ইতিহাসের এই এই দিনে

১২ আগস্ট ২০১৯

মাইক্রোসফটের প্রতিষ্ঠাতা বিল গেটস তাঁর নিজস্ব অর্থায়নে করা গবেষণা প্রতিষ্ঠান স্কোপেক্স-এর মাধ্যমে এক অভিনব প্রযুক্তি ব্যবহার করে বৈশ্বিক তাপমাত্রা কমিয়ে আনার প্রজেক্ট শুরু করার ঘোষণা দিয়েছেন। এই প্রযুক্তিটি এক ধরনের জিওইঞ্জিনিয়ারিং কৌশল- যা অনুসারে বেলুনে করে বিপুল পরিমান চকের গুঁড়া (ক্যালসিয়াম সালফেট) বায়ুমন্ডলের উপরিভাগে ছড়িয়ে দেয়া হবে। এই চকের গুঁড়ায় বাঁধা পেয়ে সুর্যের তাপ পৃথিবীর পৃষ্ঠদেশে অপেক্ষাকৃত কম প্রবেশ করবে এবং ফলশ্রুতিতে বৈশ্বিক তাপমাত্রা কমে আসবে। স্কোপেক্স ও সুইডিশ স্পেস কর্পোরেশনের চুক্তি অনুসারে এই প্রজেক্টের পাইলট সুইডেনের কিরুনা শহরে ২০২১ সালের জুন মাসে শুরু হবে বলে ঠিক করা হয়েছে।

১০ ফেব্রুয়ারি ২০২০

পৃথিবীর শীর্ষ ধনী জেফ বেজোস জলবায়ু পরিবর্তন ও বৈশ্বিক উষ্ণতা প্রতিরোধে ১০ বিলিয়ন ইউএস ডলার দান করার ঘোষণা দেন। এই অর্থ দিয়ে ‘বেজোস আর্থ ফান্ড’ নামে একটি প্রতিষ্ঠান হবে যা জলবায়ুর নেতিবাচক পরিবর্তন মোকাবেলা করতে কাজ করবে।

১৮ ডিসেম্বর ২০২০

করোনা প্যান্ডেমিক ও কিরুনার আদি অধিবাসী সামি জাতিগোষ্ঠির আপত্তি বিবেচনায় স্কোপেক্স চক ডাস্ট দিয়ে সুর্যের তাপ রোধ করার প্রজেক্ট ২০২২ সালের আগে শুরু হচ্ছে না বলে জানিয়েছে। আর, এই প্রজেক্টের পাইলট লোকেশনও কিরুনা থেকে সরিয়ে নেয়া হবে বলে নিশ্চিত করা হয়েছে।

২৫ জুন ২০২১

যুক্তরাষ্ট্রের ডিরেক্টর অফ ন্যাশনাল ইন্টেলিজেন্স-এর অফিস থেকে ইউএপি ( আনআইডেন্টিফায়েড এরিয়াল ফেনোমেনা; যা মূলত ইউএফও বা অজানা উড়ন্ত বস্তুর পোশাকি নাম) বিষয়ে একটি বিশদ রিপোর্ট প্রকাশিত হয়। উক্ত রিপোর্টে মানুষের তৈরি নয় এরকম উড়ন্ত যানের অস্তিত্ব শুধু স্বীকার-ই করা হয় নি, আমেরিকান নেভির ধারন করা ছবি ও অন্যান্য প্রমাণও উপস্থাপন করা হয়। বিশ্বের কোন দেশের সরকারের তরফ থেকে ইউএফও-র অস্তিত্ব স্বীকার করার ঘটনা এটিই প্রথম।

৯ আগস্ট ২০২১

ইন্টারগভার্নমেন্টাল প্যানেল অফ ক্লাইমেট চেঞ্জ (আইপিসিসি)-র ৬ষ্ঠ এসেসমেন্ট রিপোর্ট প্রকাশিত হয়েছে যেখানে বলা হচ্ছে, বৈশ্বিক তাপমাত্রা যে হারে বৃদ্ধি পাচ্ছে তা অব্যাহত থাকলে আগামী এক দশকের মধ্যে মধ্যপ্রাচ্যের সিংহভাগ এলাকা মানুষের বসবাসের অনুপযোগী হয়ে যাবে, প্রতি বছর দাবদাহে গড়ে ৪.৯ মিলিয়ন মানুষ মারা যাবে, অসংখ্য দ্বীপ পানিতে তলিয়ে যাবে এবং আগামী ৫০ বছরের মধ্যে মহাবিলুপ্তির কাল শুরু হওয়ার জোরদার সম্ভাবনা আছে, যার শিকার হবে মানবজাতিও।

২৪ ফেব্রুয়ারি ২০২২

রাশিয়ার সামরিক বাহিনী ইউক্রেনে আক্রমন শুরু করেছে। ফলশ্রুতিতে বিশ্বব্যাপী রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক অস্থিরতাসহ মিলিয়নের উপর সাধারণ জনতার উদ্বাস্তু ও হতাহত হবার সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে।

১১ নভেম্বর ২০২২

ইউক্রেন রাশিয়া বিরোধে ক্রমশ ইইউ, যুক্তরাষ্ট্র ও চীনসহ অন্যান্য দেশ জড়িয়ে পড়ছে। রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ শুরু হবার শংকা নাকচ করতে পারছেন না।

২৫ জানুয়ারি ২০২৩

রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন গত রাতে এক গুপ্ত হামলায় নিহত হয়েছেন। সের্গেই শইজু বর্তমানে রাশিয়ার প্রধান হিসেবে পুতিনের স্থলাভিষিক্ত হয়েছেন। তিনি পুতিনের হত্যার পেছনে যুক্তরাষ্ট্রকে সরাসরি দায়ী করে এর চরম প্রতিশোধ নেয়া হবে বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন। তার প্রেক্ষিতে পৃথিবীজুড়ে এখন পারমানবিক যুদ্ধ শুরু হওয়ার শংকা।

২৯ জানুয়ারি ২০২৩

অবশ্যম্ভাবি পারমানবিক বোমার তান্ডব থেকে পৃথিবীকে রক্ষা করলো অন্য কোন গ্রহ থেকে আসা একটি ইউএপি। ভিনগ্রহের এই যান রাশিয়া ও যুক্তরাষ্ট্র উভয় দেশের উপর দিয়ে সম্প্রতি অনেকবার যাওয়া আসা করেছে এবং উভয় দেশের সকল নিউক্লিয়ার ওয়ারহেড কোন এক অজ্ঞাত কৌশলে বিকল করে দিয়েছে। নানা সূত্রে জানা যাচ্ছে যে, রাশিয়া যুক্তরাষ্ট্র ছাড়া আর যে যে দেশের কাছে যত পারমানবিক অস্ত্র ছিল, তার সবগুলিই নাকি বিকল হয়ে গেছে।

১৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৩

যুদ্ধের আশংকা দূর হওয়া এক দিকে পৃথিবীর জন্য স্বস্তির খবর হলেও, মানুষের থেকে উন্নততর সভ্যতার অধিকারী ভিনগ্রহবাসী ও তাদের যানের অস্তিত্বের প্রত্যক্ষ প্রমাণ পেয়ে সারা পৃথিবীর শহরে শহরে অস্থিরতা, লুটপাট, ভাংচুর ইত্যাদি শুরু হয়েছে। এলিয়েনদের শীপ থেকে কোন ভিনগ্রহের প্রাণী বাইরে বের হয়ে মানুষের সামনে এসেছে এরকম প্রমাণ পাওয়া যায় নি। তথাপি তাদেরকে ঈশ্বর হিসেবে দাবি করে একটি নতুন ধর্ম গজিয়ে উঠেছে এবং এই ধর্মের অনুসারি সংখ্যা দ্রুত বাড়ছে।

** যে ঘটনা কোথাও লিপিবদ্ধ হয় নি- ১**

বিল গেটস রুটিনমাফিক ৯টায় বিছানায় গিয়ে ১ ঘন্টা বই পড়ে ঠিক ১০টা বাজতেই ঘুমিয়ে পড়েছিলেন। জেগে উঠে তিনি নিজেকে আবিষ্কার করলেন এক বিচিত্র বিশালায়তন সাদা কক্ষে, অত্যন্ত আরামপ্রদ এক আসনে আধশোয়া অবস্থায়। চারপাশে চোখ ঘুরাতেই পরিচিত মুখ দেখতে পেলেন- এলন মাস্ক, জেফ বেজোস, মার্ক জাকারবার্গ, ম্যাট মুলেনওয়াগ, জ্যাক মা, জ্যাক ডরসি। আর ঘরের এক প্রান্তে পাশাপাশি তিনজন বসা- যাদের মানুষের মতো অবয়ব হলেও তারা যে মানুষ না সেটা স্পষ্ট।

সবাই জেগে উঠেছে দেখে তিনজনের মাঝের জন পরিষ্কার ইংলিশে বললেন- আপনাদের এভাবে একরকম কিডন্যাপ করে আনার জন্য আমরা ক্ষমাপ্রার্থি। কিন্তু এছাড়া আমাদের আর কোন উপায় ছিল না। আমরা পৃথিবীর কেউ নই তা তো বুঝতেই পারছেন। নিজেদের আমরা ত্রাইসায়া বলে থাকি। মহাকাশ জুড়ে ১২৭টি গ্রহ-উপগ্রহ-কৃত্রিম গ্রহাণুতে আমাদের বসতি আছে। বহু আগেই আমাদের প্রযুক্তি আলোর থেকে বেশি গতিতে চলাচলের সক্ষমতা অর্জন করেছে। অগ্রসর মহাজাগতিক সভ্যতা হিসেবে আমরা মহাবিশ্বের নতুন ও তুলনামূলক অনগ্রসর সভ্যতাগুলির প্রতি দায়িত্ববোধ করি। আর সে থেকেই পৃথিবী ও পৃথিবীর মতো আরো অনেকগুলি গ্রহে সভ্যতার বিকাশমান অবস্থা আমরা আপনাদের সময়ের হিসেবে হাজার হাজার বছর ধরে নিরবে পর্যবেক্ষন করে আসছি। তবে আমাদের নীতিমালা অনুসারে সকল সভ্যতাকে নিজের মতো বিকশিত হতে দেই আমরা, নিজেদের যথাসম্ভব আড়ালে রেখে মনিটর করে যাই; উদ্দেশ্য- কোন সভ্যতা যদি আত্মবিধংসি বিপর্যয় ডেকে আনে তাহলে সেই বিপর্যয় ঠেকানো, সম্ভব হলে আড়াল থেকেই আর একেবারে উপায়ান্তর না থাকলে সামনে এসে… যেটা কিছুদিন আগে আপনাদের গ্রহে আমাদের করতে হয়েছে পারমানবিক যুদ্ধ ঠেকাতে।

এবার আসল কথায় আসি, কেন আপনাদেরকে এখানে নিয়ে আসা হয়েছে। কথাটি হচ্ছে, পারমানবিক যুদ্ধের আশংকা হয় তো নেই, কিন্তু মানব সভ্যতা এখনো ভয়াবহ ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে। পৃথিবীর তাপমাত্রা যেভাবে বাড়ছে তাতে আগামী ৫০ বছরের মধ্যে মানবজাতির ধংস অনিবার্য। আমাদের হিসাব অনুসারে, ইলন মাস্ক এর মঙ্গলে অভিবাসন প্রকল্প সফল হওয়ার সম্ভাবনা প্রায় নেই। এই বিপর্যয় আমাদের পক্ষে সরাসরি ঠেকানো সম্ভব না। কিন্তু বিল গেটস, আপনি যে চকের গুঁড়া দিয়ে সুর্যের তাপ কমানোর প্রকল্প শুরু করেছিলেন- বৈশ্বিক তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রনে আনার জন্য যত সম্ভাব্য উপায় আছে তাঁর মাঝে আপনার প্রকল্পটিই সবচাইতে উপযুক্ত। আপনারা এখানে যারা আছেন তাদের অর্থ আছে, সামর্থ্য আছে, ইচ্ছাও আছে। আর আমরা আমাদের উন্নত প্রযুক্তি শেয়ার করে আপনাদের যে কাজ করতে ১ বছর লাগতো সেটি ১ সপ্তাহে করার মতো সক্ষমতা তৈরি করে দিচ্ছি। যদি পৃথিবীকে বাঁচাতে চান, তাহলে এই মুহুর্ত থেকেই স্কোপেক্স এর প্রজেক্ট আবার শুরু করুন- সবাই যুক্ত হয়ে।

আমরা টেরেইন এনালাইসিস করে দেখেছি এই প্রকল্পের পাইলট করার জন্য ও সেন্টার হিসেবে হাওয়াই এর নেহাউ দ্বীপ আদর্শ। আপনারা প্রস্তুতি শুরু করুন, আমাদের প্রযুক্তিগত সহায়তা যথাসময়ে পেয়ে যাবেন। তবে আমরা যে এই কাজে সহায়তা করছি তা গোপন রাখতে হবে- দেখছেনই তো পৃথিবীতে কী উন্মাদনা চলছে আমাদের আবির্ভাবের পর থেকে।

লম্বা কথা শেষ থামলেন উনি। আর তারপর শুরু হলো মানুষ অতিথিদের প্রশ্নের ঝড়।
———————————————————–

২ এপ্রিল ২০২৩

ঐতিহাসিক প্রজেক্ট চক ডাস্ট শুরু। সকল টেক জায়ান্ট এই প্রজেক্টে একত্রে কাজ করছে। পাইলট এর ফলাফল পেতে ৭ দিন সময় লাগবে। ফলাফল অনুকুল হলে মূল প্রজেক্ট ১৪ এপ্রিল থেকে শুরু করার প্ল্যান করা হয়েছে।

১৪ এপ্রিল ২০২৩

প্রজেক্ট চক ডাস্টের মূল পর্যায় শুরু হলো। এই পর্যায়ে ১৪৫ মিলিয়ন টন চক ডাস্ট বায়ুমন্ডলে ছড়িয়ে দেয়া হবে, যা শেষ হতে ৩ বছর লাগবে বলে অনুমান করা হচ্ছে।

৩ অক্টোবর ২০২৯

প্রজেক্ট চক ডাস্ট সফলভাবে সমাপ্ত হলো। গত দুই বছর ধরেই বৈশ্বিক তাপমাত্রা কমে আসছে। স্পষ্টভাবেই এই প্রজেক্ট মানবজাতির ইতিহাসে একটি অন্যতম গুরুত্বপূর্ন অধ্যায় যা মানব সভ্যতাকে সম্ভাব্য বিপর্যয় থেকে ফিরিয়ে এনেছে। এই প্রজেক্টের সফল বাস্তবায়ন উপলক্ষে সারা বিশ্বে ৭ দিনের ছুটি ও উতসব পালন করা হচ্ছে।

** যে ঘটনা কোথাও লিপিবদ্ধ হয় নি- ২**

মধ্যে বসা ত্রাইসায়ানঃ সময় এসেছে, তাই না?
ডানে বসা ত্রাইসায়ানঃ হ্যাঁ অপেক্ষার সমাপ্তি হল।
বামে বসা ত্রাইসায়ানঃ তাহলে এক্টিভ করা হোক! আজকেই। আপনাদের সম্মতি আছে?
মধ্যে ও ডানে বসা ত্রাইসায়ানঃ হ্যাঁ, এখনি এক্টিভ করা হোক।
———————————————————–

১৪ জুন ২০৩৪

সহস্র বছরের সুপ্ত আগ্নেয়গিরি হ্যালিয়াকালা হঠাত জেগে উঠেছে। হ্যালিয়াকালা থেকে বিপুল পরিমান লাভা আর ধোঁয়া উদগীরন হচ্ছে। আশেপাশের শহরগুলির মানুষ ভয়ে দূরে পালিয়ে যাচ্ছে।

২০ জুন ২০৩৪

হ্যালিয়াকালার অগ্নুতপাতে মিলিয়নের বেশি মানুষ মৃত। আর সারা বিশ্বের সব প্রান্তে শ্বাসকষ্টজনিত সমস্যায় অগনিত মানুষ মারা যাচ্ছে। বিজ্ঞানীরা বলছেন, হ্যালিয়াকালা থেকে নির্গত সালফিউরিক এসিড বায়ুমন্ডলের চক ডাস্ট বা ক্যালসিয়াম সালফেটের সাথে বিক্রিয়া করে বিপুল পরিমান কার্বন ডাই অক্সাইড উৎপাদন করেছে। আর তার সাথে হ্যালিয়াকালাও ভয়াবহ পরিমান কার্বন ডাই অক্সাইড বাতাসে ছেড়েছে। ফলে, পৃথিবীর বাতাস মানুষ ও অন্যান্য প্রাণীর বেঁচে থাকার অনুপযোগী হয়ে যাচ্ছে দ্রুত।

বিলুপ্ত তারিখের একদিন

ত্রাইসায়ান স্পেসশিপটি অবশেষে নেহাউ দ্বীপে এসে নামলো। দরজা খুলে বের হয়ে এলো তারা তিনজন। বড়ো করে শ্বাস নিয়ে মাঝের জন কমুনিকেটর মুখের কাছে নিয়ে বলতে লাগলো- পৃথিবীর বাতাস এখন আমাদের জন্য একেবারে উপযুক্ত, প্রয়োজনীয় পরিমাণ কার্বন ডাইঅক্সাইড-এর যোগানসহ। সকল স্পেসশিপ অতিদ্রুত পৃথিবীতে চলে এসো। এই গ্রহই আমাদের নতুন ত্রাইসায়া। ।

আরও পড়ুন

সর্বাধিক পঠিত