‘জালনোট চক্রের সন্ধানে’ – তৃতীয় পর্ব–

আগে যা ঘটেছে –

 

টিপু আর মৌ মালদার গৌড়ে ঘুরতে এসে মৌএর বাবার স্কুল কলিগ শংকরবাবুর বাড়িতে দুপুরের খাবার খেয়ে তিনজনে মিলে বাড়িতে না থেকে আম বাগানে ঘুরতে ঘুরতে বাংলাদেশের বর্ডারের কাছে চলে এসেছে। অক্টোবর মাস শেষ হতে চললেও রোদের তেজ না কমায়, তাঁরা সিদ্ধান্ত নেয়, দূরে একটা মাটির ঢিপির উপরে বসে কিছুক্ষন গল্প করার। সেই ঢিপিতে ওঠার সময় পিছন থেকে হঠাৎ একটা গর্তে পড়ে যায়। টিটো আর অর্ক, সেই গর্ত আবিস্কার করে নীচে নেমে মৌকে উদ্ধার করার সিদ্ধান্ত নিয়ে গর্তের ভিতরে লাফ দিয়ে নেমে বুঝতে পারে, এই গর্ত মানুষের তৈরি এবং তাঁরা দেখতে পায়, গর্তটি রীতিমতো সুরঙ্গে পরিনত করে একটি ঘরের মতো করা হয়েছে। ঘরের একটি দরজা দিয়ে ভিতরে উঁকি দিয়ে টিটো দেখতে পায় তিনজন লোক কয়েক বান্ডিল টাকা একটা ব্যাগের ভিতরে ভরছে। এই মুহুর্তে টিটোর সঙ্গে মৌএর ধাক্কা লাগলে মৌ আচমকা ঐ ঘরের ভিতরে ঢুকে পড়ে আর সেখানকার লোকদের হাতে ধরা পড়ে যায়। টিটো আর অর্ক পালানোর চেষ্টা করলেও টিটোই একা গর্তটা থেকে উপরে উঠতে পারে। এরমধ্যে নীচে টাকার বান্ডিল গোছানোর একজন লোক উঠে এসে টিটোকে ধাওয়া করে আর পিস্তল থেকে গুলিও চালায়। অল্পের জোনয় টিটো রক্ষা পেয়ে যায়। অর্ক আর মৌ দুজন বন্দি হয়ে থাকে গর্তের ভিতরে থাকা সুরঙ্গের ঘরে।

এরপর………

 

 

।। ৫ ।।

 

সমীরবাবুর বাড়ির ল্যান্ড ফোনটি বেজে উঠলো সন্ধ্যা ঘন হওয়ার ঠিক আগে। টিপুর মুখে ততক্ষনে সমস্ত ঘটনা শুনে নিয়েছেন বাড়ির লোকেরা। সমীরবাবুর স্ত্রী- অর্কের মা ছেলের জন্য দুঃশ্চিন্তা শুরু করে দিয়েছেন। টিপুকে সঙ্গে নিয়ে সমীরবাবু, শংকরবাবু আর উত্তমবাবু ওই ঢিবির দিকে রওনা হয়েছেন কিছুক্ষন আগেই। সমীরবাবুর বাড়ি জুড়ে উদ্বেগের ঝড় চলছে। টিপুর মা বারবার শুধু বলে চলেছেন, ‘কেন যে মালদায় ঘুরতে এলাম। আমাদের জন্যই আজ ছেলে মেয়ে দুটো এই ঝামেলায় পড়লো’, এই ধরনের কথা।

টিপুর মুখে সমস্ত ঘটনা শুনে, এমনকি ওঁকে লক্ষ্য করে যে গুলি ছোড়া হয়েছে, সব জানতে পেরেই সমীরবাবু প্রথমে ফোন করেছিলেন স্থানীয় থানাতে। টিপুর সঙ্গে ওঁনারা সেই আম বাগানের ঢিবির দিকে রওনা হওয়ার আগে সমীরবাবু তাঁর স্ত্রীকে বলে গিয়েছিলেন, থানা থেকে পুলিশ এলে জানিয়ে দিতে যে তাঁরা টিপুকে সঙ্গে করে মা বাগানের পিছনের ঢিবির দিকে গিয়েছেন। পুলিশও যেন সেখানেই যায়।

বাড়ির ল্যান্ড ফোন বাজতেই সমীরবাবুর স্ত্রীর পরামর্শে ফোন ধরলেন, টিপুর মা আমিতাদেবী। তিনি কিছু জিজ্ঞাসা করার আগেই অপর দিক থেকে শুনতে পেলেন হাড় হিম করা ওপাড়ের কর্কশ কন্ঠশ্বর। এক পুরুষ আওয়াজ বললো, ‘তাহলে পুলিশে খবরও দেওয়া হয়ে গিয়েছে! কিন্তু কোন লাভ যে হবেনা। বেশি বাড়াবাড়ি করলে ফল হবে মারাত্মক ! ছেলে মেয়ে দুটোই আমাদের কব্জায় আছে। ওঁদের ছাড়িয়ে বাড়িতে নিয়ে যেতে দশ লক্ষ টাকা কোথায়, কিভাবে দিতে হবে, পরে সেটা আমরাই জানাচ্ছি !’ অমিতাদেবী ‘আপনি কে, কোথা থেকে বলছেন’ বললেও সেকথা শোনার আগেই ওপাড়ে সশব্দে ফোন কেটে দেওয়া হয়েছে। অমিতাদেবী সঙ্গের দুই মহিলাকে বললেন, ‘মনে হয় কিডন্যাপারদের ফোন ছিল ! অর্ক আর মৌ এর জন্য দশ লক্ষ টাকা মুক্তিপন দাবি করছে। আবারও ফোন করবে বলেছে। আমরা যে ইতিমধ্যেই পুলিশকে জানিয়েছি, শুনলাম সেই খবরও ওদের জানা !’

অমিতাদেবীর কথা শুনে ফুঁপিয়ে কেঁদে উঠলেন অর্কের মা। সুমিত্রাদেবীও এবার মেয়ের কথা ভেবে চোখের জল ধরে রাখতে পারলেন না। সুমিত্রাদেবী তবুও চোখের জল মুছে অর্কের মাকে সান্তনা দিলেন, ‘আপনি কিছু ভাববেন না দিদি  ! কিছু একটা ব্যবস্থা নিশ্চয়ই হবে !’

অর্কের মা প্রলাপের মতো বকে চলেছেন, ‘আমার ছেলেকে যদি বদমাশ লোকগুলো খুন করেতবে কি হবে ! ও মা গো ! এ কি সর্বনাশ হলো গো ! আমাকে এই বিপদ থেকে উদ্ধার করো ভগবান !

পুলিশের জিপের স্টিয়ারিং ঘোরাতে ঘোরাতে থানার ওসি পরেশ দেবনাথ জিজ্ঞাসা করলেন, ‘ওঁদের কি কোন ফোন এসেছিল ! কোন টাকা পয়সার কথা কি বলেছে ? কিছু কি জানতে পেরেছেন !’

পুলিশের গাড়িতে চেপে বাড়ি ফিরছিলেন শংকরবাবুরা। সঙ্গে টিপুও ছিল। মাটির সেই ঢিবির নীচে জাল নোট কারবারিদের গোপন আস্তানার হদিশ পেলেও পাওয়া যায়নি মৌ বা অর্ককে। বাড়ি থেকে পাওয়া মোবাইল ফোনে সমীরবাবু কিছুক্ষন আগেই কিডন্যাপারদের কথা শুনেছেন। কিন্তু পুলিশের ওসি পরেশ দেবনাথ নিজের কাজে ব্যস্ত থাকার কারনে সেই কথা এখনও বলে ওঠার সুযোগ করতে পারেননি সমীরবাবু। এমনিতে যত বিপদই হোক, পেশায় হাইস্কুলের শিক্ষকরা পুলিশের বিষয় পারতপক্ষে এড়িয়ে চলেন, সমীরবাবু তার ব্যতিক্রম নন।

 

    ।। ৬ ।।

 

 

সন্ধ্যার আগেই আম বাগানের পিছনের ঢিবির কাছে পৌঁছনোর কিছুক্ষনের মধ্যেই থানা থেকে বিশাল পুলিশের দল নিয়ে হাজির হয়েছিলেন পরেশবাবু। বিকালের আলোতে ঢিবির চারদিক ঘুরে পুলিশের দল আবিস্কার করলো এক জায়গায় আলগাভাবে ঘাসের চাঁপ দিয়ে গর্ত বন্ধ করা রয়েছে। সেগুলি খুব সহজেই পুলিশ কর্মীরা সরিয়ে দেওয়ার পরে দেখা গেল আরও একটি কাঠের দরজা। দরজাটি পুরানো দিনের। তবে আকারে অনেকটাই ছোট এবং শক্তপোক্ত ধরনের। টিপু বুঝতে পারলো, ওই সুরঙ্গ ছাড়াও আরও একটি আলাদা পথ রয়েছে ঐ মাটির নীচের ঘরে ঢোকার। তবে পুলিশ কর্মীরা পরেশবাবুকে জানালেন, দরজাটি ভিতরের দিক থেকে বন্ধ করা রয়েছে। ওসি পরেশবাবু বললেন, ‘সদর থেকে ডি এস পি সাহেব আসছেন। তার আগেই আমরা ভিতরে ঢুকে তল্লাসীর কাজ শুরু করে দেই। তবে আপনারা দরজা ভেঙ্গে ভিতরে ঢুকুন। সবাই সরতর্ক থাকবেন। আমিও আসছি আপনাদের সঙ্গে।’

পরেশবাবুর নির্দেশ পাওয়া মাত্রই পুলিশ কর্মীরা দরজায় ধাক্কা দিতে শুরু করার কিছুক্ষনের মধ্যেই সেটা ভেঙে গেল। টিপুর সঙ্গে পুলিশ বাহিনী সহ সবাই ভিতরে ঢুকলেন। সেই ঘর এখন একদম অন্ধকার। কারো কোন সাড়া শব্দ নেই। পরেশবাবু সহ তিনজন পুলিশ কর্মী ইলেক্ট্রিক চার্জারের বড় টর্চ জ্বাললেন। আলোয় নজরে এলো কালো কালো সেই ব্যাটারি, যার সাহায্য তখন এখানে টিউব লাইট জ্বলছিল। টর্চের আলোয় সবার নজরে এলো, ঘরের ভিতরে তিনটি চামড়ার ব্যাগ রয়েছে। যেগু্লো দেখেই বোঝা যাচ্ছে, এগুলোর ঠেসে কিছু ভর্তি করা হয়েছে। একটি ব্যাগের চেন খুলতেই পরেশবাবু বলে উঠলেন, ‘সর্বনাশ ! এ যে সব দু-হাজার টাকার নোটের বান্ডিলে ভর্তি !’

তাঁর কথা শুনে বাকি পুলিশ কর্মী, অফিসাররা এগিয়ে গেলেন সেদিকে। অন্য সহকর্মীদের আলোর সাহায্য নিয়ে নিজের টর্চটা নিবিয়ে দুহাতে সব ক’টি ব্যাগ খুলে টাকার বান্ডিল গুলি ব্যাগের ভিতর থেকে বের করে আনলেন। একটি ব্যাগে পাওয়া গেল দু হাজার টাকার নোটের বান্ডিল, বাকি দুটোতে পাঁচশো টাকার নোটের বান্ডিল। পরেশবাবু টর্চের আলোয় দু ধরনের টাকা গুলিই মিলিয়ে দেখলেন, সব নোটের নম্বর এক। সেটার দিকে নজর যাওয়ায় পরেশবাবু নিজেই খুব ধীরে ধীরে বললেন, ‘এগুলো তো জাল নোট বলে মনে হচ্ছে ! এটা কি তবে জাল নোট মজুদ করার ডেরা !’

এখানে যে জাল নোট মজুদ রয়েছে, টিপু সেটা আগেই আন্দাজ করেছিল। সে বাড়িতে ফিরে সেকথা জানালেও সমীরবাবু পুলিশকে খবর দেওয়ার সময় মৌ আর অর্ককে আটকে রাখার কথাটাকেই শুধু জানিয়েছিলেন। এখন পুলিশ এসে জাল নোটের বিষয়টা জানতে পেরেছে।

পরেশবাবু পুলিশের নিজস্ব কথা বলার মাধ্যম থেকে সাংকেতিক ভাষায় সমস্ত বিষয়টি জেলা পুলিশের উপর মহলে জানালেন। সেই কথা শেষ করে পরেশবাবু বললেন, ‘ বড় সাহেব আরও ফোর্স নিয়ে এখানে কিছুক্ষনের মধ্যেই এসে পৌঁছবেন।’

ঢিবির ভিতরের ঘরটি এবং সুরঙ্গ ভালোভাবে তল্লাসী চালালো পুলিশের টিম। ঢিবির যে গর্ত দিয়ে টিপু ভিতরে নেমেছিল, সেখানেও হাজির হলেন থানার ওসি পরেশবাবু। টিপু তাঁকে উত্তেজিতভাবে জানালো, ‘এখানে নারকেলের দড়ির তৈরি দড়ির মই ঝোলানো ছিল। এখন নেই। নিশ্চয়ই ওঁরা খুলে নিয়ে গিয়েছে।’

এই খোঁজ খবরের মধ্যেই জেলার পুলিশ সুপার ঘটনাস্থলে এসে হাজির হলেন। এস পির কাছে দুজন বাচ্চা ছেলে মেয়েকে কিডন্যাপ যেমন বড় বিষয়, তার চেয়েও বড় বিষয় হলো গৌড়ের মতো এলাকায় জাল নোট জমা করার আখরার হদিশ খুঁজে পাওয়ার ঘটনা। এসপি থানার ওসি পরেশ বাবুকে বললেন, ‘ওঁনাদের বলে দিয়েছেন তো, বাড়িতে যদি মুক্তিপন দাবি করে কোন ফোন আসে যেন তখনই পুলিশকে ইনর্ফম করেন !’ কথাগুলি হচ্ছিল সমীরবাবুর সামনেই। তিনি মুক্তিপন চেয়ে ফোন আসার কথা বেমালুম চেপে গিয়ে এস পিকে শুধু অনুরোধ করলেন, ‘যেভাবেই হোক স্যর, ছেলেমেয়ে দুটোকে উদ্ধারের ব্যবস্থা করে দিন।’ এস পি একটু বিরক্ত হয়েই সমীরবাবুর দিকে তাকিয়ে গম্ভীর গলায় বললেন, ‘পুলিশ তো তদন্ত করছে। তদন্তে আপনাদের সহযোগীতা প্রয়োজন। পুলিশের তদন্তে সাহায্য করুন।’

যেভাবে মাটির ঢিবির নীচে সুরঙ্গ কেটে লোকের চোখের আড়ালে ঘর বানিয়ে সেখান থেকে জাল নোটের কারবার ফেঁদে বসেছিল দুস্কৃতিরা, এস পি দেখে অবাক হলেন। তিনি নিজের সঙ্গে আনা পুলিশ নিয়ে ফের মাটির নীচের সব ঘর ঘুরে দেখার ইচ্ছে প্রকাশ করতেই, থানার ওসি ব্যস্ত হয়ে পড়লেন। তার আগে টিপুর কথা ওসির কাছে শুনে ওঁর সঙ্গেও কথা বলেছেন এস পি। টিপুও সব কথা জানিয়েছে। কিভাবে এখানে তাঁরা এসেছিল, কিভাবে সুরঙ্গ আবিস্কার করেছিল, কিভাবে মৌ আর অর্ক ওই লোকগুলোর কাছে ধরা পড়েছে – কোন কথাই গোপন করেনি সে। এস পি আরও টর্চের আলো নিয়ে ফের ঘরে ঢুকে তাজ্জব হয়ে গেলেন। এই মাটির নীচের কৃত্রিমভাবে তৈরি করা ঘরে যে দুস্কৃতিদের নিয়মিত যাতায়াত ছিল, সেটা বুঝতে পারলেন। কারন তাঁদের ব্যবহার করা বেশ কিছু জামা কাপড়, ব্যবহার করা জিনিষ, জুতো সেখানে রাখা রয়েছে। এস পি ঘরের ভিতরে মজুদ করা জামা কাপড়ের দিকে টর্চের আলো ফেলে ভালো করে দেখতে লাগলেন। হঠাৎ তাঁর নজরে এলো, জামা কাপড়ের নীচে কিছু একটা পাতলা মতো জিনিষ চকচক করছে। তিনি সেদিকে এগিয়ে গিয়ে কাপড় সরাতেই দেখতে পেলেন একটি ল্যাপটপ। ল্যাপটপটিকে হাতে তুলে আরও কিছু খোঁজার চেষ্টা করেও পেলেন না। এক হাতে ধরে দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে ল্যাপটপটির সুইচ অন্‌ করতেই সেটি চালু হয়ে গেলো। ল্যাপটপটির সঙ্গে চার্জারের তার লাগানোই রয়েছে। উৎসাহে এস পির চোখ চক্‌চক করে উঠলো। আর কিছু ক্লু না পেয়ে ঘরের ভিতরে থাকা জামা-জুতোগুলিকে থানায় নিয়ে যাওয়ার নির্দেশ ও সিকে দিইয়ে ল্যাপটপটি সঙ্গে করে নিয়ে গাড়ির দিকে এগিয়ে গেলেন এস পি। গাড়িতে চেপে বসার আগে ও সি পরেশবাবুকে এখানে কয়েকজন পুলিশ দিন-রাত পোষ্টিং করার নির্দেশ দিতে ভুললেন না। এস পি রওনা দিতেই টিপুদের সঙ্গে নিয়ে সমীরবাবুর বাড়ির দিকে নিজেই জিপ চালিয়ে রওনা হলেন পরেশবাবু। পথে সমীরবাবুর মোবাইল ফোন বেজে উঠতেই,নম্বর দেখেই সমিরবাবু ভয়ে ভয়ে ও সিকে জানালেন, ‘স্যর, বাড়ি থেকে ফোন করেছে !’

‘ধরুন, ধরুন, কি বলছে বাড়ির লোক সেটা শুনে আমাকে জানান !’

সমীরবাবু ফোনে কথা বলেই বললেন, ‘স্যর, ওঁরা টাকার অংক প্রচুর বাড়িয়ে দিয়েছে। ওত টাকা কোন দিন চোখেই দেখিনি ! কিভাবে দেবো ! ওঁরা যে আমাদের ছেলে আর মেয়েটাকে প্রানে মেরে দেওয়ার হুমকি দিয়েছে !’

‘টাকার অংক বাড়িয়েছে ! মানে ?’ ও সি পরেশবাবু জানতে চাইলেন বেশ অবাক হয়েই।

‘মানে স্যর,’ সামান্য তোত্‌লালেন সমীরবাবু, ‘এর আগেও ওরা ফোন করেছিল। তখন দশ লক্ষ টাকা চেয়েছিল। টেনশনে আর জাল নোটের চক্করে আপনাকে বিরক্ত করতে চাইনি বলে ভেবেছিলাম, পরে বলবো ! কিন্তু আবার ফোন করেছিল। এখন তো বিশ লক্ষ দাবি করছে স্যর !’

‘ আপনি এস পি সাহেবকে জানালেন না ব্যাপারটা ! আমাকেও এখন বলছেন !! সত্যি, আপনাদের লোকদের জন্যই পুলিশ ঠিক মতো কাজ করতে পারে না ! আগে জানলে যে কত উপকার হতো সেটা আপনাকে বোঝাবো কি ভাবে !’ পরেশবাবু রেগে গিয়ে বললেন। এতসব ঘটনা ঘটে গিয়েছে, সঙ্গে থেকেও নিজেদের টেনশনে জানতেই পারেননি টিপুর বাবা মেসোরা। এমনকি টিপুও একবার সমীরবাবুকে মোবাইল ফোনে কথা বলতে দেখেছে। কিন্তু জালনোটের ঘাঁটি আবিস্কারের উৎসাহে বিশেষ গুরুত্ব দেয়নি।

 

(চলবে)

 

আরও পড়ুন

সর্বাধিক পঠিত