আয়না

তানিয়ার সন্দেহটা এখন আর দ্বিধার মধ্যে সীমাবদ্ধ নেই। যে কোনোভাবেই হোক সে বুঝে ফেলেছে তার কপাল পুড়তে চলেছে। মুরাদের সঙ্গে তার সম্পর্কটা দিন দিন শিথিলতার দিকেই যাচ্ছে। এমনকি এখন আর তারা এক বিছানায় ঘুমায়ও না। সম্পর্ক যেটুকু আছে তা ঐ দৈনন্দিন বাজার- সদাই ও ছেলের লেখাপড়ার মধ্যেই সীমাবদ্ধ। মুরাদ আজকাল ঘরে ফেরেও মাঝরাতে। ছেলে ততক্ষণে হোমওয়ার্ক শেষ করে রাতের খাবার খেয়ে ঘুমিয়ে পড়ে। সকালে ঘুম থেকে সে ওঠেও দেরিতে। ছেলে ততক্ষণে স্কুলে চলে যায়। কাজেই দূরত্ব শুধু স্ত্রীর সঙ্গেই না, পাল্লা দিয়ে বাড়ছে ছেলের সঙ্গেও। তাতেও তানিয়ার সমস্যা ছিল না। কিন্তু তানিয়া ছেলেকে নিয়ে আলাদা ঘরে ঘুমাতে শুরু করার পর থেকে মুরাদের যে রাতে মোবাইল ফোন নিয়ে থাকার রোগ হয়েছে, এটা সে বুঝেছে অনেক পরে। আগে মাঝে মাঝে ছেলে ঘুমিয়ে পরার পর সে স্বামীর কাছে যেত। তখন প্রায়ই দেখত মুরাদ কার সঙ্গে যেন মৃদুকন্ঠে কথা বলছে। তানিয়াকে আসতে দেখে কথা শেষ করে ফোন রেখে দিত। কিন্তু তখনও তানিয়া বুঝতে পারেনি ফোনালাপটা গোপনীয়। ভেবেছে হয়তো কাজের ফোন। ব্যবসায়ী মানুষ। কত কথা থাকে কত জনের সঙ্গে। তবে সম্পর্কের ফাঁকগুলো বোঝা যেত বিছানায়। বাণী, বাদ্য, তাল, লয় সবই আছে। তবু সুরটা যেন ঠিক লাগত না। মিলনটা তাই ছন্দময় হয়ে উঠত না। চেষ্টা দুজনেই করেছে। তবু ফাকঁটা যেন রয়েই গেছে। ফলে দূরত্ব বেড়েছে ক্রমশ। এখন অনেকটাই চুকেবুকে গেছে বিছানার সম্পর্ক। তবু সন্তানের বাবা- মা হিসেবে এক বাসাতেই বাস করছে তারা। ভাবতে ভাবতে অন্যমনস্ক হয়ে পড়ে তানিয়া। তখনই কেউ বলে,
আপনি কি তানিয়া?
চমকে ওঠে তানিয়া। সামনে যে তরুণি দাঁড়িয়ে আছেন তার দিকে তাকিয়ে। মেয়েটির নাম মুনা শারমিন। তানিয়া এতক্ষণ ওর জন্যেই অপেক্ষা করছিল। অপেক্ষা করতে করতেই স্মৃতি রোমন্থন। পেছনের দিনগুলিতে বিচরণ শেষে বর্তমানে ফিরতে তার একটু সময় লাগে। তবু যতটা সম্ভব নিজেকে সামলে নিয়ে স্বাভাবিক গলায় বলতে চেষ্টা করে, হুম!
আমি কি বসতে পারি?
নিশ্চয়ই! আমি তো আপনাকে নিমন্ত্রণ করে এনেছি। বসবেন তো অবশ্যই। বলতে বলতে তানিয়া লক্ষ করল মেয়েটির মধ্যে কোনো জড়তা নেই। বয়স পঁচিশ পেরিয়েছে হয়তো। হালকা পাতলা ছিপছিপে গড়ন। গায়ের রঙ উজ্জ্বল শ্যামলা। উচ্চতা মাঝারি। ছোট চুল। ঘাড় পর্যন্ত ছাঁটা। পোশাকও সাদা- মাটা। জিন্সের প্যান্টের সঙ্গে সাদা রঙের একটা টপ পরেছে। গলায় ঝুলছে পাতলা সিল্কের একটা স্কার্ফ। সাজে প্রসাধনীর ব্যবহারও খুব একটা চোখে পড়ছে না। এমনকি লিপস্টিকও না। তবে কপালে বড় একটা টিপ পরেছে। আর সেটাই যেন সূর্যের মতো জ্বলজ্বল করে জ্বলছে। মেয়েটিকে খুব সুন্দরী বলা যাবে না। তবে চেহারায় কী যেন একটা আছে। তাকিয়ে থাকতে ইচ্ছে করে। এর কারন বোধ হয় ওর চোখ দুটি। কেমন যেন মায়ায় জড়ানো। চোখের দিকে তাকালে চোখ সরিয়ে নেওয়া যায় না।
আমি কি আপনাকে চিনি?
আগন্তুকের প্রশ্নে আবারও চমকে ওঠে তানিয়া। স্মিত হেসে বলে,
আমাকে বোধ হয় আপনি চেনেন না। তবে আমি আপনাকে চিনি। আপনি উদীয়মান সেলিব্রেটি সাংবাদিক। আপনার অনেক লেখা আমি পড়েছি। টিভিতে আপনার সাক্ষাৎকারও দেখেছি।
তাকে থামিয়ে দিয়ে আগন্তুক বলে, সে সব বলার জন্য তো আপনি আমাকে ডাকেননি! যা বলতে ডেকেছেন তাই বলুন না তাড়াতাড়ি। আমার একটা কাজ আছে। আমাকে যেতে হবে।
ওহ স্যরি! আমি ঠিক বুঝতে পারিনি আপনি ব্যস্ত। আজ আপনার ছুটি বলেছিলেন। তাই আপনার একটু সময় চেয়েছিলাম।
হ্যাঁ, আজ আমার ডে- অফ। তবু কিছু কাজ তো থাকতেই পারে।
সে ঠিক আছে। তবু আমার ডাকে যেহেতু এসেছেন তাহলে আমার সঙ্গে কিছুটা সময় কাটিয়ে যান।
কিন্তু কী দরকারে ডেকেছেন, তা তো বলছেন না?
বলব নিশ্চয়ই! তার আগে কিছু অর্ডার করি। কী খাবেন বলুন? ওদের চাওমিনটা খুব ভালো।
অল্প কিছুক্ষণ আগেই তো লাঞ্চ করেছি। তবু আপনি যেহেতু বলছেন, দিন অর্ডার করে। সঙ্গে কোল্ড ড্রিংকস।
শিওর! বলে তানিয়া ওয়েটারকে অর্ডার করে দিলো।
ওরা বসেছে ধানমন্ডির শংকরে একটা রেস্তোরাঁয়। তানিয়া ছেলেকে নিয়ে এসেছে একটি আঁকার স্কুলে। শুক্রবারে ছেলে ড্রয়িং ক্লাস করে। ওকে ক্লাসে ঢুকিয়ে দিয়ে সে অপেক্ষা করে। ছুটি হওয়ার আগ পর্যন্ত স্কুলেই বসে থাকে। কিন্তু আজ মুনাকে ইনভাইট করেছিল বলে রেস্তোরাঁয় বসেছে। এবার সে সরাসরি মুনার দিকে তাকিয়ে জানতে চায়, আপনি তো মুরাদকে চেনেন? আমি ওর অয়াইফ।
ওহ! তাই। নির্বিকার গলায় বলে মুনা। বলে, তারপর কী জানতে চান বলুন? আপনার এক্সস্বামীর সঙ্গে আমার কী সম্পর্ক?
এক্স বলছেন কেন? আমরা তো এখনও স্বামী- স্ত্রী, এক বাসাতেই থাকি। আর আমাদের একটা সন্তানও আছে।
হ্যাঁ জানি তো! শিগগিরই আর তাও থাকবেন না। তখন আমরা দুজন এক বাসায় থাকব। আর সন্তানের কথা বলছেন, সন্তানের সঙ্গে তো বাবা মার ছাড়াছাড়ি হয় না! ওর সন্তান থাকায় আমার কোনো আপত্তি নাই। আপনারা যে এখনো এক বাসায় আছেন, ইনফ্যাক্ট এটা নিয়েও আমার তেমন কোনো মাথা ব্যথা নেই। আমি মুরাদকে ভালবাসি। সেও আমাকে ভালবাসে। সে তার সব অতীতের কথা আমাকে বলেছে। দেখুন, দুজন মানুষ নানা কারনেই বিয়ে করেও এক সঙ্গে নাই থাকতে পারে। এক সঙ্গে থাকার জন্য দুটো শরীরের চেয়েও বেশি জরুরি মনের মিল থাকা। সেটা না হলে আমার মনে হয় জোর করে এক সঙ্গে না থেকে আলাদা হয়ে যাওয়া দুজনের জন্যেই ভালো।
সে ঠিক আছে। কিন্তু মনের মিলটা কি সময়ের সঙ্গে সঙ্গে বদলায়?
তা কেন? ধরুন প্রথমে কেউ বুঝতেই পারেনি। অনেকটা সময় এক সঙ্গে থাকার পর অমিলগুলো স্পষ্ট হয়ে উঠল। এক জনের রুচির সঙ্গে আরেক জনের মিল নেই, মিল নেই আচার- আচরণে, কথায়- কাজে, বিশ্বাসে। সে ক্ষেত্রে কম্প্রোমাইজ কি খুব বেশি যৌক্তিক?
আমি ঠিক তা বলছি না। আসলে সংসার ব্যাপারটা একদমই আলাদা। তুমি তো এখনও সংসারে জড়াওনি, তাই ঠিক বুঝবে না! সরি! কিছু মনে কোরো না, তোমাকে তুমি করে বললাম। আসলে তুমি তো বয়সে বেশ ছোট, তাই তুমিটা চলে এলো।
তাতে কোনো সমস্যা নেই! আমিও তুমি সম্বোধনেই স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করি। কিন্তু আপনি যে বলছিলেন আমার সাংসারিক অভিজ্ঞতা নেই, এটা কি পুরোপুরি ঠিক? বিয়ের আগে যে ছেলে মেয়েরা বাবার সংসারে থাকে, সেটাও তো সংসার! সেখান থেকে কি কোনো অভিজ্ঞতা হয় না বলছেন?
অবশ্যই সেটাও একটা অভিজ্ঞতা। তবে আমি বলছিলাম নিজের সংসারের কথা। নারী পুরুষ এক সঙ্গে হয়ে যে আলাদা সংসার করে, আমি তার কথা বলছিলাম। সেই অভিজ্ঞতাটা কিন্তু একদমই অন্য রকম। সেখানে সংসার, স্ত্রী- সন্তান ইত্যাদির দায়িত্ব অনেক বেশি না? একজন বিবাহিত মানুষের সংসারে ঢুকে পড়াটা তোমার কি মনে হয় না অন্যায়?
এ কথায় মনে হলো মুনা বেশ অপমাণিতবোধ করে। মুহূর্তেই তার মুখ লাল হয়ে ওঠে। বলে, আপনি যেটাকে ঢুকে পড়া বলছেন আমি সেটাকে বের হয়ে আসা হিসেবেও নিতে পারি। আসলে আমার ন্যায় অন্যায়বোধটা একটু আলাদা। সবার সঙ্গে ঠিক মেলে না। কোনো মানুষই কোনো মানুষের ব্যক্তিগত সম্পত্তি নয়। মুরাদ আমাকে ভালোবাসে। আর খুব শিগগির আমরা বিয়ে করতে যাচ্ছি। তবে তার আগে সে অবশ্যই আপনার সঙ্গে তার সব রকম সম্পর্ক চুকিয়ে নেবে বলে আমার বিশ্বাস। আমি আপনার সঙ্গে কোনো ঝামেলায় জড়াতে চাই না! ইনফ্যাক্ট ও আমাকে বলেছে আমাদের বিয়ের পরও সে আপনাদের ছেলের সব দায়িত্ব পালন করবে। আমার তাতেও কোনো আপত্তি নেই।
আমি সে কথা বলছি না। আমি ভাবছি তোমাকে নিয়ে।
আমাকে নিয়ে! আমাকে নিয়ে কী ভাবছেন? আর আমাকে নিয়ে আপনার ভাবতে হবে কেন? আমি একজন অ্যাডাল্ট। আমার ভালো মন্দ আমি ভালোভাবেই বুঝি। সেটা নিয়ে অন্য কাউকে ভাবতে হবেই বা কেন!
কখনো কখনো ভাবতে হয়। কেউ দায়িত্ব দেয় না। কিছু দায়িত্ব নিজের কাঁধে নিজে তুলে নিতে হয়। যেখানে আমি দেখতে পাচ্ছি কেউ ভুল করছে!
কী ভুল করছি আমি! আপনি কি খুব সচেতনভাবে আমার আর মুরাদের সম্পর্কের ফাটল ধরাতে চাইছেন? দেখুন ও কিন্তু আমার কাছে কিছু লুকায়নি। প্রথম থেকেই আমি আপনার এবং আপনাদের সন্তানের কথা জানি। তাহলে এখন এ সব কথা কেন উঠছে? এখন কথা একটাই, আমরা দুজন দুজনকে ভালবাসি এবং বিয়ে করতে যাচ্ছি।
এত তাড়া কেন? আরও একটু সময় নিলে হয় না?
কেন বলুন তো? আপনি ঠিক কী বলতে চাচ্ছেন?
আমি বলতে চাচ্ছি, তুমি কি শিওর ও তোমাকে ভালবাসে?
ভেরি মাচ শিওর! আপনি কি ডাউট?
আমি কিছু বলতে চাচ্ছি না। তবে তোমার কাছে একটা অনুরোধ আছে। তুমি রাখবে?
কথা দিতে পারছি না। আপনি আগে বলুন। শুনে বলতে পারব।
আমি তোমাকে একটা জায়গায় নিয়ে যাব। যাবে তুমি?
কোথায়? কেন?
সেটা এখন বলতে পারব না। তুমি গেলে দেখতে পারবে। তবে ভয় নেই। আমি এমন কোথাও তোমাকে নিয়ে যাব না যেখানে গেলে তোমার কোনো ক্ষতি হতে পারে।
আমার ক্ষতি নিয়ে আপনাকে ভাবতে হবে না। সে আমি বুঝে নেব। দেখুন আমি পেশায় একজন সংবাদকর্মী। স্বভাবতই আমি কৌতুহলী। আর ঝুঁকি নিতেও আমরা অভ্যস্ত। এনিওয়ে! আমাকে এখন উঠতে হচ্ছে। কাজ আছে। যদি কিছু মনে না করেন!
না না ঠিক আছে! তুমি যে আজ এলে, এতেই আমি খুশি। তবে আমি তোমাকে আর একবার ডাকব। যদি সম্ভব হয় তাহলে এসো!
ওকে! এখন বাই! বলে তানিয়ার দিকে আর একবার তাকালো মুনা। আপাত দৃষ্টিতে মহিলা খুব সাধারণ। কিন্তু ব্যক্তিত্বটা প্রখর বলেই মনে হলো।
আজকের দিনটাই যেন একটু অন্য রকম। একটা বড় ইভেন্ট ছিল। রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারে প্রথম দফায় ফেরত পাঠানোর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিল। কিন্তু তারা দেশে ফিরতে আপত্তি করেছে। উপরন্তু তারা তাদের তিন দফা দাবি জানিয়েছে। অফিসে এটা নিয়ে হৈচৈ। কেউ বা রাগ ঝাড়ছে। কেউ বলছে ঘাড় ধাক্কা দিয়ে পাঠিয়ে দিতে। কেউ বা একটু মানবিক হওয়ার পরামর্শ দিচ্ছে। মুনারও একটা স্টোরি আছে। সেও যথেষ্ট ব্যস্ত। সাইড স্টোরি হলেও নিউজ ট্রিটমেন্টটা দেখে যাওয়ার ইচ্ছে তার। ঠিক সেই সময়ে সেলফোনটা বেজে উঠল। মুনা স্ক্রিনে তাকিয়ে দেখল আননোন নম্বর। ফোনটা রাখতে গিয়ে হঠাৎ নম্বরটা চেনা মনে হলো। কার যেন নম্বর ভাবতে ভাবতে হ্যালো বলতেই ওপাশ থেকে ভেসে এলো চেনা কন্ঠস্বর- হ্যালো আমি তানিয়া। চিনতে পারছ?
জ্বি! আপনি হঠাৎ! কী ব্যাপার বলুন? আমি কিন্তু খুব বিজি আজ!
তোমাকে বলেছিলাম একটা জায়গায় নিয়ে যাব। আজ সেই দিন। যাবে?
এখন? কিন্তু আমার যে একটু ঝামেলা আছে। আচ্ছা ঠিক আছে। কোথায় আসতে হবে বলুন।
মোহাম্মদপুরে। সময় কিন্তু খুব বেশি হাতে নেই।
কীসের সময়?
সেটা তো তুমি আসলেই বুঝতে পারবে। তোমার আসতে কতক্ষণ লাগতে পারে তাই বলো।
আমার তো স্কুটি আছে। খুব বেশি সময় লাগবে না। আপনি ঠিকানাটা আমাকে এসএমএস করে দিন। আমি বিশ মিনিটের মধ্যেই চলে আসতে পারব।
ঠিক আছে। আমি ওখানেই থাকব।
কিছুক্ষণের মধ্যেই মুনা চলে এলো। দারোয়ানের সঙ্গে কথা বলে তানিয়া মুনাকে বলল, চলো!
সিঁড়ি দিয়ে তিন তলায় উঠে একটা ফ্ল্যাটের ডোরবেলের সুইচ টিপল তানিয়া। মুনা তখনো জানে না কেন সে এই বাসায় এসেছে। এটা কারই বা বাসা।
তানিয়া মুনার মনের কথা বোধহয় আন্দাজ করতে পারল। বলল, এটা আমাদের এক আত্মীয়র বাসা। সম্পর্কে আমার দূর সম্পর্কের ননদ। ওর হাসবেন্ড নেই। ডিভোর্সী। একটা বাচ্চা আছে দশ- এগারো বছর বয়সের। গ্রামে নানীর কাছে থাকে। আমার ননদ চাকরি করে তো। বাচ্চাকে কে দেখবে। তাই মায়ের কাছে রাখে। কথা শেষ না হতেই এক মহিলা দরজা খুলল। মাঝবয়সী বেশ সুন্দরী মহিলা। পরনে একদম ঘরের পোশাক। মনে হচ্ছে যেন এই মাত্র শোয়া থেকে উঠে এসেছেন।
তানিয়ার দিকে তাকিয়ে অপ্রস্তুত গলায় বললেন, ভাবী আপনি?
হুম এলাম! ভেতরে আসতে বলবে না! বলতে বলতেই মুনার হাত ধরে নিয়ে একেবারে বেডরুমে চলে গেল তানিয়া। মুরাদ সেখানে বালিশে হেলান দিয়ে সিগারেট টানতে টানতে টিভির খবর দেখছিলেন। পরনে শুধু প্যান্ট। গায়ে শার্ট নেই। পায়ের শব্দ পেয়ে মুরাদ ঘাড় ঘুরিয়ে ভুত দেখার মতোই চমকে উঠল। চমকে উঠল মুনাও। কেউ কোনো কথা বলছে না। এখানে সবাই যেন শ্রোতা। বক্তা কেউ নেই। তানিয়াই ঠিক যেভাবে মুনার হাত ধরে নিয়ে এসেছিল সেভাবেই হাত ধরে টেনে নিয়ে বেরিয়ে গেল। নিচে গিয়ে তানিয়া মুনার হাত ছেড়ে দিয়ে বলল, তুমি খুব শকড? আমি কিন্তু না! কারণ আমি আয়নার ওপাশটাও দেখেছি বহু আগেই! মুনা তখনও পাথরের মতো দাঁড়িয়ে আছে দেখে তানিয়া বলল, তুমি কি একা যেতে পারবে? নাকি আমি তোমার সঙ্গে যাব?
মুনা হেসে জবাব দিলো, না আপনাকে যেতে হবে না! আমাকে একাই চলতে হবে! বলে স্কুটিতে স্টার্ট দিলো মুনা।

আরও পড়ুন

সর্বাধিক পঠিত