দ্যা পেপার ম্যারেজ

একটা মেয়ের চরিত্রে যে কয়টা ব্যাপার থাকলে তাকে ক্যারেক্টারেরলেস বলা হয়, আমার ভেতর তার সবগুলোই আছে। ড্রাগ নিই, কয়েকজন ছেলের সাথে ফিজিক্যাল রিলেশানেও জড়িয়েছি। আর গত এক বছর যাবত রেগুলার এসকর্টের কাজও করি। এরপরও ভদ্র সমাজে চলাফেরা করতে তেমন কোন সমস্যা হয় না। এসকর্টের সুবিধা এটাই। একদম ভেতরের কয়েকজন ছাড়া কেউ জানেই না আমার এই পরিচয়।

আর তাই এসকর্টদের ট্রিটমেন্টটাও, টিপিক্যাল প্রসদের মত হয় না। ফাইফ স্টার হোটেলে বেশ দামী মদ সার্ভ করা হয়, বারে ডান্স করার জন্য অফার করা হয়। আর… লিভ ইট। কারণ এই গল্প আমার এসকর্ট লাইফের না। এই গল্প আমার প্রেমের।   

বাই দ্যা ওয়ে, আমি জেসমিন। বাবা আদর করে ডাকেন জেসি। ঢাকায় একটা প্রাইভেট ইউনিভার্সিটিতে, কম্পিউটার সাইন্সে পড়ি। প্রাইভেট ইউনিভার্সিটিতে পড়া মানে যে কমন ধারণাটা মাথায় আসে সেটা হলে পড়াশোনায় ডাব্বা টাইপ, বাপের টাকা আছে বলে এখানে ভর্তি হয়েছে, সেটা অনেকটাই আমার ব্যাপারে খাটে। তবে এটাও ঠিক, প্রোগ্রামিং এ আমার মাথা নেহাত খারাপ না। অন্ততঃ প্রথম দুই বছর রেজাল্ট বেশ ভালোই হয়েছিল। থার্ড ইয়ারে উঠে কাহিনী এলোমেলো হতে শুরু করে। আর এরপর তো চোখে রীতিমত অন্ধকার দেখতে শুরু করি। মনে মনে একটাই প্রার্থনা করতে থাকি, কোর্সটা যেন কোন রকমে শেষ করতে পারি। তখন আমার বাকী আর একটা সেমিস্টার। অর্থাৎ, ওই চারটা ক্রেডিট শেষ হলেই আমি ব্যাচেলর। ঠিক এই সময়ে ঘটনাটা ঘটে।

সেই ঘটনা সম্পর্কে বলার আগে বোধহয় আমার ক্লিয়ার করা উচিৎ, পরিস্থিতি এমন ভয়ঙ্কর কেন হল? কিংবা কি এমন ঘটেছিল যে আমাকে এই এস্কর্ট হওয়ার পথে আসতে হল। গুড কোয়েশ্চেন। তবে উত্তর দেয়ার আগে, আপনাদের মনে কি চলছে, সেটা সম্পর্কে আমার গেসওয়ার্কটা বলি।

এসকর্ট কিংবা এসব লাইনে আসা মেয়েদের সম্পর্কে আপনাদের যা ধারণা, তা তৈরি হয়েছে হিন্দি ফিল্ম দেখে, রাইট? আর ওখানে দেখানো হয় বিভিন্ন প্রলোভন দেখি আমাদের এখানে আনা হয়, কিংবা প্রেমিক বা কোন কিডন্যাপার এখানে আমাদের বিক্রি করে দিয়ে যায়। আর কিছু ক্ষেত্রে অভাবের তাড়নায় এই পথে পা বাড়ায় একটা মেয়ে। এই তো?

নাও টেল মি, অ্যাবাউট মি? আমি কেন এসেছি? অভাবের তাড়নায়? কোন ফাঁদে পড়ে? না স্বেচ্ছায়, টাকার লোভে?

গেস।

ওকে। আমিই বলছি। দ্যা অনেস্ট অ্যান্সার ইজ, ‘নো’ অ্যান্ড ‘ইয়েস’। ‘নো’ কারণ মোটামুটি বেশ সচ্ছল একটা পরিবার আমাদের। রাজশাহীতে থাকি। বাবার বিজনেস আছে। তাই এই কাজ না করলেও আমার চলে যেত। আর ‘ইয়েস’ কারণ, দারুণ পশ একটা ফ্যামিলিতে আমার জন্ম হয়নি। স্পেশালি ঢাকার যে প্রাইভেট ইউনিভার্সিটিতে আমি পড়ি, সেখানে যেমন ছেলে মেয়েরা পড়ে, তাঁদের তুলনায় আমি গরীব না হলেও, মধ্যবিত্ত বা নিম্ন মধ্যবিত্ত। ‘ফাঁদ’ আর ‘স্বেচ্ছায় কি না’, সে প্রশ্নের উত্তর এখন দিচ্ছি।

এখানে পড়াবার জন্য যে টাকাটা বাবাকে দিতে হয়, সেটা দিতে উনার বেশ খানিকটা কষ্টই করতে হয়। তারপরও তিনি দেন, কারণ আমি উনার একমাত্র মেয়ে। আর সেকারণেই বাবার বেশ আদরের। এসএসসি আর এইচএসসির রেজাল্ট ভালো হলেও ভর্তি পরীক্ষায় কোন সরকারী ইন্সটিটিউটে ভাল কোন সাবজেক্টে চান্স পাইনি। যা সিরিয়াল ছিল, কোন এলেবেলে সাবজেক্টে হয়তো হত। তবে কম্পিউটার সায়েন্সে হত না। বাট আমার গোঁ ছিল, কম্পিউটার সায়েন্সেই পড়ব। ফলে একটাই অপশান ছিল, প্রাইভেট ইউনিভার্সিটি। তাই… বাবা তাঁর সাধ্যের এক্সট্রিম লিমিটে গিয়ে দামী এই ইউনিভার্সিটিতে আমাকে ভর্তি করেন। প্রাইভেটের ভেতর এটাই বেষ্ট। সেই সাথে কস্টলিও।

এই তিন বছর পড়াতে বাবা সম্ভবতঃ দুএকটা এফডিও ভাঙ্গিয়েছেন। সেমিস্টার ফি আর আমার থাকা খাওয়া বাবদ যে টাকাটা বাবাকে পাঠাতে হয়, তা নেহাত কম না। কিছুটা হলেও সমস্যায় পড়েন বলেই আমার ধারণা। তারপরও, আমার যেন সমস্যা না হয়, সেদিকে উনি ভালোই খেয়াল রাখেন। আমাকে বোঝান, যেন একটু হিসেব করে চলি।

সেটা চলতামও। শুরুতে। তারপর? বলছি।

তো কাহিনীতে ফিরি? আসলে বাবা এবং সেই সাথে আমি, যে ব্যাপারটা বুঝতে পারিনি, তা হচ্ছে, নিজের স্ট্যাটাসের ওপরে ওঠার এই চেষ্টাটা আসলে অনন্ত। এর কোন শেষ নেই। প্রথম প্রথম এই চেষ্টা সফল হচ্ছে ফিল হলেও অচিরেই তা একজনকে দোটানায় ফেলে। ক্লাসের সবাই বিদেশি ব্র্যান্ডের ড্রেস, কসমেটিকস আর পারফিউম ইউজ করে। ইভেন কেউ চটি স্যান্ডেল পড়ে আসলেও, দেখা যায়, ওটা অরিজিনাল গুচি ব্র্যান্ডের। কথাবার্তায় সাহেবিয়ানা তো আছেই। একেকজন আসে জিরো মাইলেজ ওয়ালা গাড়ীতে। চারিদিকে প্রাচুর্য আর প্রাচুর্য। কতদিন আর নিজেকে নিয়ন্ত্রণে রাখা যায়? একসময় দেখা গেল, ওদের মত হতে ইচ্ছে করছে।

প্রাচুর্যের উল্টো দিকও আছে। প্রায় অর্ধেক ছেলে মেয়েই অ্যাডিক্ট। বাবার অঢেল টাকা থাকায়, চাওয়া মাত্রই টাকা পেয়ে যায়। তাই যেমন ইচ্ছে লাইফ লিড করে। ক্যাফেটেরিয়ায় দামী সিগারেট আর কারণে অকারণে পাশের বারে গিয়ে ড্রিঙ্ক করা। প্রথম প্রথম এদের দেখে নাক সিটকাতাম। ভাবতাম, এদের চেয়ে আমি অনেক ভালো আছি। তবে বেশিদিন তেমন থাকলাম না। একসময় ফিল করলাম, আই অ্যাম ফিলিং জেলাস। আমারও শখ চাপল, বনেদি হওয়ার। ওদের নকল করতে লাগলাম। ওদের দেখাদেখি সিগারেট শুরু করলাম। মাঝে মাঝে ড্রাগ। প্রথম দিকে অনেকেই ফ্রিতে দিত। শুরুটা যতো না ড্রাগ এঞ্জয় করার জন্য করেছিলাম তার চেয়ে বেশি করেছিলাম ওদের মত হওয়ার জন্য। নিজেকে ওদের মত স্মার্ট দেখাতে।

ইউনিভার্সিটির বেশ কয়েকটা ডর্ম ছিল। ইউনিভার্সিটি কর্তৃপক্ষ পাঁচতলা একটা ফ্ল্যাট ভাড়া নিয়েছিল, আর নাম দিয়েছিল ডর্ম। সেখানে আমরা ঢাকার বাইরে থেকে আসা স্টুডেন্টরা থাকতাম। দুইএকটা সিঙ্গেল রুম ছিল, তবে বেশীরভাগই ছিল, শেয়ারড। আমি ছিলাম শেয়ার্ড এ। আর দিবা ছিল আমার রুমমেট।

ওর বাবার রিয়েল এস্টেটের ব্যাবসা। তবে মা মারা যাওয়ার পরে আরেকটা বিয়ে করেন। ব্যাপারটা মেনে নিতে পারে না দিবা। তাই ঢাকায় বাসা থাকা সত্ত্বেও, ডর্মে থাকে। ছাত্রী আহামরি কিছু না। আর পড়াশোনার তেমন ইচ্ছেও নাই। একটা প্রেমও করেছিল, টেকেনি। আর এই ফ্যামিলি ডিসহার্মনি প্লাস প্রেমে ব্যর্থতা, ওকে একসময় নেশার দিকে ঠেলে দেয়। নেশায় বুঁদ হয়ে থাকে।

ওর অবশ্য আরেকটা পরিচয় আছে। ও হচ্ছে এই ডর্মের ড্রাগ সাপ্লাইয়ার। ওর কাছে সব সময় জিনিস পাওয়া যায়। ইনফ্যাক্ট, ওর হাত ধরেই আমার নেশার জগতে প্রবেশ।

অকেশনাল ড্রাগ নেয়া আমি শুরু করি সেকেন্ড ইয়ারে। তবে তখন ব্যাপারটা এতোটা বাড়াবাড়ি পর্যায়ে যায়নি। মনোযোগ দিয়েই পড়াশোনা চলছিল। মাঝে মাঝে যে ড্রাগ নিতাম, সেটা নিতাম কোন অকেশনে। মাসের টাকা বাঁচিয়ে।

বাবার কষ্টের প্রতি সহানুভূতি তখনো ছিল। তাই উনার কাছে এক্সট্রা চাইব না ভেবে, দুটা টিউশানিও শুরু করি। এক্সট্রা টাকা আর অকেশনাল ড্রাগ নেয়া দুটোর ভেতর একটা ব্যালেন্স ছিল। ফলে ধার না করেও চলে যাচ্ছিল।

এর মাঝে সবুজের সাথে অ্যাফেয়ার হয়। ইয়ারমেট। বড়লোক বাবার হ্যান্ডসাম ছেলে। নিজে গাড়ী চালিয়ে আসত। মাঝে মাঝে আমাকে নিয়ে লঙ ড্রাইভে যেত। দামী হোটেলে লাঞ্চ করাতো। আমারও ভালো লাগত।

এরপরে একদিন বেশ রোমান্টিক স্টাইলে প্রপোজ করল। এর আগে ওর দুটো অ্যাফেয়ার ছিল, সেটা ইউনিভার্সিটির সবাই জানে। তারপরও, ওর প্রোপোজালকে অনেস্ট প্রোপোজাল ভাবার ভুলটা করলাম। এবঙ্গা রাজী হয়ে গেলাম। মাস দুয়েক পরে, উই স্লেপ্ট।

ব্যাপারটা বেশ এঞ্জয়িং ছিল। ফলে, ঘটনাগুলো আরও ঘটল। এরপরে? ইয়েস। এধরনের ছেলেরা যা করে, সেটাই করল। নতুন আরেকটা প্রেম করল। ঘটনাটা যেদিন শুনলা, প্রথমটায় বিশ্বাস করিনি। কনফ্রন্ট করলাম। বলল, জাস্ট ক্যাজুয়াল রিলেশানশিপ। বিশ্বাস না করলেও, পুরোপুরি অবিশ্বাস করিনি। কারণ আমাকে ও সেভাবে অ্যাভয়েড করত না। সময় দিত, বাট… ফিল করতাম, আমাদের সম্পর্কে কি যেন নেই।

দেন দ্যা ইনএভিটেবল হ্যাপেন্ড। হি স্লেপ্ট উইথ হার। ঘটনাটা জানার পরে জেদের বসে আমিও পার্টনার চেঞ্জ করলাম। রিয়াদের সাথে রিলেশানশিপে জড়ালাম। সম্ভবতঃ সবুজও সেটাই চাইছিল। যখন ব্যাপারটা বুঝতে পারলাম, তখন অনেক দেরী হয়য়ে গেছে। সুপ্রিয়া আর সবুজ তখন কাপল।

এদিকে রিয়াদের সাথে সম্পর্কের দুই মাসের মাথায়… ইউ নো। মাস চারেক চলেছিল আমাদের রিলেশানশিপ। এরপরে আবার ব্রেকাপ। এরপরে যা ঘটল তা ছিল জেদ আর সাবধানতার কম্বিনেশান। ‘আমারও প্রেম হতে পারে’ আর ‘আর কাউকে বিশ্বাস করব না’ র ফাইট চলতে থাকল আমার মনে। এই সময় যে দুই একজন আমার কাছে ঘেঁষল তাঁদের আসল উদ্দেশ্য ‘ঐটা’। ব্যাপারটা বুঝিনি, এমন না। বাছ বিচার করে আরও দুএকটা প্রেম করেছিলাম। লাভ হয়নি। পরিণাম একই হয়েছিল। সেই সম্পর্কের দুই মাসের মাথায়, অবধারিতভাবে শুনতে হত, ‘আমার এক ফ্রেন্ডের একটা ফ্ল্যাট আছে জিগাতলায়, এখন ফাঁকা। যাবে?’

ব্যাপারগুলো আমার অনিচ্ছায় হত, এমন না। প্রেমিকগুলোকে যে পুরোপুরি বিশ্বাস করতাম, এমনও না। যাই হোক, ফ্ল্যাট পরবর্তী ঘটনায় তেমন কোন হেরফের হতো না। ঠিক সেই সময় দিবা আমাকে হিরোইন নেয়া শেখাল। সব ফ্রাস্ট্রেশান ভুলে, ফুরফুরে মেজাজে থাকার পথ দেখাল। এরপরে?

নিজের ওপর নিয়ন্ত্রণ পুরোপুরি হারালাম। কিছুদিনের ভেতরেই, ড্রাগ ঘটিত অভ্যাসটা আর ‘শখের বসে’ থাকল না। ড্রাগ আমাকে পেয়ে বসল। থার্ড ইয়ারের সেকেন্ড সেমিস্টার আসতে আসতে আমি পুরো দস্তুর হিরোইন অ্যাডিক্ট হয়ে যাই। প্রায়ই এটা লাগবে সেটা লাগবে বলে বাসায় টাকা চেয়ে পাঠাতে শুরু করি। বাবা বিশ্বাস করতেন আমাকে। ফলে তিনি যেভাবে পারেন ম্যানেজ করে যতোটা পারেন টাকা বেশি পাঠাতেন।

কিন্তু আমার চাহিদা তখন অনেক। বারার পাঠানো এক্সট্রা টাকা দিয়েও তখন আমার হত না। শুরু হল লোন নেয়া। আর লোনটা দিতো দিবা। ‘পরে টাকা দিয়ে দেব’, শর্তে অন্য কাউকে না ‘মাল’ দিলে আমাকে দিত। যখন চাইতাম তখন।

ফলে আমার আর্থিক অবস্থা যেমনটাই হোক, হিরোইন পেতে সমস্যা হচ্ছিল না। দিবা কেন আমাকে লোনে জিনিস দিত, সেটা তখন না বুঝলেও পরে বুঝেছি। আসলে এটা ছিল ওর ট্র্যাপ বা এটাই ছিল ওর কিংবা ওর বসের বিজনেস স্টাইল। পটেনশিয়াল বায়ারকে লোনে ‘মাল’ সাপ্লাই করে অ্যাডিক্ট বানিয়ে ফেলা। আর অ্যাডিক্ট একজন মেয়ে হলে…।

আমার নেশা চলছিল পুরোদমে। দেখতে দেখতে একসময় আমার লোন দশ লাখ ছাড়াল। একদিন খাতা বের করে অ্যামাউন্টটা আমাকে জানাল সইব। বলল, ওর বস বলেছে, লোনে আর কোন মাল সাপ্লাই দেয়া যাবে না। হিরোইন আর লোন, দুটো দেয়াই বন্ধ করে দিল দিবা।

চোখে অন্ধকার দেখলাম। কারণ ততোদিনে আমি হিরোইনের ওপর ডিপেন্ডেন্ট হয়ে গেছি। ওটা ছাড়া তখন আমার চলে না।

তাই স্টাফের জন্য একদিন লিটারালি হাতে পায়ে ধরলাম দিবার। লাভ হল না। এতদিন ধারে দিলেও সেদিন বেঁকে বসল। স্পষ্ট জানিয়ে দিল, আর একবারও না। তারও বস আছে, তাকেও জবাব দিতে হয়। শুধু তা ই না, বলল, মাস তিনেকের ভেতরে লোনটাও শোধ করে দিতে।

আমার তখন বেশ অসহায় অবস্থা। বন্ধু বান্ধবদের কাছে লোন করা শুরু করলাম। ক্লাস ফাঁকি দিই। অ্যাসাইনমেন্ট জমা দিতে হিমসিম খাই। এমন সময় টিউশানি দুটোও হাতছাড়া হয়ে গেল। বোধহয় আমার ঝিমানি দেখে টের পেয়ে যায়, আমি অ্যাডিক্ট।

ঠিক এমন সময় একদিন অফারটা দেয় দিবা। একটা হোটেলে বিদেশি গেস্টদের এন্টারটেইন করতে হবে। পেমেন্ট বেশ ভাল। পার এনকাউন্টার, ফিফটি কে। ইউজুয়ালি এধরনের রেট থাকে নতুনদের জন্য। ভার্জিনদের রেট আরেকটু বেশি।

জানিনা, ও এটারও এজেন্ট কি না। তবে শুনে গা ঘিনঘিন করে উঠেছিল। মনে হয়েছিল ওকে কষে একটা চড় লাগাই। না, চড় লাগানোর কাজটা করিনি। কারণ ঐ অবস্থায়ও এই হুশটা ছিল, দিবাকে চটানো যাবে না। বেশ ভদ্র ভাষায় ওকে জানিয়ে দিই, আমার পক্ষে সম্ভব না।

পরের দিন সকাল থেকে মাল সাপ্লাই বন্ধ করে দিল দিবা। জানাল লোনগুলো শোধ না করলে, টাকা দিলেও স্টাফ পাব না। ব্যাপারটা এক্সপেক্টেড ছিল, তবে এমন হঠাৎ করে ঘটবে, তা ভাবিনি।

এদিকে অন্য কোন সাপ্লায়ারকে চিনি না। হাতে টাকাও নেই। আর ফ্রেন্ডরাও বেশ কিছুদিন হল আর লোন দেয় না। তাই সেদিন প্রায় সারাটা দিন স্টাফ ছাড়া ছিলাম। আসলে চেষ্টা করছিলাম ওটা ছাড়া থাকতে। পারলাম না। দুপুর হতে হতে আমার অবস্থা বেশ ভয়ানক হয়ে উঠল। সারা শরীরে ক্র্যাম্প। আমার তখন অপশান একটাই।

পাশের বিছানায় দিবা শুয়ে ছিল। বিছানা ছেড়ে উঠে দাঁড়ালাম। ধীরে ধীরে দিবার বিছানার দিকে এগিয়ে গেলাম। ধাক্কা দিলাম। ও জেগেই ছিল। উঠে বসল। আমার দিকে তাকিয়ে বোধহয় বুঝে গেল, কি বলতে এসেছি। ঠোঁটে ওর বিজয়ীর হাসি।

বড় একটা নিঃশ্বাস টেনে কথাটা দিবাকে জানালাম,

— আমি রাজী।

চলবে

আরও পড়ুন

সর্বাধিক পঠিত