফেরা করতে পারত। নিজের বাড়িতে নিজেদের মত থাকতে পারত। কিন্তু এই ঘটনাটার পর সব আচমকা উল্টে গেল।
এ বাড়িরই ছোট ছেলে রিপন। ইদানিং স্কুলে গেলে সবার কাছ থেকে সে এক অদ্ভুত মিশ্র ব্যবহার পাচ্ছে। ক্লাসের এক অংশের কাছে সে এখন এক অলি-আউলিয়া বাড়ির ছেলে। সবাই ভাবছে এই বাড়িতে নিশ্চয়ই কোন আউলিয়া-পীরের আনাগোনা হচ্ছে বা হয়ে গেছে, নাহলে এমন ঘটনা ঘটার কারণ নাই। এ নিশ্চয়ই কোন কুদরতি নিশানা। সহপাঠিদের আরেক অংশ এই ধারণার একদম বিপরীত। অপয়া ও অভিশপ্ত এক বাড়ির ছেলে হিসেবে প্রতিদিনই টিটকারি- মশকারীর শিকার হচ্ছে সে।
“কিরে ব্যাডা এইডা কি হুনলাম, তোগো মুর্গিডা নাহি হুদা মাডিত রাইতে রাইতে মুর্গা অয়া গেল?”
সহপাঠিদের এমন প্রশ্ন শুনতে শুনতে ইদানিং সে হয়রান।
যেদিন ঘটনাটা ঘটে সেদিন সকালে মুরগী খোঁয়াড়ে ডিমের জন্য হাত ঢুকায় জয়েশা বিবি। এমন করে ডিমের জন্য হাত ঢুকালেও এ পর্যন্ত কোনদিন মুরগিটা ঠোকর দেয় নি তাকে। কিন্তু সেদিন পরপর বেশ কয়েকটা ঠোকর দিল বুড়ো আঙ্গুলের ওপরে। সাথে সাথে ‘কক্কর-কক’ বলে বিকট জোরে ডাক দিতে লাগল মুরগীটা। জয়েশা প্রথমে বিষয়টা বুঝতেই বেশ সময় নিল। আশেপাশে তো কোন মোরগ এখনো ডাক দেয় নি। তাহলে মুরগীর খোঁয়াড়ের ভেতর থেকে মোরগের ডাক কিভাবে আসে। এবার ভাল করে মাথা নুয়ে সে যাচাই করল খোঁয়াড়ের মধ্যে ডাঁহি মোরগটা ঢুকল কিনা। এত সকাল সকাল মোরগটার মিলনেচ্ছা ওঠার তো কথা না, তাছাড়া মুরগীটার এই ছোট খোঁয়ারটাতে মোরগটা ঢুকবেই বা কিভাবে?
ডিমের কথা জয়েশার আপাতত মাথায় নাই। সে টেনেটুনে মুরগীটারে বের করার চেষ্টা করল খোপ থেকে। কেন এই মুরগীটা মোরগের মত ডাকছে? মোরগের ডাক লম্বা ও বিকট। ঠিকঠিক মোরগের ডাক। খোপ থেকে সাবধানে মোরগটা বের করার সময় হাত ফসকে প্রচন্ড প্রতাপের সাথে সে উড়ে গিয়ে সজনে গাছের নিচু ডালটায়, তারপর আরেকটা বড় উড়াল দিয়ে জিগার গাছের একদম মগডালে গিয়ে বসল! তারপর মোরগের মত হুবহু ডাক দিতে লাগল লাগাতার।
হায়! হায়!
ঘটনাতো সুবিধার মনে হচ্ছে না। গত কয়েকবছর ধরে নিয়মিত ডিম ও বাচ্চা দিয়ে আসছে বেচারি। কোনদিন কোন ব্যত্যয় ঘটে নি। গর্ভের উর্বরতাও বেশ ভাল ওর। বাচ্চা দিলে কমসে কম ২৫-৩০টা দেয়।
কিন্তু আজ ওর হ’ল কি! জিগাড়ের মগডালে যখন মুরগীটা মোরগের মত বাগ দিচ্ছিল তখন হালকা রোদ উঠছে উঠানে। শীতকালের মিষ্টি ভোরের রোদ। এই রোদটা ‘উদ্দীন’বাড়ির উঁচু জিগাড় ও কড়ই গাছটাতে সবার আগে পড়ে। শিশিরস্নাত গাছের পাতাগুলোতে মোলায়েম রোদটা পড়লে একটা ঝগড়া বাঁধে পাতায় পাতায়। ঝগড়া শেষে রোদেরই জয় হয়। শিশির হেরে গিয়ে শুকিয়ে যায়।
এমন একটা মোলায়েম রোদের ওমের পরিবেশে মুরগীটা মগডালে উঠে এই কান্ড করছে।
মাখন উদ্দীন জয়েশার স্বামী। “অ আল্লাগো, কিতা অইল গো, মুর্গিডা ইমুন মুর্গার মত বাগ দিতাছে দু?”— বলে জয়েশা চিৎকার শুরু করল।
মাখন মিয়া বউয়ের চিৎকারে কাঁথা ফেলে দিয়ে বাইরে বেরিয়ে এল। অসুস্থ বাচ্চা ছেলেকে গভীর রাত পর্যন্ত ঘুম পাড়িয়ে ছেলের বউ শাহিনা ঘুমে বিভোর। তা-ও সে শাশুড়ির চিৎকারে ঘুম থেকে উঠে বেরিয়ে আসল।
তিনজনই এখন অবাক দৃষ্টিতে জিগাড় গাছের সবচে উঁচু ডালটাতে তাকিয়ে আছে। এই মুরগীটার বয়স বছর পাঁচেকেরও বেশি। ওর দেয়া ডিম এখন পর্যন্ত শতশত খাওয়া হয়েছে। ভাজি, ভুনা ও চচ্চড়ি—কোন পদই বাদ নেই। রিপনতো ওর ঐ ডিম ছাড়া সকালে নাশতা না খেয়ে স্কুলেই যায় না। গত কয়েকবছরে ওর দেয়া বাচ্চা বড় হয়ে কত আত্মীয়-মেহমানদের জিহ্বা শান্ত করেছে তার ইয়ত্তা নেই।
অথচ সেই ফলবান মুরগীটা আজ রাতা মোরগের মত বাগ দিচ্ছে! আশ্চর্যের বিষয়। এর ব্যাখ্যা কি?
“এইডা কি আমগো মুরগীডা-ই, ভাল কইরা দ্যাখতো জয়শা!— চোখ মুছতে মুছতে জিজ্ঞেস করে মাখন উদ্দিন।
“হ, আফনে কিতা চোহের মাথা হাইছুইন, দেহইন্না মুরগীডা? ঐ যে জিগাড়ের ডালডাতে বওয়া?”
“অ হদা, হদা রে, এই মুর্গীডা অত উঁচাত উঠল ক্যামনে। ইডার কিতা অইছে? আফনে আম্মা, হেয়াল করতাইন্না, হুয়ার থেইক্কা ডিম লইছুইন, তে মুরগীডা আফনের হাতেত্তে ছুটল ক্যামনে?”
“অ বেডি, অত কথা জিঙ্গাইস না, পাও ধইরা টান দিছি, আর এম্নই একটা লাড়াদা উড়াল দিছে। আমি কি জানি, ইডাতো আচানক ঘটনা—উত্তর করল শাশুড়ি জয়েশা।
কিছুটা আলগা ভিটায় এই ‘উদ্দিন’ বাড়ি। দুই-তিন ক্ষেত দূরে প্রতিবেশিদের অন্যসব বাড়ি। যাঁরা যাঁরা সকালে নাশতা বানাইতে, কিংবা বিহানের হাট-বাজারে যাইতে উঠে, তাঁরা এই শোরগোল শুনে মাখন উদ্দিনের উঠানে আসা শুরু করছে। বাড়িতে ঢুকতেই মোরগের লাগাতার ডাক তাদের কানে ভেসে আসছে।
“কিঅও, মাহন ভাই, ইডা কিতা, ভুরবেলা চিল্লাচিল্লি মাখ্খামাখ্খি লাগাইয়া দিছো দু?”—বলল প্রতিবেশি জালাল মিয়া।
“আরে কইয়ো না বাই, মুর্গীডা হুয়ারেত্তে বাইরইয়া গিয়াই উইড়া গিয়া জিগাড়ের ডালডাতে বইছে। আর হুমানে গলা উচাঁয়া মুর্গার মত বাগ দিতাছে। এই মুর্গীর মাথা খারাপ হইয়া গেছে গা, মনে হ”
এভাবে ঐ দিন সকালবেলা আরো অনেকেই আসে মাখন উদ্দিনের বাড়িতে। রোদ বেড়ে গিয়ে সেদিনের আশ্চর্য সকালটা ধীরে ধীরে সেয়ানা হতে থাকে। পুত্রবধু শাহিনা এতকিছুর ভেতরেও নতুন শিম-টমেটো আর নতুন আলু দিয়া শিং মাছ রাঁধতে বসে যায়। তাঁর ছেলে রিপন যথারীতি স্কুলেও চলে যায়।
জোহরের নামাজের আগে আগে খবর পেয়ে উত্তর পাড়া মসজিদের ইমাম সাহেব এলেন মাখনের বাড়িতে। এসেই মাখনরে ডাক দিল—
“অ মিয়া মাহন, কিতা হুনলাম বলে, সহালে মক্তবেই এই খবরটা পাইছি পুলাপানেত্তে। মুর্গাডা থুক্কু মুর্গীডা অহন কই?”
“আছে, অহন গাছেত্তে নাইম্মা আড়াক্ষেতে নামছে। দেহা যায় না।”— ইমামের প্রশ্নের উত্তর দিল মাখনের বউ জয়েশা।
ইমাম সাহেব চুপ থাকল কিছুক্ষণ। তারপর বলল— “এ-এ-এ-এ, এই মুর্গীডার দেয়া কত ছাও বড় হইছে, জ’ব দিয়া দাওয়াত দিছ, স্বাদ কইরা হাইছি। মুর্গীডার ইমুন কপাল অইবো যদি জানতাম। এ-এ-এ-এ-এ। আইচ্ছা, নও, কি আর করবা, আল্লার হেলা-লিলা বুঝা বড় দায়। হুনো, মুর্গীডারে ধইরা টাফা-ঝুড়ির ভিত্রে উডানে রাহ। আল্লার হেলা, সবাইরে দেখতে দেও। সবাই বুঝুক”
বলে ইমাম সাহেব চলে গেলেন।
এরপর বিকেলের দিকে বেতের এক ঝুড়িতে মুরগিটাকে বহু কসরত করে ধরে এনে ভরা হয়। বাঁশ-বেতের ফাঁকা ঝুড়ি। বাইরে থেকে খেয়াল করলে দেখা যায়। কক কক কক- করছেই সে। মোরগের মতো গলা উঁচু হয়ে গেছে। পাখনা বহির্মুখী হয়ে ফুলে আছে। কর্কশ আওয়াজে মাখনের বাড়ি ভরপুর।
বিকালে খবর পেয়ে লালসুতা লাঠিতে বাঁধা, লাল-বসন হেকমত-শাহ ফকির ঢুকল মাখনের বাড়িতে। এই গ্রামেই পাগলার বাড়ি হলেও সে আখাউড়া কেল্লা শাহ’র মাজারের খাস পাগল। গ্রামের সবাই তা-ই জানে। ছেলেপেলেরা পাগল ঠাওরালেও তাঁর আশেকান একদম নাই যে তা নয়।
মাখনের বাড়িতে ঢুকেই ‘হক্ক-মাওলা নেংটার খেলা’ বলে একটা আওয়াজ করে বলতে লাগল—
“ কি আচানক কারবার, জানে মুর্শিদের দরবার।
মুর্গী হইছে মুর্গা, তার খোঁজ নিতাছে সর্দার”
ছড়ার মত বলতে বলতে উঠানে মাখনের কাঁধে ঝাঁকি দিল পাগল হেকমত-শাহ! তাকাল উঠানের ঝুড়ির ভেতরের সদ্য রুপান্তরিত মোরগের দিকে।
মাখন উদ্দিন অবাক হয়ে গেল! আউলিয়ার সমান এই পাগলা পীর হেকমত শাহ্ও তাঁর বাড়িতে? এতো চরম সৌভাগ্য তাঁর!
“আফনেও হবর ফাইলাইছুন! এই মুর্গী আসলে কি ইঙ্গিত দিতাছে বাবা?”
“হক মাওলা, কেল্লার খেলা, এই মোরগ মওলার চাক্ষষ কেরামতি। এইডারে এইখানে রাহন যাইব না। খানকা-দরবারে নিতে অইব”—বলেই খাঁচাটার দিকে হাত দিল হেকমত।
জয়েশা কথাবার্তা শুনছিল। চিৎকার করে হেকমত-শাহকে থামিয়ে দিল। বলল—
“বাবা, খেমত দিন, হাত বাড়াইয়ুন না, এই মুর্গী পাঁচ বছর দইরা ফালতাছি, ইডার একটা গতি আমরাই করুম। হুদাহুদি মাজারে গেলে মুর্শিদ নারাজ অইত পারে, দিনদার আশেকানরা ইডার সালুন হাইয়া উল্ডা বিপদে পড়ব।” বলে ঝুড়িটা ঠেলতে ঠেলতে মোরগটাকে রান্নাঘরে নিয়ে গেল জয়েশা।
এতক্ষণে সারা ‘উদ্দিনবাড়ি’ ভরে গেছে মানুষে। বিশেষ করে ছোট ছেলেমেয়ের ভীড় বেশি। মূলত লাল-বসন, জটাধারী ফকির হেকমত-শাহ এই বাড়িতে ঢুকেছে বলেই এই ভীড়টা আরো বেড়ে গেছে।
পরিস্থিতি অনুমান করে হতাশ হয়ে গেল হেকমত-শাহ। ভেবেছিল প্রথম চেষ্টাতেই নাদুসনুদুস মুরগীটা নিয়ে চলে যাবে। পীর আউলিয়ারে আবার ভয় করে না কোন মানুষ!
মাখন উদ্দিন ও জয়েশার মধ্যে মোটামুটি একটা ঝগড়া হয়ে গেল এ নিয়ে। মাখন উদ্দিন বলল—
“ও গো বেডি দেলাও না এই আলেক্কি মুর্গীডা। বেডিত্তে এইডা বেডা অয়া গেছেগা। কোনহান্ তে কোন বিফদ গর্দীশ ডাইক্কা আনে, কওন যা!”
হেকমত-শাহ এবার আশা নিয়ে জয়েশার দিকে তাকাল। না, সে রাজি না। সে এটার শেষ দেখবে। স্বামীর উদ্দেশ্যে বলল—
“আমি নিশ্চিত, মুর্গীডার কোন বেশকম হইছে। রাত ফুহাইলে মনে অ’ আবার ঠিক অয়া যাইব।”
এভাবে নানান উৎসাহ-জটলার মধ্য দিয়ে ঘটনার প্রথম দিনটা পার হয়। শেষ রাত অবধি দুই-একজন তা-ও উঠানে রয়ে যায়।
এই বাড়িতে সহজে কারো পা পড়ে না। অথচ মুরগিটার এই ঘটনায় সবাই ঝুঁকে পড়ছে এই বাড়িতে। পরেরদিন ভিন গাঁওয়ের লোকজনও ভীড় করা শুরু করছে এই উদ্দীনের ভিটায়। অনেকেই আবার বলছে— মুরগীর বয়স বেশি হইলে মুরগী ওল্টাপাল্টা বাউ করে।
“ক্যামনে গো বেডিত্তে বেডা অইছে? মুর্গাডা দেহি”—এই একটা কথাই এখন সবার মুখে।
ইমাম সাহেব আবারো আসলেন পরের দিন। ডেকে বাড়ির সবাইকে বললেন—
“ফর্দা করো গো, ফর্দা কর তুমরা। শিন্নি দাওয়াত-টাওয়াদ দেও। বাড়ির সামনের এই আউডা-বেড়াডা দেও। তুমরার ঘরের সাথেঐ সিএম্বি সড়ক। ঘরের ভেতরে মাইয়াপোলারা সাবধানে থাহ। সব দেহা যা। নামাজ কালামও নাই মনে অ। মুর্গীত্তে মুর্গা এইডা একটা গর্দীশ-নিশানা। তোমরা পারলে আল্লাহ রসুলের নাম নিয়া ইডা অহনই জ’ব দেও। ফহির-ফারহারে পেট ভইরা হাওয়াও। ফারা কাইট্টা যাইবো।”
বলে ইমাম সাহেব মুরগিটাকে ঝুড়ির ভেতর একনজর দেখল। যাওয়ার সময় মাখন মিয়ারে মসজিদে নিয়া গেল।
তিনদিন পর।
বাজারে, ক্ষেতে-খামারে, স্কুলে— সবখানে উদ্দিন পরিবারের সবাই যখন এই মুরগী নিয়া এক প্রকার মিশ্র আচরণের শিকার তখন মাখন উদ্দিন ঘটনার তৃতীয় দিনের মাথায় ‘আল্লাহ আকবার’ বলে মুরগিটা জবাই দিল।
ঘটনা কিছুই না। মুরগিটা কুটা-বাছার সময় পুরো গ্রামের মানুষ ভেঙে পড়ল। সবাই হায় হায় ইশ ইশ করতে লাগল। মুরগিটার ব্যবচ্ছেদে এর ডিম্বথলি থেকে বেরিয়ে এল অনেকগুলো ছোটবড় হলুদ হলুদ ডিম, তার কয়েকটা বিকৃত। পায়ুপথের এখানে এসে জড়ো হয়েছে। একটা ডিম দেখা গেল পাড়ার আগেই পায়ুপথের এখানে এসে ভেঙে আছে। জবাই করার সময়ই পেছনের দিকে ওর পালক ভেজা পাওয়া গিয়েছিল।
এ দেখে জয়েশার রোদন চরমে উঠল। উদ্দীন বাড়িতে সমাগত মানুষগুলোও একই সাথে রোদন করতে লাগল। জয়েশা চিৎকার করে বলতে লাগল—
“কোন্ পাষাণ মকরম শ’তান এই কাম করল? এই অবলা পক্ষীডারে বেরহম টিপল, কষ্ট দিল! আহা! আল্লার আসমান কেন চুপ আইজকা? হে আল্লা, তুমি কিছু কইবা না? অ, হদা, তুমি কি বোবা?